২০২০ সালের ২১ মার্চ পারিবারিকভাবে রনি রিয়াদ রশিদের সঙ্গে আংটি বদল হয় ঢাকাই ছবির নায়িকা নুসরাত ফারিয়ার। ওই বছরের ১২ জুন ফারিয়া ফেসবুকে দুজনের ছবি প্রকাশ করে বাগদানের খবরটি দেন। ওই দিনই গণমাধ্যমকে ফারিয়া জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বরে আয়োজন করে বিয়ে হবে তাঁদের।
২০২০ সালের সেই ডিসেম্বর পার হয়ে আরও দুই বছর পার হতে চলেছে। নুসরাত ফারিয়ার বিয়ের খবর নেই। যা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিনোদন অঙ্গনে ফিসফাস চলে আসছিল। গত বুধবার দুপুরে সেই ফিসফাসের জবাব দিলেন নুসরাত ফারিয়া। জানালেন বিয়ে আর করবেন না তিনি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার বিয়ে আর হবে না, করছি না।’
কেন? এই অভিনেত্রী হাসতে হাসতে বলেন, ‘এত জানার দরকার কী? ইন্ডাস্ট্রিতে অন্তত একজন নায়িকা সিঙ্গেল থাক না। জোর করে বিয়ে, বাচ্চা—এসব দরকার নাই তো। একটু রিলাক্সে, একটু শান্তিতে থাকি না।’
এত আয়োজন করে আংটি বদল করলেন, দুজনের একটি সুন্দর ছবি সে সময় ফেসবুকে প্রকাশ করে সবাইকে আনন্দের খবরটি জানালেন। এরপর এমন কী হলো যে বিয়ের ওপর থেকেই মন উঠে গেল? নুসরাত ফারিয়া বলেন, ‘জীবনে ওঠা-নামা তো থাকবেই। আমাদের নিজেদের ভেতরে কোনো সমস্যা নাই, কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নাই, কখনো হয়নি। কিন্তু বিয়েটা আর হচ্ছে না।’
এই অভিনেত্রী বক্তব্য, ‘আমি যা করি, বুঝেশুনেই করি। এ কারণেই আমার কাজে কোনো বিতর্ক নাই। রনির সঙ্গে আমার সব সময়ই যোগাযোগ আছে। সারা জীবনই বন্ধুর মতো সম্পর্ক থাকবে তাঁর সঙ্গে। এখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটি দুজনের বোঝাপড়ার সিদ্ধান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘হুজুগের বশে কোনো কিছু করা ঠিক না। হুজুগের বশে করলে দীর্ঘ সময়ের ভোগান্তিটা আমারই হবে। এ কারণে ঠান্ডা মাথায় যা করার, সেটাই করছি আমি। সেভাবেই চলার চেষ্টা করি, করছি। আমার কাছে মনে হয়েছে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকলে সম্পর্কটি দীর্ঘস্থায়ী হবে।’
বিয়ের পর বিচ্ছেদ নিয়ে ভয় ফারিয়ার। তিনি বলেন, ‘আশপাশে অনেক বিচ্ছেদের খবরে আমার ভয় লাগে। কারণ, আমাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে এই বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টি নাই। এটি আমার জন্য একটা মানসিক ট্রমা।’
রনির সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে না বোঝা গেল, কিন্তু অন্য কোথায় বিয়ের ব্যাপারে পরিবার থেকে কোনো চাপ আছে কি না—এ ব্যাপারে এই নায়িকা বলেন, ‘পরিবার থেকে বিয়ের বিষয়ে চাপ আছে। কিন্তু আমি এখন যেভাবে, যে পরিমাণ কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি, বিয়ের বিষয়টি আসলে আমি কাজে সময় দিতে পারব না। সুতরাং, কাজ ফেলে এখনই বিয়ে করব না।’
তবে এই নায়িকার কথা, একসময় না একসময় বিয়ে তো করতেই হবে। যখন হবে তখন দেখা যাবে। এটি নিয়ে বাড়তি কোনো চাপ নেই মাথায়।
২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের গোয়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন তিনি। সেখানে তাঁর ‘পাতাল ঘর’ ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এটি তাঁর প্রথম কোনো সিনেমার অংশগ্রহণ। ফারিয়ার স্মৃতিতে চলচ্চিত্র উৎসবটি রঙিন হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক অ্যাওয়ার্ড শোয়ে অংশ নিয়েছি। হয় নৃত্য করেছি, না হয় উপস্থাপনা করেছি। এ কারণে প্রস্তুত হয়ে এভাবে রেড কার্পেটে হাঁটিনি। আমি রেড কার্পেটে হাঁটার জন্য এবার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। আলাদা করে শাড়ি বানিয়েছিলাম। শাড়ি পরে আমি রেড কার্পেটে হেঁটেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কয়দিন ওখানে ছিলাম, সিনেমার পরিবেশের মধ্যেই ছিলাম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পরিচালক, প্রযোজক, অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। আলাপ–আলোচনা হয়েছে। চেনাজানা হয়েছে। খুবই ভালো লেগেছে। তা ছাড়া বাংলাদেশ থেকে মিমি আপা, চঞ্চল ভাই, জয়া আপাসহ অনেকেই ছিলেন। একসঙ্গে দারুণ সময় কেটেছে আমাদের।’