গণমাধ্যমে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শবনম বুবলী তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুবলী এই পোস্ট দেন। ৪৪৯ শব্দের লেখায় তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে জানিয়ে দেন, তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে কেউ কোনো ধরনের বেফাঁস মন্তব্য করলে তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। স্ট্যাটাসে তিনি অতীতের বেশ কিছু ঘটনা উল্লেখ করেন। ৬টা ৪২ মিনিটে দেওয়া বুবলীর এই স্ট্যাটাস মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। সাড়ে আট হাজার রিয়্যাক্ট ও আড়াই হাজার মন্তব্য জমা হয়। বুবলী তাঁর স্ট্যাটাসে কারও নাম উল্লেখ না করলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তরা মন্তব্য করছেন, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের উদ্দেশে এই স্ট্যাটাস দিয়েছেন বুবলী।
বুবলী তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানিয়ে দেন, কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া, অসম্মান করা এবং টক শোতে নির্লজ্জের মতো হাসাহাসি শিখতে না পারার জন্য গর্বিত তিনি। তিনি লিখেছেন, ‘এসব যে পারে, সে অনায়াসেই লিজেন্ড শাবানা ম্যামের মতো এত সিনিয়র ব্যক্তিত্ব নিয়ে অপমানজনক বেফাঁস মন্তব্য করে বসতে পারে। কঠোর পরিশ্রম করে নিজের মতো এগিয়ে যাওয়া নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে অপমান করে কথা বলে মুখটাকে বিশ্রী করে ব্যঙ্গ করতে পারে। ভালো মনের মানুষ বর্ষা আপুকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলতে পারে। মাস্টারমেকার পরিচালক শ্রদ্ধেয় মালেক আফসারী স্যারকে নিয়ে অপমান করে কথা বলতে পারে, যা কিনা রীতিমতো তার পারিবারিক শিক্ষাকেই উপস্থাপন করে। এ জন্যই বলে, ব্যবহারই বংশের পরিচয়।’ ভক্তদের দাবি, এসব ঘটনা সরাসরি অপু বিশ্বাসের সঙ্গে মিলে যায়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জুন মাসে নন্দিত অভিনেত্রী শাবানার উদ্দেশে নায়িকা অপু বিশ্বাস অভিমানী একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। যদিও অপু বিশ্বাসের সেই পোস্টে শাবানার নামের উল্লেখ ছিল না; বরং ব্যবহার করা হয়েছে ‘লিজেন্ড’ শব্দটি। অপু বিশ্বাস তাঁর ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘২০১৭ সাল। সন্তানকে নিয়ে যখন বিপাকে, তখন বুকভরা আশা নিয়ে গিয়েছিলাম লিজেন্ডের কাছে। দুই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে বললেন, তিনি বাসায় নেই। কয়েক বছর পর এক সিনিয়র সাংবাদিকের মুখে শুনলাম, লিজেন্ড হাসিমুখে বলেছেন, “অপু বিশ্বাস তার সন্তানকে নিয়ে গাড়িভর্তি মিষ্টি নিয়ে এসেছিল আমার কাছে, তার পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। কিন্তু আমি তাকে ঢুকতে দিইনি।” একেই কি লিজেন্ড বলে?’ সেদিন মন্তব্যের ঘরে অপু বিশ্বাসের চাচাতো বোন শেলী আক্তার সেটা নিশ্চিত করেন। তিনি লেখেন, ‘হ্যাঁ, সেদিন আমিও ছিলাম তোমার সাথে। শাবানা ম্যাডামের বাসায় তো...।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে নাম প্রকাশ না করে ইঙ্গিতপূর্ণ স্ট্যাটাসে বুবলী এ-ও লিখেছেন, ‘কত বাজে মানসিকতার হলে সে একজন নিষ্পাপ বাচ্চাকেও কটূক্তি করতে ছাড়েনি।’ তিনি বলেন, ‘আমি মা হিসেবে ভালোবেসে আমার সন্তানকে নিয়ে কী করব বা আমার সন্তানের ভালোর জন্য কী করব, সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। হু দ্য হেল আর ইউ টক অ্যাবাউট দ্যাট?’
সর্বশেষ বুবলী বললেন, ‘সারাক্ষণ নানা মিথ্যা, বানোয়াট, উসকানিমূলক বিষয়ে কথা বলে, অথচ পরে আবার বলবে, সে ব্যক্তির বিষয়ে কথা বলে না। সারাক্ষণ মানুষকে ছোট করে কথা বলবে, কিন্তু পরে বলবে সে মানুষকে ছোট করে কথা বলে না! একেক সময় একেক রং ধারণ করে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার নগ্ন খেলা এসব বহুরূপী সস্তা মানসিকতার ব্যক্তিই পারে। লজ্জা।’
প্রসঙ্গত, এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুবলীকে ইঙ্গিত করে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘উনি যা যা করছেন বা করেন, তা তো আমার সন্তান দেখছেন। আমার সন্তানের তো বোঝার বয়স হয়ে গেছে। এখন জয়ের বয়সীরা অনলাইনে লেখাপড়া করে। আমি নাম বলব না, একজন তো একটা ভিডিও ছেড়েছেন। জয়ও সেই ভিডিও দেখেছে। সুতরাং এই সব ভিডিওতে তার ওপরও তো প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু আমি তো সেই কাজ করব না। আমি আমার সন্তানকে সঠিক পথে একজন মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলব।’ অপুর বক্তব্য ছিল এমন, ‘আমি মনে করি, আমার পারিবারিক শিক্ষা মানুষকে সম্মান দেওয়া, ক্ষতি করা নয় এবং আমি সেটা করার চেষ্টা করি। কে কাকে ছোট করছে, সেই বোধবুদ্ধি আমার আছে। আমি অনেক দিন থেকেই এসব বিষয় নিয়ে মিডিয়া এড়িয়ে চলতে চেয়েছি। কিন্তু সিনেমার মানুষ হওয়ায় মিডিয়ার সামনে কথা বলতে গিয়ে টুকটাক তা সামনে চলে আসে।’