‘রাজকুমার’, ‘দেয়ালের দেশ’, ‘ওমর’ ও ‘কাজলরেখা’ ছবির পোস্টার
‘রাজকুমার’, ‘দেয়ালের দেশ’, ‘ওমর’ ও ‘কাজলরেখা’ ছবির পোস্টার

৪ দিনে নামল ঈদের তিন সিনেমা, দর্শকের আগ্রহ যেসব সিনেমায়

এবারের ঈদে যে পরিমাণ ছবি মুক্তি পেয়েছে, তেমনটা নিকট অতীতে দেখা যায়নি। ঈদে ছবি মুক্তি দেওয়ার জন্য যেন সর্বোচ্চ চেষ্টাও চালিয়েছেন প্রযোজকেরা। তবে এক ঈদে এত ছবি মুক্তির বিষয়টি ভালোভাবে দেখেননি চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকে ও প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মতে, দেশে যে পরিমাণ প্রেক্ষাগৃহ আছে, তাতে তিন বা সর্বোচ্চ চারটি ছবি মুক্তি পেলে ভালো হতো। একসঙ্গে এত ছবি মুক্তির খেসারত গুনছেন প্রযোজকেরা। প্রেক্ষাগৃহমালিকেরাও এড়াতে পারেননি অর্থনৈতিক ক্ষতি। তাই বাধ্য হয়ে মুক্তির চার দিনের মাথায় তিনটি ছবির প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।

দর্শক খরায় স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে ‘আহারে জীবন’, ‘মেঘনা কন্যা’ ও ‘গ্রীন কার্ড’—এই তিনটি ছবি

দর্শকখরায় যে তিনটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত থেকে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ সরে এসেছে, সেগুলো হচ্ছে ফুয়াদ চৌধুরী পরিচালিত ‘মেঘনা কন্যা’, ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’ ও কাজী হায়াত পরিচালিত ‘গ্রিন কার্ড’। তিনটি ছবি প্রদর্শন বন্ধের সিদ্ধান্তের তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। ঈদের দিন থেকে ‘মেঘনা কন্যা’ দুটি, ‘গ্রিন কার্ড’ দুটি এবং ‘আহারে জীবন’-এর তিনটি করে শো চালিয়ে আসছিল স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।

এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া অন্যান্য চলচ্চিত্র হলো ‘রাজকুমার’, ‘ওমর’, ‘কাজলরেখা’, ‘দেয়ালের দেশ’, ‘জ্বীন ২’, ‘লিপস্টিক’, ‘সোনার চর’ ও ‘মায়া; দ্য লাভ’। সাধারণত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রগুলো সপ্তাহখানেক প্রদর্শিত হয়।

এদিকে ঈদে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রগুলোর কয়েকটি নিয়ে ঈদের দিন থেকে টিকিটসংকটের খবরও শোনা যাচ্ছে। তারপরও কেন তিনটি ছবি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হলো সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে? মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘যেসব ছবি নামিয়ে ফেলা হয়েছে, সেসব ছবির দর্শক চাহিদা খুবই কম। এমনও হয়েছে যে ৩০০ আসনের প্রেক্ষাগৃহে ২০ জন, ১০ জন এমনকি ৮ জন দর্শকও ছিল। দিন শেষে ঈদের এই উৎসবে ৩০০ আসনের প্রেক্ষাগৃহে যদি এভাবে আসন ফাঁকা থাকে, তাহলে আমাদের যেমন ক্ষতি, তেমনি প্রযোজকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এভাবে তো চলতে পারে না।’

‘রাজকুমার’–এর গানের দৃশ্য

মেসবাহ উদ্দিন সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘দর্শক যেহেতু ছবিগুলো দেখছেন না, তাই প্রেক্ষাগৃহ ফাঁকা রেখে লাভ নেই। আমরা তা করিওনি। যেসব ছবির প্রতি দর্শকের চাহিদা আছে, সেসব ছবির শো বাড়িয়ে দিচ্ছি। তাই এই তিনটি ছবি প্রদর্শন বন্ধ করে দিয়েছি।’

ওমর চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ

মুক্তির প্রথম দিন থেকেই কি এমন অবস্থা? ‘প্রথম দিন থেকে “দেয়ালের দেশ” ছবিটি নিয়ে প্রত্যাশা ভালো ছিল, তাই শো বেশি রেখেছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের আশানুরূপ দর্শক পাইনি। হয়তো দর্শক হয়েছে, কিন্তু একটা সিনেমার ক্ষেত্রে দুই–তিন দিন আগে থেকে টিকিট নিয়ে চাপ অনুভব করার ব্যাপারটি ঘটেনি এসব ছবির ক্ষেত্রে। দেখা গেছে, “রাজকুমার” দেখতে এসেছেন, টিকেট পেলেন না, তখন অন্য ছবি দেখছেন। এসব হয়। যেহেতু পছন্দের ছবির টিকিট পেলাম না, কষ্ট করে আসছেন, ফিরে না গিয়ে অন্য ছবির টিকিট কেটে দেখছেন।’

দর্শকের চাপ কোনটায় বেশি? এমন প্রশ্নে মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘দর্শকের চাপ সবচেয়ে বেশি “রাজকুমার” ছবিতে। মুক্তির আগে থেকেই টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। এরপর আমাদের সব প্রেক্ষাগৃহে “ওমর” নিয়ে দর্শকের আগ্রহ আছে। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, “জ্বীন টু” ছবির প্রতিও এখন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।’