সিলেটের জৈন্তাপুরে টানা ৪৫ দিন ওরা ৭ জন সিনেমার দৃশ্যধারণ করা হয়েছে
সিলেটের জৈন্তাপুরে টানা ৪৫ দিন ওরা ৭ জন সিনেমার দৃশ্যধারণ করা হয়েছে

রণাঙ্গনের গল্পে ‘ওরা ৭ জন’

আজ ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স, মধুমিতাসহ সারা দেশের ২৬ সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ‘ওরা ৭ জন’।

একাত্তরে গেরিলাযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন তাঁর এক মামা সাইফুল ইসলাম, আরেক মুক্তিযোদ্ধা মামা রফিকুল ইসলামের মুখে বাংলাদেশের জন্মযুদ্ধের গল্প শুনে বেড়ে উঠেছেন। খিজির হায়াত খানের নির্মাণে তাই ঘুরেফিরে আসে মুক্তিযুদ্ধ। ২০০৭ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা অস্তিত্বে আমার দেশ দিয়ে নির্মাণে খিজিরের অভিষেক। ‘সিনেমাটি যেভাবে বানাতে চেয়েছিলাম, সেভাবে বানাতে পারিনি। ইচ্ছা ছিল, আরেকবার সুযোগ এলে বড় আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরেকটি সিনেমা বানাব,’ বলছেন খিজির হায়াত খান।

দেড় দশক পর সেই সুযোগ মিলেছে, একাত্তরে সাত তরুণ মুক্তিযোদ্ধার এক উদ্ধার অভিযানের ঘটনাকে বড় পর্দায় তুলে এনেছেন খিজির হায়াত খান। স্বাধীন বাংলাদেশে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম সিনেমা ওরা ১১ জন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সিনেমার নাম করেছেন ওরা ৭ জন। ওরা ১১ জন সিনেমার অভিনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা খসরুর সঙ্গে রণাঙ্গনে ছিলেন খিজিরের ছোট মামা সাইফুল ইসলাম। একসঙ্গে এক অভিযানে অংশ নিয়েছেন তাঁরা, সেই অভিযানেই শহীদ হন তিনি।

‘ওরা ৭ জন’ সিনেমার দৃশ্য

খিজির হায়াত বলছেন, ‘ওরা ১১ জন সিনেমার শেষ দৃশ্যে এক নারীকে বলতে দেখা যায়, “আমার সাফু কই?” সাফু আমার মামার ডাকনাম। নানিকে মামার মৃত্যুর খবর দেওয়ার ঘটনাটিই সিনেমায় উঠে এসেছে।’

মাঝে চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে কানাডায় গিয়েছিলেন খিজির, তখন আরেক মামা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের বাসায় ছিলেন তিনি। ইউনেসকো থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে নেতৃত্বে থাকা দুজনের একজন রফিকুল ইসলাম। মামার কাছে শোনা মুক্তিযুদ্ধের গল্প ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণার আলোকে সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন খিজির হায়াত।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসে বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি অনেকটাই বদলে গেছে, এই সময়ে এসে মুক্তিযুদ্ধকে তুলে আনা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? খিজিরের ভাষ্যে, ‘গেরিলাযুদ্ধটা দেখিয়েছি, পুরো টিম নিয়ে মেঘালয়ের পাশে ৪৫ দিন দৃশ্যধারণ করেছি। চিত্রনাট্য লেখার সময়ই আমরা ভেবেছি, আমরা এমন জায়গায় দৃশ্যধারণ করব, যেখানে এখনো আধুনিকায়ন হয়নি। ওই লোকেশনগুলো এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে।’

খিজির হায়াত খান

সিনেমায় সাত মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইন্তেখাব দিনার, ইমতিয়াজ বর্ষণ, শাহরিয়ার ফেরদৌস, সাইফ খান, খালিদ মাহবুব, নাফিজ আহমেদ ও খিজির হায়াত খান। তাঁদের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে চরিত্রে পাওয়া যাবে অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমকে।

মম বলেন, ‘কাজটি খুব মন দিয়ে করার চেষ্টা করেছি। আমরা একটি জার্নির মধ্য দিয়ে গেছি। দিন শেষে কাজটা খুব আনন্দ নিয়ে করেছি।’

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটির প্রিমিয়ার হয়েছে।