গত রোববার রাতে মারা গেছেন খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ফুসফুসে সংক্রমণ, অক্সিজেন-স্বল্পতাসহ বেশ কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর প্রবীর মিত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয় তাঁকে। পরে কেবিনে স্থানান্তর করা হলে আবার অবস্থার অবনতি হয়। এরপর থেকে তাঁকে এইচডিইউ ইউনিটে রাখা হয়। গতকাল সকাল থেকে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। রাত ১০টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকেরা প্রবীর মিত্রকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে প্রবীর মিত্রর শেষ সময়গুলো নিয়ে প্রথম আলোর কথা হয় অভিনেতার ছোট পুত্র সিফাত ইসলামের সঙ্গে। আড্ডাপ্রিয় বাবার শেষ সময়ে চুপ হয়ে যাওয়া মানতে পারছেন না ছেলে।
সিফাত বলেন, ‘সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছিল। বাসায় বাচ্চাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েই কাটত বাবার সময়। তবে ২২ ডিসেম্বর বাবার শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ করি। শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা হচ্ছিল। সময় না নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে আইসিইউতে রাখা হয়। কিছুটা উন্নতি হলে কেবিনে রাখা হয়। আমরা যখন বাসায় আনার অপেক্ষায় ছিলাম, তখনই অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখন এইচডিইউ ইউনিটে রাখা হয়। সেখান থেকে আর ফিরলেন না তিনি।’
পরিবারের সঙ্গে প্রবীর মিত্র সবশেষ কথা বলেন সাত-আট দিন আগে। তাতেও কষ্ট হচ্ছিল। এরপর থেকে শুধু তাকিয়ে থাকতেন, কথা বলতে পারেননি তিনি। সিফাত আরও বললেন, ‘বাবা শুধু তাকিয়ে থাকতেন। তবে চোখের সামনে দিয়ে আমরা গেলেও তাঁর দৃষ্টি সেদিকে আসত না। চোখগুলো যেন কী বলতে চাইত, কিন্তু কাছে গেলে কিছুই বলতে পারতেন না তিনি।’
গতকাল বিকেলে শেষবারের মতো প্রবীর মিত্রের সাক্ষাৎ পায় পরিবার। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তখনই ইঙ্গিত দেন, যেকোনো কিছুর জন্য যেন প্রস্তুত থাকেন তাঁরা। বাবার সঙ্গে শেষ সময়ের স্মৃতি নিয়ে সিফাত বলেন, ‘আমরা কেউই কান্না ধরে রাখতে পারছিলাম না। কথা না বলেও মানুষটা যদি আরও কিছুদিন আমাদের মাঝে থাকতেন। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’