ছুটির দিনে জয়া দিলেন আনন্দের সংবাদ

‘নকশি কাঁথার জমিন’ চলচ্চিত্রে জয়া আহসান
ছবি : সংগৃহীত

ছুটির দিনের সকালে নিজের ফেসবুক ওয়ালে জয়া আহসান জানালেন, ‘চমৎকার একটা আনন্দের সংবাদ দিচ্ছি আপনাদের! এ আনন্দ যেমন আমাদের সবার, তেমনি আমাদের দেশেরও!’ জয়ার এমন কথা বলার কারণ, বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান কমপিটিশন বিভাগে ৩য় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র ‘নকশি কাঁথার জমিন’। উৎসবের ১৪তম আসরে এই অর্জন হয় আকরাম খান পরিচালিত ছবিটির।

জয়া আহসান বলেন, ‘১৪তম বেঙ্গালুরু ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের এশিয়ান কমপিটিশনে বিখ্যাত সব সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ছিল “নকশি কাঁথার জমিন”।

‘নকশি কাঁথার জমিন’ চলচ্চিত্রে জয়া আহসান ও সেঁওতি

জীবনঘনিষ্ঠ নির্মাতা আকরাম খান নির্মিত সিনেমাটি ইন্টারন্যাশনাল সব সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। ছবির অভিনয়শিল্পী হিসেবে এটা আমার জন্য যেমন আনন্দের, তেমনি আমাদের সবার ও দেশের জন্যও আনন্দের।’ এর আগে সিনেমাটি ইউনেসকো গান্ধী অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছিল!

‘নকশি কাঁথার জমিন’ ছবিটি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি। এই ছবির গল্প রাহেলা ও সালেহা নামের দুই বোনকে নিয়ে, যাদের বিয়ে হয় আবার সবর ও জবর নামের দুই ভাইয়ের সঙ্গে।

‘নকশি কাঁথার জমিন’ চলচ্চিত্রে জয়া আহসান ও রওনক হাসান

তাদের মধ্যে সবর মুক্তিযোদ্ধা আর জবর রাজাকার। রাহেলা আর মুক্তিযোদ্ধা সবরের ছেলে রাহেলিল্লাহ আবার রাজাকার। অন্যদিকে সালেহা আর রাজাকার জবরের ছেলে সাহেবালি মুক্তিযোদ্ধা! ঘরের ভেতরেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। এসবের ভেতর দিয়ে দুই বোনের সম্পর্ক, অসহায়ত্ব আর সংগ্রামের গল্প নিয়েই চলচ্চিত্র ‘নকশি কাঁথার জমিন’। ছবিতে জয়া আহসান এক বিধবা নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর চরিত্রের নাম রাহেলা। হবিগঞ্জ, সৈয়দপুর ও নারায়ণগঞ্জে ছবিটির শুটিং হয়েছে।

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের গল্প ‘বিধবাদের কথা’ অবলম্বনে নির্মাণ করা হয়েছে ‘নকশি কাঁথার জমিন’। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এ ছবির সহপ্রযোজক টিএম ফিল্মস। ছবিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন গল্প তুলে ধরা হয়েছে। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, সেঁওতি, ইরেশ যাকের, রওনক হাসান, দিব্য জ্যোতি ও সৌম্য জ্যোতি।

এদিকে ছবির নির্মাতা আকরাম খান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘হাসান আজিজুল হকের “বিধবাদের কথা” অবলম্বনে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত আমাদের চলচ্চিত্র “নকশি কাঁথার জমিন” বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ান কমপিটিশন বিভাগে ৩য় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কৃত হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ছবির সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।’

আকরাম খান বলেন, ‘এশিয়ার আরও অনেক অসাধারণ ছবি এই কমপিটিশনে ছিল। তার মধ্য থেকে আমার ছবিটি পুরস্কার পেয়েছে, এটা তো নিঃসন্দেহে আনন্দের।

‘নকশি কাঁথার জমিন’ চলচ্চিত্রের পরিচালক আকরাম খান

অনেক দিন ধরে হাসান আজিজুল হকের গল্প ও উপন্যাস নিয়ে কাজ করছি। আমার এর আগের ছবিটিও তাঁর উপন্যাস থেকে। আমার কাছে মনে হয়েছে, দেশের বাইরে এই চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়ে হাসান আজিজুল হকের সাহিত্যের বিশেষ স্বীকৃতিও হলো। বাংলাদেশের গ্রামীণ কৃষিজীবী নারীদের লড়াই–সংগ্রামের স্বীকৃতিও এটা। এমন অর্জন তাই অনেক বেশি আনন্দের ও গৌরবের।’