ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলার এবারের আসরে মনোনয়ন পেয়েছিলেন বাংলাদেশি পাঁচজন তারকা। গত শুক্রবার রাতে কলকাতার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত মূল পুরস্কার আসরে পুরস্কার জিতেছেন জয়া আহসান, তাসনিয়া ফারিণ ও সোহেল মণ্ডল। গত বছর মুক্তি পাওয়া আলাদা আলাদা সিনেমার জন্য আলাদা বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন তাঁরা। এ আসরে পুরস্কারের ফাঁকে পারফর্ম করেন নুসরাত ফারিয়া।
ফিল্মফেয়ারে প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি তারকা পারফর্ম করলেন। অনুষ্ঠান শেষে গত ৩০ মার্চ বিকেলে কলকাতা থেকে দেশে ফিরেছেন তিনি। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা, নতুন সিনেমাসহ নানা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
ফিল্মফেয়ারের মতো মর্যাদাপূর্ণ আসরে পারফরম্যান্স করার সুযোগে সম্মানিত বোধ করছেন নুসরাত ফারিয়া। তিনি বলেন, ফিল্মফেয়ার বহু বছর ধরে ভারতের সিনেমায় অবদান রেখে আসছে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের সিনেমাকে উৎসাহিত করতে নিয়মিতই এ অ্যাওয়ার্ড শো হয়। এটি সিনেমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার অনুষ্ঠান।
ফারিয়া আরও বলেন, ‘শেষ কয়েক বছর আয়োজকদের কাছ থেকে পারফরম্যান্স করার প্রস্তাব পেয়েছিলাম, ব্যাটে-বলে মেলেনি। এবার সব মিলে গেল।
বাংলাদেশি শিল্পীদের মধ্যে এ অনুষ্ঠানটি আমিই প্রথম পারফর্ম করলাম। এটা আমার জন্য স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। কিন্তু এত বড় অনুষ্ঠানে পারফরম্যান্সের জন্য আমাকে রাখা হয়েছিল। এটি আমার জন্য বড় সুযোগ বলতে পারেন। আয়োজকেরা যে আমাকে দুই বাংলার প্রতিনিধিত্ব করতে স্মরণ করেছেন, এটি আমার জন্য বড় সম্মানের।’
এদিকে এই শোর যখন মহড়া চলছিল, কলকাতায় বসে বাংলাদেশে বাবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের খবর পান ফারিয়া। ফলে চূড়ান্ত প্রস্তুতিও মনের মতো করে নিতে পারেননি। ফারিয়া বলেন, ‘প্রথম রোজার দিন একবার করেছিলেন, গত ২৭ মার্চ রাতে আরেকবার স্ট্রোক করেন বাবা। একটা বড় অপারেশন হয়েছে। ২৮ মার্চ সকালে বাংলাদেশে আসি। অপারেশনের সময় আমি ছিলাম। অপারেশন সফল হয়েছে। আবার ওই দিনই বিকেলে কলকাতায় ফিরি। রাতে মহড়া করে পরের দিন অনুষ্ঠানটিতে অংশ নিই। একটা মানসিক চাপের মধ্য থেকে কাজটি করতে হয়েছে আমাকে।’
ফারিয়া নিজেও কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমার সময়টা ভালো যাচ্ছে না। কিছুদিন আগে আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম।’
এদিকে অতিসম্প্রতি কলকাতার একটি ছবিতে কাজের কথা থাকলেও আপাতত সেটি পিছিয়েছে। ফারিয়া বলেন, ‘এখন চাপ নিয়ে কাজ করা যাবে না। বাবাকে এখনো এক মাস হাসপাতালে থাকতে হবে। তাই এখন টানা শুটিং সম্ভব নয়। আগে থেকেই চুক্তি করা কিছু ব্র্যান্ডিংয়ের কাজে অংশ নেওয়া এবং ফাঁকে ফাঁকে হয়তো স্টেজ শো করা যাবে।’
জানালেন ২১ এপ্রিল কলকাতায় একটি বিজ্ঞাপনের কাজ আছে। এরপর ২৫ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে সিনেমার গানের সঙ্গে নাচের স্টেজ শো আছে। বলেন, ‘অনেক বড় শো হবে সেখানে। অস্ট্রেলিয়াতে প্রথম স্টেজ শো করব। এটি আমার জন্য আলাদা আরেকটি অর্জন বলতে পারেন।’
নিয়মিত স্টেজ শো, ফটোশুট, বিজ্ঞাপনে থাকলেও দেশীয় সিনেমায় খুব একটা দেখা যাচ্ছে না ফারিয়াকে। তাহলে কি সিনেমার চাইতে অন্য কাজেই বেশি আগ্রহী? এমন প্রশ্নে ফারিয়ার উত্তর, ‘ঠিক তা নয়। সব জায়গাতেই থাকতে হবে। হলিউড-বলিউডের তারকারাও নিয়মিত স্টেজ শো করেন। সিনেমা, বিজ্ঞাপন, গান সমানভাবে করতে হবে। আমাদের এখানে সিনেমায় যা পারিশ্রমিক, শুধু তা দিয়ে একজন নায়িকার জীবনধারণ কঠিন। আর্থিক দিকটাও ভাবতে হয়। তাই সব মাধ্যমেই কাজ করতে হবে।’
কিন্তু দেশীয় সিনেমায় আপনাকে সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? এ ব্যাপারে ফারিয়ার বক্তব্য, ‘এখন তো ছবি সেভাবে হচ্ছে না। হাতে গোনা বড় বাজেটের ছবি হয়। কাজ তো অনেক আসে। এ পর্যায়ে এসে তো যেনতেন ছবিতে কাজ করব না। কম করলেও গল্প, পরিচালক ও বাজেট দেখেই কাজ করতে হবে।’
কথায় কথায় অভিনেত্রী জানালেন, ‘রকস্টার’সহ তাঁর অভিনীত কলকাতার দুটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া দেশে অনম বিশ্বাসের পরিচালনায় একটি অনুদানের ছবির কাজও শেষের পথে।