এক দশকের বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গের সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করছেন জয়া আহসান। তাই একই দিনে বাংলাদেশ ও ভারতে তাঁর দুই সিনেমা মুক্তি পাওয়া খুব একটা আশ্চর্য ঘটনা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু গত এক দশকে এমন উপলক্ষ খুব বেশি হয়নি। কারণ, দেশের সিনেমায় তুলনামূলক কম দেখা যায় তাঁকে।
গত বছর কলকাতায় তাঁর দুটি বাংলা সিনেমা মুক্তি পেলেও দেশের কোনো সিনেমায়ই দেখা যায়নি জয়াকে। আজ অবশ্য দুই বাংলার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে তাঁর সিনেমা। বাংলাদেশে নূরুল আলম আতিকের ‘পেয়ায়ার সুবাস’ দেখা যাবে ২৭টি হলে, অন্যদিকে সৌকর্য ঘোষালের ‘ভূতপরী’ মুক্তি পাবে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সিনেমা হলে।
একই দিনে মুক্তি পাওয়া ছাড়া ‘পেয়ারার সুবাস’ ও ‘ভূতপরী’র মধ্যে আরও কিছু মিল আছে। দুটি সিনেমারই শুটিং হয় বেশ কয়েক বছর আগে। ‘পেয়ারার সুবাস’ ২০১৬ সালে শুটিং শুরু করে মুক্তি পাচ্ছে ২০২৪ সালে। অন্যদিকে সৌকর্য ঘোষালের সিনেমাটির শুটিং হয় ২০১৯ সালে। নির্মাণের এত পরে মুক্তি পাওয়ায় সিনেমার আবেদন কি একটু কমে যায়? পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়া বলেন, সিনেমার বিষয়বস্তু সমসাময়িক হলে এটা কোনো সমস্যা নয়।
‘পেয়ারার সুবাস’ সিরিয়াস সিনেমা। মুক্তির আগে পরিচালক বলেছেন, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটি প্রাপ্তমনস্কদেরই দেখা উচিত। এ প্রসঙ্গে নূরুল আলম আতিক বলেন, ‘আমরা তেমন গন্ধের ছবি দেখি না।
‘পেয়ারার সুবাস’-এ গন্ধ হলো ট্রিগার পয়েন্ট। এটা শরীরের গন্ধ। সুগন্ধ হতে পারে আবার দুর্গন্ধও হতে পারে। সুগন্ধের সঙ্গে প্রকৃতির একটি অদ্ভুত কারবার আছে। বিপরীত লিঙ্গের যাদের প্রাণ আছে, তারা ঘ্রাণ থেকে জোড়া বাঁধে। ‘পেয়ারার সুবাস’ ঘ্রাণ থেকে বিস্তৃতি লাভ করে। এ কারণে পেয়ারা নামের একটি মেয়ে ও গন্ধের তাড়নার জীবনে সম্পর্কগুলোর অবস্থান দেখানো হচ্ছে এতে।’
‘ডুবসাঁতার’ থেকে ‘বিকল পাখির গান’—এর আগে নূরুল আলম আতিক ও জয়া আহসান নির্মাতা–অভিনেত্রী জুটি যখন একসঙ্গে হয়েছেন, তখনই পর্দায় জাদু তৈরি হয়েছে। এবারও তেমন কিছু দেখার অপেক্ষায় দর্শক।
তবে ‘পেয়ারার সুবাস’ মুক্তির আগে ছবির অভিনেতা আহমেদ রুবেলের মৃত্যু তৈরি করেছে বেদনাদায়ক আবহ। গত বুধবার রাজধানীর একটি মাল্টিপ্লেক্সে ছবিটির প্রিমিয়ারে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় অভিনেতার। জয়া আহসান, আহমেদ রুবেল ছাড়া এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, সুষমা সরকার, নূর ইমরান মিঠু প্রমুখ। আলফা-আই প্রযোজিত এ সিনেমায় সহপ্রযোজক হিসেবে রয়েছে চরকি।
অন্যদিকে ‘ভূতপরী’ নিয়ে জয়া বলেন, ১৯৪৭ থেকে ২০১৯—এই পুরো সময়কালকেই ছবিতে ধরেছেন পরিচালক। তবে এটি কোনো রাজনৈতিক গল্প নয়। ভূতের বায়োগ্রাফি বলবেন পরিচালক। এক ভূত যে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়, ভয় দেখায়, সে কীভাবে পরীতে পরিণত হয়, সেটা নিয়েই এই ছবি।
এক দিনে দুই সিনেমা মুক্তির আগে আক্ষরিক অর্থেই ‘দৌড়ের ওপর’ রয়েছেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী। ১ ফেব্রুয়ারি ইরানে ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয় তাঁর অভিনীত সিনেমা ফেরেশতের।
ইরান থেকে ফিরে ‘ভূতপরী’র প্রচারে এক দিনের জন্য কলকাতায় যান জয়া আহসান। যেখান থেকে ঢাকায় ফিরে বুধবার অংশ নেন ‘পেয়ারার সুবাস’–এর প্রিমিয়ারে। আজ শুক্রবার জয়ার থাকার কথা কলকাতায়। তবে ঢাকা–কলকাতা এই যাতায়াতে ক্লান্তি নেই তাঁর। কাজ বলে কথা!