চিত্রনায়িকা শাহনূরকে নীতি, নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। এই ঘটনার সঙ্গে অবশ্য জড়িয়ে আছে নিপুণ আক্তারের নাম। গত শুক্রবার ছিল নিপুণ আক্তারের জন্মদিন। শুভেচ্ছা জানাতে ওই দিন শাহনূর তাঁর ফেসবুক আইডিতে নিপুণের সঙ্গে অনেকগুলো ছবি পোস্ট করেন। স্ট্যাটাসে নিপুণকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সম্বোধন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা লেখেন। এতেই বাধে বিপত্তি।
শাহনূরের পোস্টের নিচে যখন ভক্ত-দর্শকেরা নিপুণকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন, তখন মন্তব্যের ঘরে চিত্রনায়ক জায়েদ খান নিপুণকে জড়িয়ে শাহনূরকে আক্রমণাত্মক প্রশ্ন ছুড়ে দেন। শাহনূরের সততা, নীতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জায়েদ।
শাহনূরের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে জায়েদ খান লেখেন, ‘একজন অনির্বাচিত মানুষ ভোটে পাস না করে জোর করে চেয়ারে বসে আছে। সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলমান। আপনার মতো শিল্পী তাঁকে সাধারণ সম্পাদক পদবি দিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও নীতি বাক্য ছাড়বেন ও ভালো ভালো উপদেশ দেবেন। সত্যিকারে যে সততা আর নীতির মধ্যে আপনারা নাই, এটা বুঝতে পারছেন তো?’
জায়েদ খানের মন্তব্যের পরদিন শনিবার বিকেল চারটার দিকে প্রথম আলোকে শাহনূর বলেন, ‘আমি পরে দেখেছি, জায়েদ খান আমার স্ট্যাটাসের নিচে মন্তব্য করেছেন। আমার সততা নিয়ে, নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমি বলতে চাই, আমার জানামতে আদালতের সবশেষ রায়েই নিপুণ এই পদে বসেছেন। এই পদে সে দায়িত্ব পালন করছেন সুতরাং আমরা তাঁকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বলতেই পারি। আমি নিজেও তো এই কমিটিতে আছি।’
জায়েদ খানকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘প্রায় আট মাস ধরে এই পদে বসে কাজ করছেন নিপুণ। অবৈধ হলে কি এটি সম্ভব হতো? অবৈধ হলে এত দিন তাঁর বিরুদ্ধে নতুনভাবে মামলা গড়াত আদালতে। সুতরাং জায়েদ খান যা বলছেন, এটি ঠিক নয়।’
এদিকে জন্মদিন কাটাতে মেয়েকে নিয়ে মালদ্বীপে আছেন নিপুণ। শাহনূরের স্ট্যাটাসের নিচে জায়েদ খানের মন্তব্য তাঁরও নজরে এসেছে বলে জানালেন তিনি।
শনিবার বিকেল চারটার দিকে মালদ্বীপ থেকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রথম আলোকে নিপুণ বলেন, ‘জায়েদ খান বলেছেন, মামলা চলমান। আমি জোর করে পদে বসে আছি, এটি একটি চরম হাস্যকর কথা। মাইক্রোফোনের সামনে কী সুন্দর করে নিজের মন গড়া বলে যান, অবাক লাগে। আমার কথা হচ্ছে, আমি আদালতের সবশেষ রায় নিয়েই এখানে বসেছি, দায়িত্ব পালন করছি। আর অন্যায় অবৈধ হলে আদালত দেখবেন। উনি কে?’
এই চিত্রনায়িকার কথা, ‘সবশেষ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার সুযোগ আছে। জায়েদ খান রিভিউ করতে পারেন। সেখানে মহামান্য আদালতের যে রায় আসবে, সেটা আমি মেনে নেব।’
নিপুণ হাসতে হাসতে আরও বলেন, ‘এই পদটিতে বসা নিয়ে আমার যদি বিন্দুমাত্র অন্যায় থাকত, ফাঁকফোকর থাকত, জায়েদ খান আমাকে ছাড় দিতেন? না, দিতেন না। কারণ, উনি এ বিষয়ে অন্যায় ধরতে ওত পেতে বসে আছেন।’
‘অন্যায়ভাবে সাধারণ সম্পাদকের পদ দখল করে আছেন’—নিপুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে জায়েদ খান এমন অভিযোগ করেছেন। এর বিরুদ্ধে আপনি কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না জানতে চাইলে নিপুণ বলেন, ‘অনেক দিন থেকে গণমাধ্যমের কাছে জায়েদ খান এসব বলে আসছেন। এ ব্যাপারে আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে কয়েকবার কথা বলেছি। তিনি আমাকে চুপচাপ থাকতে বলেছেন, অপেক্ষা করার উপদেশ দিয়েছেন। চুপচাপ আছি, অপেক্ষা করছি। তাঁর ভিডিও, অডিও বক্তব্যগুলো সংগ্রহ করেছি।’
নিপুণের এসব বক্তব্যে বিচলিত নন জায়েদ খান। তিনি বলেন, ‘নিপুণ আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কী, আমিই ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি এখনো বলছি, সে আদালত অবমাননা করেই পদে বসে আছেন। পৃথিবীতে নজির এটি। আপনারা জানেন, এ জন্য এরই মধ্যে আমি নিপুণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দুটি মামলাও করেছি উচ্চ আদালতে, শুনানির অপেক্ষায় আছে।’