বিগত কয়েক বছর গতানুগতিক ধারার বাইরে ঢাকাই সিনেমায় প্রায় উঠে এসেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন গল্প, চরাঞ্চলের মানুষের গল্প। ‘নয়া মানুষ’ সিনেমার গল্পটি এ সারির। এটি আ মা ম হাসানুজ্জামানের ‘বেদনার বালুচর’ গল্প অবলম্বনে মাসুম রেজার চিত্রনাট্যে নির্মিত হচ্ছে। পরিচালনায় রয়েছেন সোহেল রানা বয়াতি। সোহেল রানা বয়াতির প্রথম চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’–এর চিত্রধারণের কাজ শেষ হয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের অক্টোবরে চলচ্চিত্রটির চিত্রধারণ শুরু হয় কিন্তু সুপার সাইক্লোন সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে শুটিং সেট চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ৬ এপ্রিল থেকে নতুন করে শুরু হয় চলচ্চিত্রটির কাজ, শেষ হয় ১২ এপ্রিল।
দ্বিতীয় পর্যায়ের শুটিং অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ চরিত্রে অভিনয় করা রওনক হাসান বলেন, ‘প্রচণ্ড দাবদাহে সবাই অসহায় হয়ে যাই, কিছু অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলী অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু সবার একটাই উদ্দেশ্য ছিল, যেকোনো মূল্যে শুটিং শেষ করা। কারণ, এবার শুটিং শেষ করতে না পারলে আবার নতুন করে সেট নির্মাণ, সবার লুক সেট ও সময় মেলানো কঠিন ছিল, বিশেষ করে এমন স্বাধীন চলচ্চিত্রের বাজেট স্বল্পতার কারণে সেটা আরও বেশি কঠিন।’ ‘
‘নয়া মানুষ’ সিনেমায় সুজলা চরিত্রে দেখা যাবে মৌসুমী হামিদকে। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘শেষরাতে আমাদের কাজ শেষ হতো। আমরা শহরের একটা হোটেলে থাকতাম। শুটিং স্পট মানে চর থেকে হোটেলে যেতে দুই ঘণ্টা সময় লাগত হোটেলে ২-৩ ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে আবার চরে ফিরতে হতো। এই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে প্রতিদিন ১৮-১৯ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে।’
নির্মাতা সোহেল রানা বলেন, ‘প্রান্তিক মানুষদের যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে জীবন যাপন করতে হয়, আমাদের তেমন সিত্রাং ঝড়, বৃষ্টি, প্রচণ্ড দাবদাহ মোকাবিলা করে কাজ করতে হয়েছে। আশার কথা হচ্ছে, কোনো বাধাই আমাদের মনোবল ভাঙতে পারেনি, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও অমানবিক পরিশ্রমে সুন্দরভাবে শুটিং শেষ করতে পেরেছি। আমি ভাগ্যবান প্রথম চলচ্চিত্রে সবার এতটা সহযোগিতা পেয়েছি।’
নির্মাতা সোহেল রানা জানান, নদীর ভাঙা-গড়ার কারণে চর জাগে, চর ডোবে। একই সঙ্গে ভাসমান মানুষের ঠিকানাও বদলায়। ভাসতে ভাসতে মানুষ এক চর থেকে আরেক চরে চলে যায়। নতুন মানুষ চরে এলে তাদের কী রকম সংকট বা সমস্যার সৃষ্টি হয়, সেটা নিয়েই গল্প। এটার মধ্যে প্রেম, প্রকৃতি, ভালোবাসা ও জীবনদর্শনের বিষয়ও থাকছে।
কমল চন্দ্র দাসের চিত্রগ্রহণে নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করছেন আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, স্মরণ সাহা, শিখা কর্মকার, মাহিন রহমান, মেহারান সানজানা, পারভীন পারু, মেরি ও শিশুশিল্পী উষশী।
সিনেমাটি মুক্তি নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নান্দনিক ফিল্মস–এর প্রধান আ মা ম হাসানুজ্জামান বলেন, ‘প্রথম লটের ফুটেজের সম্পাদনার কাজ আমরা আগেই শেষ করে রেখেছি। আশা করছি, বাকি সম্পাদনা ও অন্যান্য কাজ আমরা দ্রুত শেষ করে এই বছরই চলচ্চিত্রটি দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।’