১২ বছর পর জয়াদের পরিবারে এবার অন্য রকম ঈদ

জয়া আহসান
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

আর দশজনের মতো জয়া আহসানের কাছেও ঈদ মানেই অন্য রকম খুশির সম্ভার। কারণ, এই সময়ে সব ভুলে পরিবারের সঙ্গে ঈদের সময়গুলো কাটান এই তারকা। ফিরে যান অতীতে, শৈশবে। ঈদের দিনগুলোতে এখনো শৈশবের আনন্দ খুঁজে পান। সেই আগের মতো এখনো ঈদের সালামি পান জয়া। তবে পাওয়ার চেয়ে ছোটদের সালামি দিতে হয় বেশি। এবার ঈদে কত সালামি পেলেন ও কত দিলেন এই দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী?

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জয়া আহসানের অন্যরকম ঈদ

অনেকে হয়তো ভাবছেন, এখনো কি তাহলে সালামি নেন জয়া আহসান? জয়া জানান, সালামির কোনো বয়স নেই। এর মধ্যেই ঈদের অন্যতম আনন্দ খোঁজেন তিনি। আর এটাই খুশির কারণ। এই অভিনেত্রীর কাছে জানতে চাইলাম, কার কাছ থেকে সালামি পান? ‘কেন আমার নানা আর নানু। তাঁরা এখনো আমাকে ঈদের সালামি দেন। যত যা–ই হোক, আমাকে তাঁরা সালামি দেবেনই। এটা আমার কাছে শৈশবের মতোই বিশেষ। এ ছাড়া মাসহ আরও অনেকের কাছ থেকেই সালামি পেয়েছি। আসলে সালামিটা শৈশব থেকেই আমার কাছে রীতির মতো হয়ে গেছে। আয় করার পর শুরু হয়েছে সালামি দেওয়া,’ বললেন জয়া।

ছোটবেলায় সারা বছর ঈদের জন্য অপেক্ষা করতেন জয়া। কারণ ওই একটাই, সবার কাছ থেকে সালামি পাওয়া যায়। সব সালামি জমাতেন। নতুন টাকার গন্ধ তাঁর কাছে ভালো লাগত। সেই টাকা যেন অন্য কেউ না নেন, সে জন্য কখনো কখনো লুকিয়ে রাখতেন। সেই দিনগুলো খুব মিস করেন।

জয়া আহসান

কাদের সালামি দিতে হয়, জানতে চাইলে জয়া বলেন, ‘ছোট যারা আছে, সবাইকে সালামি দিতে হয়। যে আমার চেয়ে এক ঘণ্টার ছোট, তাকেও সালামি দিতে হয়। আমরা সমসাময়িক, কিন্তু না করার উপায় নেই। তাদের সালামি দেওয়াটাও বেশ এনজয় করি। আমার ছোট ভাইবোন, ভাগনে–ভাগনিসহ পরিবারের সব ছোট সদস্যকে সালামি দিই।’ কত সালামি পেলেন আর কত দিতে হলো, জানতে চাইলে হাসিমুখে বললেন, সেটা বলা যাবে না। পরিমাণ অনেক। তবে পাওয়ার চেয়ে বেশি দিতে হয়েছে।

ভাইয়ের সঙ্গে জয়া আহসান

১২ বছর পর জয়াদের পরিবারে এবার অন্য রকম ঈদ, অন্য রকম আনন্দ। কারণ, দেশে এসেছেন তাঁর ছোট ভাই। এ প্রসঙ্গে জয়া বলেন, ‘১২ বছর পর আমার ছোট ভাই অদিত এসেছে। যে কারণে ঈদের খুশি বেড়ে গেছে। ভাইয়ের সঙ্গেই সময়টা বেশি কাটছে। আমরা একসঙ্গে গল্প করছি, আড্ডা দিচ্ছি। দীর্ঘদিন পর ঈদে তাকে পেয়ে সবাই মিলে অনেক মজা করছি। চেষ্টা করছি ভালো সময় কাটানোর। এর আগে দেশের বেশ কিছু সিচুয়েশনের জন্য মনটা খারাপ ছিল। তারপরও ঈদ তো ঈদই। এসব মিলিয়েই ঈদ কাটিয়ে দিচ্ছি।’

ফেসবুক পোস্ট করা নতুন ছবিতে জয়া আহসান

ঈদে আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কি না, জানতে চাইলে জয়া আহসান বলেন, ‘হ্যাঁ, ঘুরছি তো। এখন (রোববার দুপুরে) বোনের বাসায় এসেছি। বলা যায়, এখানে পরিবারের সবাই। আজ আমরা সবাই মিলে পান্তা খাব। এ জন্য অনেক রকম ভর্তা করা হয়েছে। মাছ–মাংস, অন্য খাবার তো আছেই। সবার পছন্দ পান্তা। আমি এখন কথা বলছি আর পান্তা মাখাচ্ছি। আমার হাতের পান্তা সবার পছন্দ। এটা আমাদের বিশেষ আইটেম। ঈদের সময়গুলো এভাবে মজার খাবার আর আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ঘুরেই কাটিয়ে দেব।’

ঈদটা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ঘুরেই কাটিয়ে দিচ্ছেন জয়া

একসময় ঈদে ছোট পর্দার কাজ দিয়ে আলোচনায় থাকতেন জয়া আহসান। কিন্তু এক দশকের বেশি সময় তিনি ছোট পর্দায় অভিনয় করেন না। দীর্ঘ এই সময়ে তিনি বাংলাদেশে ও কলকাতার সিনেমার অঙ্গনে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন। কাজের সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছেন। হিন্দি ভাষার সিনেমাতেও নাম লিখিয়েছেন।

‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমার একটি লুকে জয়া

এদিকে ঈদের খুশির সঙ্গে যোগ হয়েছে আরেকটি খুশির সংবাদ। জয়ার ‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমা ৪৫তম মস্কো উৎসবে অফিশিয়াল শাখায় মনোনয়ন পেয়েছে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন নুরুল আলম আতিক। জয়া বলেন, ‘আমি জাপানে ঘোরাঘুরির সময়ে জানতে পারি, আমাদের সিনেমাটি মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করছে। সিনেমাটি অনেক নামীদামি পরিচালকের সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। এটা অত্যন্ত খুশির সংবাদ। আমাদের উৎসবে যাওয়ার নিমন্ত্রণ ছিল। আমাদের জাপান ঘোরার শিডিউল ও শেষ মুহূর্তে সবকিছু গুছিয়ে উৎসবে যাওয়া সম্ভব ছিল না।’ ২০ এপ্রিল শুরু হয়েছে উৎসবটি, চলবে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত।

জাপানে ঘুরে দেশে ফিরেছেন জয়া আহসান

গত মাসে বোনের সঙ্গে জাপানে ঘুরতে গিয়েছিলেন জয়া আহসান। পছন্দের দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই ছিল জাপান। দেশটির টোকিও, হিরোশিমা, অসাকা, হোকাইদো দ্বীপসহ বেশ কিছু শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। জানালেন, গত সপ্তাহের দিকে দেশে ফিরেছেন। ঈদের পর সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত হবেন কি না, সেটা এখন জানাতে চাইলেন না।

ঈদের সময়টা পরিবারের সঙ্গেই কাটাবেন জয়া