এফডিসির মূল ফটকের সামনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন সাংবাদিকেরা মানববন্ধন করেন
এফডিসির মূল ফটকের সামনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন সাংবাদিকেরা মানববন্ধন করেন

এফডিসিতে মারামারি: প্রতিবাদে মানববন্ধন, মামলার প্রস্তুতি চলছে

এফডিসিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বিনোদন সংবাদকর্মীদের ওপর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কতিপয় সদস্য ও সাধারণ সদস্যদের হামলা হয় মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। এর সুবিচারের দাবিতে বুধবার বেলা আড়াইটির দিকে এফডিসির মূল ফটকের সামনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন সাংবাদিকেরা মানববন্ধন করেন। সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে যোগ দেন ডিআরইউ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাচসাসসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
এদিন দুপুর পর্যন্ত এফডিসি প্রাঙ্গণ শান্ত ছিল। ভেতরে ও বাইরে অসংখ্য পুলিশের সতর্ক অবস্থান ছিল। দুপুরের পর থেকে মানববন্ধনে যোগ দিতে সংবাদকর্মীরা আসতে থাকেন।

মানববন্ধনে বিনোদন সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্যে প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার বিনোদন সম্পাদক লিমন আহমেদ বলেন, এই হামলায় প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এখনো হাসপাতালে আছেন পাঁচজন। ঘটনার দিন রাতেই শিল্পী সমিতির নেতারা সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে আহতদের তালিকা নিয়ে হাসপাতালে দেখতে যেতে চেয়েছিলেন। আমরা তালিকা দিয়েছি তাঁদের। কিন্তু প্রায় ২০ ঘণ্টা পার হতে চলল, তাঁদের কেউই আহতদের দেখতে যাননি। এতেই বোঝা যায়, এটি তাঁদের পরিকল্পিত হামলা ছিল।’

সংবাদকর্মীদের ওপর শিল্পীদের এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা অবহিত করার জন্য বিনোদন সাংবাদিকের পক্ষ থেকে এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিন বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাকে তাঁরা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না মনে হচ্ছে। কারণ অসংখ্য বিনোদন সাংবাদিককে মেরে আহত করল, উল্টো তাঁরাই আবার এফডিসিতে পুলিশ এনে ভরে রেখেছেন।’

এদিকে হামলার রাতেই হামলার কারণ জানতে শিল্পী সমিতির ৫ জন সিনিয়র নেতা ও বিনোদন সংবাদের মধ্য থেকে ৫ জনসহ মোট ১০ জনের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার ফলাফল দেওয়ার কথা থাকলেও শিল্পী সমিতি থেকে তদন্ত কমিটির বিনোদন সাংবাদিকের ৫ সদস্যের কাউকেই এখনো ডাকা হয়নি। আগামীকাল সকাল ৮টায় এর মেয়াদ শেষ হবে।  
এ ব্যাপারে ওই মানববন্ধনে চ্যানেল ২৪-এর বিনোদন বিভাগের প্রধান নাজমুল আলম বলেন, ‘আমাদের মধ্য থেকে যে পাঁচ প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে, এখনো শিল্পী সমিতি থেকে কাউকেই ডাকা হয়নি। আগামীকাল সকাল ৮টায় এর মেয়াদ শেষ হবে। এত বড় একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটার পরও তাঁদের বিন্দুমাত্র সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা বুঝতে পারছি, তাঁদের যা কথাবার্তা তা লোকদেখানো। কারণ তাঁরাই অপরাধী। তবে তাঁরা যে ফন্দিই আটুক, এখন থেকে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমাদের রক্ত ঝরিয়েছেন তাঁরা। কারা হামলা করেছেন, সবার ফুটেজ গণমাধ্যমে আমাদের সবার কাছে তা সংরক্ষিত আছে।’

এই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘আমরা আগামীকাল সকাল পর্যন্ত দেখব, এর সুরাহা না হলে আগামীকাল শিল্পী সমিতি ঘেরাও কর্মসূচিও আসতে পারে।’  
এদিকে গণমাধ্যমকর্মীরা জানিয়েছেন, যেসব সাংবাদিক কর্মীরা আহত হয়েছেন, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে হুকুমদাতা ও চিহ্নিত হামলাকারীদের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিন প্রায় চারটা পর্যন্ত মানববন্ধন চলে। এরপর কেপিআইভুক্ত এলাকায় সংবাদকর্মীদের ওপর শিল্পীদের এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা অবহিত করার জন্য বিনোদন সাংবাদিকের পক্ষ থেকে এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিন বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপি গ্রহণ করে বিনোদন কর্মীদের উদ্দেশে এমডি বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। আমার আঙিনার মধ্যে এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমি চাই উভয় পক্ষ শান্ত থাকবে। আপনারা সম্মতি দিলে একটা সুন্দর সমাধানের চেষ্টা করতে পারি।’