রাজ ও রাজ্যকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যেমন কাটছে পরীমনির দিনগুলো

গত ২৪ মার্চ পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার সিংহখালী গ্রামে যান পরীমনি। এই গ্রামেরই নানাবাড়িতে জন্মেছিলেন তিনি। আগে অনেকবার গেলেও এবারের যাত্রাটা তাঁর জন্য, গ্রামের মানুষের জন্য ছিল অন্য রকম। এবারের ভ্রমণে প্রথমবার পরীর সঙ্গী স্বামী শরীফুল রাজ ও সন্তান রাজ্য। ছবিতে ছবিতে দেখে নেওয়া যাক পরীমনির সফর।
এসএসসি পরীক্ষার পরপরই গ্রাম ছাড়েন পরীমনি। অভিনয়ে আসার পরও প্রতিবছর কিছুদিনের জন্য গ্রামে ফিরেছেন। কিন্তু গত চার বছর গ্রামে যেতে পারেননি। হাসতে হাসতে পরীমনি বলেন, ‘আগে দুইবার খবর পাঠিয়েও যেতে পারিনি। বড় ব্যাপার ছিল, কোভিড। তা ছাড়া নিজের জীবনে কিছু ঝড়ঝাপটা গেছে। বিয়ে, বাচ্চা হওয়ারও একটা ব্যাপার ছিল। এবার তাই না বলেই রওনা হয়েছিলাম’
পরীমনির সৌজন্যে
গ্রামের আকাশ সীমানায় হেলিকপ্টার দেখেই দূরদূরান্ত থেকে পরিচিত, অপরিচিত লোকজন ছুটে আসেন। পরী বললেন, ‘সঙ্গে রাজ ও রাজ্য ছিল, এ কারণে মানুষের একটা বাড়তি আগ্রহ ছিল। যখন নামলাম, সবাই ঘিরে ধরেছে। যে মাঠে নেমেছিলাম, ছোটবেলায় জায়গাটা ছিল জলাশয়। এখন মাটি ভরাট করে মাঠ হয়েছে। নামার পর মানুষের ভিড়ে এগোতেই পারছিলাম না। মানুষের এত ভালোবাসা, বাড়ি পৌঁছানোর পর দল বেঁধে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আমাকে ও আমার সন্তানকে দেখতে আসছেন’
ভগীরথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়েছেন পরীমনি। গ্রামে গেলে স্কুলজীবনের বন্ধুদের মনে পড়ে। তবে তাঁর বড় খালার মেয়ে স্বর্ণা ছাড়া ক্লাসের অন্য বন্ধুদের সঙ্গে আর দেখা হয় না। কেউ বিদেশে, কেউ চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। কেউ বিয়ে করে গ্রাম ছেড়েছেন। তাঁদের কথা বলতে বলতে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন পরী
প্রায় দুই সপ্তাহ হলো গ্রামে আছেন পরীমনি। কেমন কাটছে গ্রামের দিন? পরীমনি বলেন, ‘আমাকে, রাজ্যকে দেখার জন্য কত মানুষ আসছেন! দোয়া করছেন, ভালোবাসা দিচ্ছেন, আমাদের সঙ্গে ছবি তুলছেন; খুব উপভোগ করছি। এত ভালোবাসা কোথায় পাব?’
দিনের বেলা উঠানজুড়ে দৌড়াদৌড়ি, সন্ধ্যায় সবাই মিলে উঠানে পাটি বিছিয়ে গল্প করে গ্রামে সময় কেটেছে পরীর। পরীর ভাষ্যে, ‘ঢাকাতে তো আকাশভরা তারা দেখা যায় না। এখানে তারাখচিত রাতের স্নিগ্ধ আকাশ কী যে সুন্দর দেখায়! ওই দিন রাতে চাঁদের আলোয় উঠানে পাটিতে বসা রাজ্যের ছায়া দেখছিলাম, অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল। বৃষ্টির রিমঝিম সুরটা এখানে স্পষ্ট বোঝা যায়। তা ছাড়া এখন তো রোজার মাস, ইফতারে গ্রামের পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা’
যে স্কুলে পড়েছেন, স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে সেই ভগীরথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন পরীমনি। ঘুরে ঘুরে স্কুলজীবনের গল্প শুনিয়েছেন রাজকে। স্কুলে চার-পাঁচজনের একটা দল ছিল তাঁদের। সবাই ‘গ্যাং গ্রুপ’ বলে ডাকত। পরীসহ সেই দলে ছিলেন লাইজু, স্বর্ণা, ঊর্মি ও হালিমা। কোনো ছেলে প্রেম নিবেদন তো দূর, তাঁদের দিকে তাকাতেও সাহস পেত না
সিংহখালী গ্রামে জন্ম, এখানেই তাঁর নাড়ি পোঁতা। জন্মস্থানের টান তো থাকবেই। ঢাকাই ছবির এই নায়িকা বলেন, ‘গ্রাম আমার প্রথম প্রেম। এ গ্রামেই আমি জন্মেছি, এখানেই আমার সোনালি সময় কেটেছে। এ গ্রামে আমার মা, নানি ও খালার কবর। এখানে আমি বারবার আসব। শুধু আমার গ্রাম নয়, যেকোনো গ্রামই আমার পছন্দ। গ্রামের শান্ত সকাল, শান্ত বিকেল, রাতের নীরবতা আমি উপভোগ করি’
রাজ্যকে নিয়ে পরীমনি