যাঁরা চিত্রনায়িকা পরীমনিকে চেনেন, তাঁরা এই নায়িকার শতবর্ষী নানা শামসুল হক গাজী সম্পর্কেও জানেন। এই নানাই ছিল তাঁর শক্তি, সাহস, চলার পথের অনুপ্রেরণা। যেকোনো বিপদ-আপদে নানাই ছিলেন তাঁর একমাত্র আস্থার জায়গা।
সেই নানা গেল বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হলে বাসায় নিয়ে আসতেন। কিন্তু এবার চিরদিনের জন্য পরীমনিকে ছেড়ে চলে গেলেন তাঁর নানা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শামসুল হক গাজী। পরীমনির নানার মৃত্যুসংবাদ প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর ব্যবস্থাপক তুরান মুনসি।
পরীমনি তাঁর নানা শামসুল হক গাজীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার উদ্দেশে রওনা করেছেন। সকাল নয়টার সময় যখন কথা হয়, তখন তাঁরা বরিশালে পৌঁছান। জানা গেছে, ভান্ডারিয়ায় নানির কবরের পাশেই সমাহিত করা হবে নানা শামসুল হক গাজীকে।
নানাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর থেকেই পরীমনি ভীষণ উদ্বিগ্ন ছিলেন। ছোটবেলায় মায়ের মৃত্যুর পর পরীমনির বাবাও মারা যান। এর পর থেকেই নানার কাছে বেড়ে উঠেছেন তিনি।
পিরোজপুর থেকে ঢাকায় এসে একসময় বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন পরীমনি। এ সময়েও তাঁর একমাত্র অভিভাবক ছিলেন নানা।
কদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালে নানাকে নিয়ে পরীমনি প্রথম আলোর এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘নানার এখন যে অবস্থা, কখন যে কী ঘটে যায়, বলা যায় না। আমি আসলে ভাবতেই পারছি না। নানা না থাকলে আমার যে কী হবে। কীভাবে থাকব আমি!’
মরদেহবাহী গাড়ির পেছনে আরেকটি গাড়িতে করে ভান্ডারিয়ায় যাচ্ছেন পরীমনি। গাড়িতে আছেন পরীমনির পরিবারের সদস্যরাও। এর বাইরে আছেন পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীও।
চয়নিকা চৌধুরী বললেন, ‘পরীমনি কী হারিয়েছে, তা শুধু সে-ই জানে। এই নানা তাঁর জীবনের কী ছিল, তা আমরা দেখেছি। মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত হয়ে আছে পরীমনি। জানি না, এই শোক সইবে কী করে পরী।’