আমের আচার নিয়ে কেন কানাডায় যাচ্ছেন ববিতা

ছেলে অনীকের সঙ্গে ববিতা। ছবি: সংগৃহীত
ছেলে অনীকের সঙ্গে ববিতা। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশি অভিনেত্রী ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক থাকেন কানাডায়। ছেলেকে দেখতে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় পর সেখানে ছুটে যান অভিনেত্রী। কয়েক মাস কাটিয়ে ফেরেন দেশে। আজ রোববার রাতে এমিরেটস এয়ালাইনসের একটি বিমানে চড়ে আবারও কানাডায় যাওয়ার কথা ববিতার। কয়েক মাস পর যেহেতু যাচ্ছেন, সঙ্গে করে ছেলের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন আমের আচার। যে গাছের আম থেকে এই আচার তৈরি হয়েছে, সেটা নিজের হাতে লাগিয়েছিলেন ববিতা।

তিনি বললেন, ‘অনিক আচার পছন্দ করে। তাই সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছি। বাসায় লাগানো গাছের আমের আচার বানিয়েছিলাম, সেটাই নিয়ে যাচ্ছি। সুন্দর করে বানিয়েছি কিন্তু।’
দেশের চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেত্রী ববিতা ঢাকার গুলশানে থাকেন। ছেলে অনিকের বাসা কানাডার ওয়াটার লু এলাকায়। বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘বছরের প্রথম দিকে কানাডা থেকে ঢাকায় এসেছিলাম। ছেলের কড়া নির্দেশ, বাড়ির বাইরে কোথাও যাওয়া যাবে না। জনসমাগম হয়, এমন কোথাও যেন না যাই। ছেলের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। কিছুদিন ধরে বলছিল, “আম্মু আসো। আম্মু আসো।” আমিও ভাবলাম, এখন যেহেতু কাজকর্ম গুছিয়ে নিয়েছি, কয়েক মাস ঘুরে আসি।’

ফরিদা আক্তার ববিতা। ছবি প্রথম আলো

শুধু কি আমের আচার নিয়ে যাচ্ছেন, এমন প্রশ্নে ববিতা বললেন, ‘অনেক ভালোবাসা নিয়ে যাচ্ছি। মায়ের ভালোবাসা। কত দিন ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আদর করি না। ছেলেকে বলেছি, এয়ারপোর্টে দেখা হলেই তোমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করব। অনেকক্ষণ জড়িয়ে রাখব। আগে তো অনেক খাবারটাবার নিয়ে যেতাম। এখন আর সেসব নিই না। সে-ও চায় না। তার বক্তব্য, আমি যাওয়ার পরই মা-ছেলে একসঙ্গে মজার সব রান্না করব আর খাব। রান্না করতে মন না চাইলে বাইরে গিয়ে কোথাও মা-ছেলে খেয়ে নেব। কানাডায় গেলে টুকটাক বাজার করি। বাংলাদেশ থেকে কাপড়চোপড় নিয়ে যাই, সেটাও ও পছন্দ করে না। তার কথা, আমি সঙ্গে থাকব শুধু। দরকার হলে ঘুরে ঘুরে কিনব।’

ববিতা

কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন ববিতা। এরপর আবার কানাডা হয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন চলতি বছরের নভেম্বরে। তিনি বলেন, ‘আমার দুই ভাই যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। তাদের ছেলেমেয়েরাও আছে। কানাডায় কয়েকটা দিন থাকার পর তাই যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে যাব। কিছুদিন ঘুরেফিরে আবার ছেলের কাছে যাব। মা-ছেলের ঘোরাঘুরি শেষ হলে তবেই ঢাকায় ফিরব।’ ববিতা আরও বলেন, ‘অল্প বয়সে চলচ্চিত্রে এসেছি, অনেক শখ পূরণ করতে পারিনি। এখন হাতে সময় আছে, যে শখগুলো পূরণ করতে পারিনি, পূরণের চেষ্টা করি।’

কানাডায় ছেলে অনিকের সঙ্গে মা ববিতা

দীর্ঘ অভিনয়জীবনে ববিতা ২৭৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। দেশের প্রখ্যাত সব নির্মাতার পাশাপাশি কাজ করেছেন দেশের বাইরের বিখ্যাত নির্মাতার ছবিতেও। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’-এর জন্য ববিতা দেশে ও দেশের বাইরে প্রশংসা কুড়ান। সন্তানকে ঠিকভাবে গড়ে তুলতে একটা সময় ছবিতে কাজ কমিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘তা না হলে পৌনে ৩০০ ছবির থেকে তা বেড়ে অনেক বেশি হতো। আমি নারী। একাই চলতে হতো। সমানতালে দুই সংসার সামলাতে হয়েছে। অনিকের কথা ভেবে সারাটা জীবন একাই পার করেছি। ওকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলাই ছিল আমার লক্ষ্য।’