দীর্ঘদিন পর সিনেমার জন্য খবরে অপু বিশ্বাস। তা-ও আবার পরপর দুই সপ্তাহে দুটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে তাঁর! গত শুক্রবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘ট্র্যাপ: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আগামী সপ্তাহে আসছে ‘ছায়াবৃক্ষ’। ছবি দুটির প্রচার নিয়ে এখন বেশ ব্যস্ত অপু।
‘ট্র্যাপ’ ছবির দর্শক সাড়া কেমন, তা জানতে গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাসে ছুটে যান অপু। দ্বীন ইসলাম পরিচালিত ছবিটি সাইবার অপরাধ নিয়ে তৈরি। ছবিতে তাঁর নায়ক জয় চৌধুরী। এর ঠিক পরে তিনি আসেন এফডিসিতে, ‘ছায়াবৃক্ষ’ ছবির মুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। বন্ধন বিশ্বাস পরিচালিত ছবিটিতে অপু অভিনয় করেছেন নিরবের বিপরীতে। নিরব ও জয় চৌধুরী—এই দুই নায়কের বিপরীতে এর আগেও পর্দা ভাগাভাগি করেছেন অপু।
১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে ‘ছায়াবৃক্ষ’। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি অনুদানের ছবিটি চা-শ্রমিকদের জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার চা-বাগানে ছবিটির শুটিং শুরু হয়। পরের বছর শ্রীমঙ্গলে শুটিং হয়। এই ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময় চরিত্রটির জন্য পরিচালকের পরামর্শে ওজন কমানোর যুদ্ধে নেমেছিলেন তিনি। অপু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওজন কমাব কমাব বলে আসছিলাম, কিন্তু করোনার কারণে কোনো শুটিং না থাকায় চাপ বোধ করিনি। সময়ও হচ্ছিল না। শুটিংয়ের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পর বাধ্য হয়ে ওজন কমানোর যুদ্ধ শুরু করি। এই যুদ্ধে সফলও হই।’
‘ছায়াবৃক্ষ’ ছবির শুটিং শুরুর আগে অপু বিশ্বাসের মা মারা যান। মানসিকভাবে তখন ভেঙে পড়েছিলেন। এ প্রসঙ্গেও কথা বলেন অপু, ‘যখন আমার মাকে হারাই, তখন মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়ি। কোনোভাবেই কাজে মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। এই সিনেমা আমাকে কাজে ফেরাতে সাহায্য করেছে। নিরবের সঙ্গে ১৫ বছর পর ছবি মুক্তি পাচ্ছে। সে অনেক পেশাদার আর্টিস্ট। সে তার কাজ সিরিয়াসভাবে করেছে। সহশিল্পী হিসেবে সে আমাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। তার এ বিষয়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি।’
অন্যদিকে ‘ট্র্যাপ’ একেবারেই অন্য ধরনের সিনেমা। অপু বিশ্বাস মনে করেন, সিনেমাটিতে যে বার্তা আছে, তার সঙ্গে এ সময়ের দর্শকেরা নিজেদের মেলাতে পারবেন। তিনি বলেন, ছবিতে অনেক ধরনের তথ্য পাবেন। জানতে পারবেন সমাজে আসলে কত ধরনের ফাঁদ থাকে; এসব ফাঁদ থেকে নিজেদের কীভাবে বাঁচাবেন, সেটাও জানতে পারবেন। এ ধরনের গল্পে আগে কখনো কাজ করেননি বলে ভালো লাগাটা আরও বেশি বলেও জানান তিনি। মুক্তির পর দর্শকদের কাছ থেকে ইতিবাচক বার্তা পাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন অপু।
অনেকেই মনে করছেন, বিরতির পর দুই সপ্তাহে পরপর দুটি সিনেমা মুক্তি না পেলেও ভালো হতো। অপু অবশ্য এসব নিয়ে ভাবছেন না। তিনি মনে করেন, পরপর দুই সপ্তাহে সিনেমা মুক্তি অভিনয়শিল্পীদের জন্য নতুন কিছু নয়। কেউবা মনে করছেন, এটা সুসময়ও। তবে অপু বললেন এভাবে, ‘সুসময় কাটাচ্ছি কি না, জানি না। তবে ভালো লাগছে নতুন বছরটা নতুনভাবে শুরু করতে পেরে। আরও ভালো লাগছে নতুন দুটি সিনেমা একই মাসে মুক্তি পাচ্ছে বলে। দুটি সিনেমার গল্পই খুব সুন্দর। আমার বিশ্বাস, সবার ভালো লাগবে।’
গত বছর ‘লাল শাড়ি’ দিয়ে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন অপু বিশ্বাস। সে ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসা কুড়ায়। এদিকে নতুন বছরে আরও একটি নতুন পরিচয়ে হাজির হয়েছেন তিনি, আত্মপ্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী হিসেবে। কথায় কথায় অপু জানান, তাঁর প্রযোজিত প্রথম সিনেমায় ভালো সাড়া পাওয়ায় ভবিষ্যতে তাঁকে আবারও এ ভূমিকায় দেখা যাবে। তিনি বলেন, ‘লাল শাড়ি’ মুক্তির পর যেভাবে দর্শকেরা সমর্থন দিয়েছেন, তাতে নিজেকে সৌভাগ্যবতী বলতেই হবে।’
এদিকে বড় পর্দার পাশাপাশি ওটিটিতেও দেখা গেছে অপুকে। তাঁর অভিনীত প্রথম ওয়েব ফিল্ম ‘ছায়াবাজি’ দিয়ে প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। তিনি জানান, গত বছর সৈয়দ শাকিল পরিচালিত ছায়াবাজি মুক্তির পর আরও কয়েকটি ওয়েব কনটেন্টের প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি। তবে ব্যাটে-বলে না মেলায় করা হয়নি। তিনি এখন অপেক্ষায় আছেন ভালো চিত্রনাট্য আর পরিচালকের। পছন্দ হলেই ‘হ্যাঁ’ বলবেন তিনি।