ওমর সানী
ওমর সানী

পালিয়ে থাকার চেয়ে জেলখানায় থাকাও ভালো, কার উদ্দেশে বললেন ওমর সানী

নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী রেস্টুরেন্ট ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নতুন কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের খবরে নেই এই তারকা। তবে মাঝেমধ্যে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে নিজের মতামত ফেসবুকে ব্যক্ত করেন এ তারকা। গতকাল মঙ্গলবার নিজের ভ্লগে ‘আমার শিল্পের মানুষদের উদ্দেশে বলছি, লুকিয়ে থেকে কোনো লাভ নেই, প্রকাশ্যে আসো’ এমন শিরোনাম দিয়ে ৪ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে নানা দল ও পেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে কথা বলেছেন।

ওমর সানী

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে আছেন দলটির নেতা-কর্মীদের অনেকে। এর মধ্যে অনেকেই বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন। সেই তালিকায় আছেন দলের সঙ্গে জড়িত সিনেমা, সংগীত ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকে। আত্মগোপনে থাকা সিনেমার সেই সব শিল্পী, কলাকুশলীর উদ্দেশে ভিডিও বার্তায় কথা বলেছেন ওমর সানী।

আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি নিয়ে শুরুতেই ওমর সানী বলেন, ‘যারা আমার ফিল্ম আর্টিস্ট এবং সংগীতের আর্টিস্ট, যারা দল করার কারণে এবং দল পতনের পর যারা পালিয়ে আছ, লোকান্তরে আছ—তাদের উদ্দেশে এই কথাগুলো বলছি। তোমাদের পালিয়ে থাকার তো দরকার নাই। তোমরা দল করেছ, দলের সঙ্গে জড়িত ছিলে... এই যা। মার্ডার তো করো নাই, মার্ডার করছ? হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন করছ? জানি না। আমার মনে হয় যে পালিয়ে থাকার চেয়ে প্রকাশ্যে এসে কথা বলা উচিত। হয়তো কিছু মানুষ গালি দেবে, সেটা সহ্য করতে হবে। কিছু মানুষ বিদ্রূপ করবে, তোমাদের ভুলগুলো, দোষগুলো স্বীকার করতে হবে যে—আমরা এটা করেছি, এটা আমাদের করা ঠিক হয়নি। কিন্তু পালিয়ে থাকার কিছু নাই।’

ওমর সানী

পালিয়ে থাকার চেয়ে প্রকাশ্যে এসে দোষ স্বীকার করার আহ্বান জানিয়ে ওমর সানী আরও বলেন, ‘পালিয়ে না থেকে আমার মনে হয় প্রকাশ্যে এসো, তোমরা বলো যে আমরা অমুকটা করেছি, যা ঠিক হয়নি। অপরাধ করে থাকলে বিচার হবে, বড়জোর কিছুদিন রিমান্ডে থাকতে পারো। আমার তো মনে হয় না তোমাদের যে অপরাধ, তার জন্য ফাঁসি হবে। যারা কাপুরুষ, তারা পালিয়ে থাকে। তোমরা শিল্পীরা কেন পালিয়ে থাকবা! আর দু-একজন স্টুপিড, যারা বিদেশে পালিয়ে আছে, ওদের দেশে আসার মতো কোনো মনমানসিকতা নাই। কারণ, ওরা তো জন্মগতভাবে কাপুরুষ।’

শেষের দিকে ওমর সানী বলেন, ‘আমার ফিল্মের সহকর্মী, আর্টিস্ট, টেকনিশিয়ান—তোমরা যারা পালিয়ে আছ, তোমাদের তো পালিয়ে থাকার দরকার নেই। প্রকাশ্যে আসো। ধরা দাও, দরকার হলে জেলে যাও। জেলে তো রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি থেকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ; অনেকেই যায়। পালিয়ে থাকার চেয়ে জেলখানায় থাকাও ভালো। এতে আরও প্রকাশ্যে তোমার দোষগুলো ভেসে আসবে। আমার মনে হয়, এই কাজগুলো না করাই ভালো। সে জন্যই বলি, প্রকাশ্যে এসে মানুষের সঙ্গে কথা বলো। ধরা দাও, দরকার হলে জেলে যাও, আবারও বলছি। আমার দৃষ্টিতে এটাই বলে, কার দৃষ্টিতে কী বলবে আমি জানি না। আমার কাছে মনে হয়েছে, তোমাদের উদ্দেশে এটা বলা উচিত; আমি বললাম এবং প্রকাশ্যেই বললাম। এতে কে কী ভাবছেন, কে কী করছেন, আমি জানি না। যে যেই লাইনে কাজ করে, সেই লাইনের মানুষের প্রতি সহানুভূতি থাকে। আমরা কেউ দোষের ঊর্ধ্বে না, কারণ আমরা মহামানব না।’