‘অন্তর্জাল’–এর রহস্যময় গল্প শোনালেন সিয়াম-মিম

প্রথম আলো ডটকম আয়োজিত বিশেষ আনন্দ আড্ডা ‘ওয়ালটন ফ্যান তারার ঈদ’ অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্জাল’-এর গল্প শুনিয়েছেন মিম ও সিয়াম
ছবি : প্রথম আলো

‘দামাল’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে সিয়াম আহমেদ আর বিদ্যা সিনহা মিম ভক্তদের মন জয় করেছিলেন। ভক্তরা অপেক্ষায় ছিলেন আবার কবে একসঙ্গে দেখা যাবে এ জুটিকে। অপেক্ষার পালা শেষ। দীপংকর দীপনের পরিচালনায় সাইবার যুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ‘অন্তর্জাল’ সিনেমায় জুটি বেঁধেছেন সিয়াম আহমেদ ও বিদ্যা সিনহা মিম। এবারের ঈদেই সিনেমাটি মুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিচালক। এরপর সিনেমাটির টিজার, পোস্টার ও একটি গান প্রকাশিত হয়। বাকি ছিল শুধু সেন্সর ছাড়পত্রের। তবে তার আগেই ঈদে মুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ‘অন্তর্জাল’ টিম।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে সিনেমাটি মুক্তি পেতে পারে। তবে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি না পেলেও ভক্ত-দর্শকদের ঈদ আনন্দকে বাড়িয়ে দিতে গল্পে মেতেছিলেন সিয়াম ও মিম।

পরিচালক দীপংকর দীপন। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো ডটকম আয়োজিত বিশেষ আনন্দ আড্ডা ‘ওয়ালটন ফ্যান তারার ঈদ’ অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্জাল’-এর গল্প শুনিয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত দুই অভিনেতা-অভিনেত্রী। সারা ফ্যায়রুজ যাইমার উপস্থাপনায় পর্বটি আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রথম আলো ডটকম, প্রথম আলোর ইউটউিব চ্যানলে ও ফেসবুক পেজে একযোগে প্রচারিত হয়।

আড্ডার শুরুতেই উপস্থাপক সারা ঈদের শুভেচ্ছা জানান অতিথি দুজনকে। তারপর মিমের কাছে জানতে চান, ‘শুটিংয়ের সময় সিয়াম কীভাবে অন্যদের জ্বালিয়েছেন?’
উত্তরে মিম বলেন, ‘শুটিংয়ে সিয়াম ডোন্টকেয়ার টাইপ ছিল। ক্লাসের বেশি পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যেমন একটু ভাব নিয়ে থাকে, তেমনটাই...। তবে “অন্তর্জাল” সিনেমায় সিয়ামের চরিত্রটাই ছিল এমন এবং সে চরিত্রের মধ্যে এমনভাবে ঢুকে গিয়েছিল যে এর প্রভাব শুটিংয়ের সময়ও পড়েছিল।’

মিমের কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সিয়াম বলেন, ‘শুটিং চলাকালে প্রায় রাতেই শুটিং হাউস বা লোকেশনেই থাকতে হয়েছে। বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ পেতাম অল্প সময়ের জন্য।’

‘অন্তর্জাল’-এর অন্তরালে কী হয়েছিল? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিয়াম বলেন, ‘শুটিংয়ের সময় আমি এক নতুন মিমকে দেখেছি। তাকে এত সিরিয়াসভাবে শুটিং করতে আগে কখনোই দেখিনি। মিম অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছে এবং দারুণভাবেই ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে তার চরিত্রটি।’

প্রশংসা তো অনেক শোনা হলো, এবার মিম সম্পর্কে ‘বদনাম’ করতে বলা হলে ভাবনায় পড়ে যান সিয়াম। একটি উদাহরণ দিয়ে সিয়াম বলেন, ‘শেষবার কলকাতা থেকে ফেরার সময় কাকতালীয়ভাবে মিম আর আন্টি; অর্থাৎ মিমের মায়ের সঙ্গে একই ফ্লাইটে ঢাকা আসি। বিমানে মিমকে অনেক জোকস বলেছিলাম। দেশে ফেরার দুই দিন পর মিম আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, আমি কি তাকে নিয়ে বিমানে জোকস করেছি কি না!’ বলা শেষ না হতেই হাসিতে ফেটে পড়েন তিনজন।

‘অন্তর্জাল’ সিনেমায় সুনেরাহ বিনতে কামালের সঙ্গে রোমান্টিক একটি গানে দেখা যাবে সিয়ামকে। এ প্রসঙ্গে উপস্থাপক সারা বলেন, ‘গানটি দেখে আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশি নয়, কোনো বলিউড সিনেমার গান দেখছি।’

সিয়াম বলেন, ‘আমরা চেয়েছি গানটি দেখে দর্শকেরা আনন্দ পাক। গান নিয়ে কথা বলুক। আমরা দর্শকদের চমক দিতে চেয়েছিলাম। ইমন চৌধুরীর কম্পোজিশনে অবন্তি সিঁথি আর ইমন চৌধুরীর কণ্ঠে গানটিও ছিল অসাধারণ। পরিচালক দীপংকর দীপন গানটি নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। এককথায় বলতে গেলে, আমাদের অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ।’

অন্তর্জাল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন মিম, সিয়াম ও সুনেরাহ

উপস্থাপক সারা বলেন, ‘দর্শক তো সুন্দর-গোছানো একটা কনটেন্ট পর্দায় দেখেন। কিন্তু গান বা সিনেমার শুটিংয়ের পেছনে অনেক কষ্ট-ত্যাগ-পরিশ্রম থাকে...।’
এ কথার রেশ ধরেই সিয়াম বলেন, ‘যেটা পর্দায় দেখা গেছে, আমাদের বাস্তবতা ছিল ঠিক তার উল্টো। গানটির চিত্রায়ণ হয়েছে থাইল্যান্ডে।’
সঙ্গে সঙ্গেই আফসোসের কণ্ঠে মিম বলেন, ‘আমার যদি শুট থাকত, তাহলে থাইল্যান্ডে আমিও যেতে পারতাম। তবে ওখানে শুটিং করতে গিয়ে যে রকম কষ্ট করতে হয়েছে শুনলাম, তাতে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম এই বলে—না গিয়ে ভালোই করেছি। হা হা হা...।’

এ প্রসঙ্গে সিয়াম বলেন, ‘আমরা যখন দেশে কাজ করি, তখন ইউনিটে কমবেশি ২০০-এর মতো মানুষ থাকে। যা চাই, হাতের কাছে পেয়ে যাই। থাইল্যান্ডে আমরা একটা ছোট টিম গিয়েছি। এমনও হয়েছে, আমার শট শেষ হওয়ার পর আমি ক্যামেরার পেছনে গিয়ে কোরিওগ্রাফারের কাজ করেছি। কখনো হয়তো আমার কো-আর্টিস্টের খাবার-পানি দরকার, আমি নিজেই গিয়ে সেগুলো নিয়ে এসেছি। এত কষ্ট করার পর একটা প্রত্যাশা থাকে। দর্শকেরা যদি হলে গিয়ে সিনেমাটা দেখেন, তাহলেই আমাদের এত কষ্ট সার্থক হবে।’