ফারুকীর পুরোনো স্ট্যাটাস, ছবিই যদি প্রমাণ হয় তাহলে...

ফারুকী নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন নিপুণ। ছবি: কোলাজ
ফারুকী নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন নিপুণ। ছবি: কোলাজ

বর্তমান সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ও পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে আওয়ামী দোসর বলা হাস্যকর বললেন আরেক নির্মাতা আশফাক নিপুন। তিনি এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘দুঃখজনক না বলে হাস্যকর বললাম কারণেই যে খোদ কট্টর আওয়ামী শিল্পী সমাজ থেকে শুরু করে ক্যাডার বাহিনী পর্যন্ত তাঁকে নিজেদের দলে দেখতে আগেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেননি, এখনো করবেন না।’    

নিপুন আরও লিখেছেন, ‘ফারুকীর পুরোনো কিছু স্ট্যাটাস, ছবিই যদি অকাট্য প্রমাণ হয় তাহলে তাঁর বিপরীতে গত ১৫ বছরে, বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে নিরন্তর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে সমালোচনা করে উনার ফেসবুক পোস্টও আমলে নেওয়া হোক? যেগুলো নিয়ে আওয়ামী শিল্পী সমাজ থেকে শুরু করে খোদ পলাতক প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত চূড়ান্ত বিরক্ত ছিলেন? অথবা আওয়ামী সরকারের আমলে দুইবার উনার সিনেমা আটকে দেওয়া আমলে নেওয়া হোক?’

নিপুনের মতে, কয়েকটা ফেসবুক পোস্ট আর দু–একটি ছবি যদি কোনো দলের দোসর হওয়া প্রমাণ করে, তাহলে গত ১৬ বছরে যেসব শিল্পী নিজেদের সরকারদলীয় বা প্রধানমন্ত্রীর কাছের লোক প্রমাণে ব্যস্ত থেকেছেন, প্লট, পদ, ব্যবসা–বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়েছেন, তাঁদের জন্য সমাবেদনা।

নিপুন লিখেছেন, ‘ফারুকীর সংস্কৃতি উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে প্রচুর সমালোচনা। উনি সংস্কৃতির লোক, তাই উনাকে এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বানানো। উনাকে তো অর্থ, বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, আইন বা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা করা হয়নি। উনি দেশে–বিদেশে সংস্কৃতি অঙ্গনের বিখ্যাত মানুষ, জুলাই আন্দোলনেরও বহুকাল আগে থেকেই ফ্যাসিস্ট সরকারের সমালোচনায় সরব, স্পিরিটে তরুণ, তাই হয়তো উনার এই নিয়োগ। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই আন্দোলনের স্পিরিট, ডকুমেন্টস ধারণ করার মতো কাজ উনি যদি করে দেখাতে না পারেন, তাহলে আমিও উনার সমালোচনা করব। ১০০ বার করব।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

‘কিন্তু কাজটা তো করে দেখানোর সুযোগ দিতে হবে আগে? সেটাও দেওয়া যাবে না কেন? শত শত ফ্যাসিস্ট সমালোচনার বাইরে উনার কয়েকটা ফেসবুক পোস্ট বা পলক সাহেবের সাথে একটা ছবির কারণে?’—লিখেছেন নিপুন।

নিপুন জানান, জুলাই থেকে আগস্ট; স্বৈরাচারী সরকার পতনে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে অনেকেই কোনো না কোনো সময়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কেউ ইচ্ছাকৃত, কেউ অনিচ্ছাকৃত, কেউ কৌশলে আর কেউ বাধ্য হয়ে। ‘কিন্তু আন্দোলনের স্পিরিটে ফ্যাসিস্ট তাড়াতে সবাই এক হয়ে গিয়েছিল। এই ঐক্যই ছিল আমাদের শক্তি। এখন এই ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি কেন? কার বা কাদের সুবিধার জন্য?’ লিখেছেন নিপুন

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উপদেষ্টা হওয়ার পর থেকেই কেউ কেউ সমালোচনা শুরু করেছেন। সেই প্রসঙ্গে নিপুন লিখেছেন, ‘ফারুকীর কাজের সমালোচনা ১০০ বার করেন। সেটা উনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব উনি পালন করতে না পারলে করেন। যৌক্তিকভাবে করেন। কিন্তু উনি যা না, যা উনি বলেননি, সেটার পেছনে অযৌক্তিক সমালোচনা করে শক্তি নষ্ট কইরেন না। আমি বিশ্বাস করি, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই মহান আন্দোলনকে ডকুমেন্টেড করার জন্য সেরা চেষ্টাটা ঢেলে দিবেন। সেই সক্ষমতা তাঁর রয়েছে। তাকিয়ে আছি তিনি আমাদের কি উপহার দিতে পারেন সেদিকে, না পারলে তখন তাঁর সমালোচন কইরেন।’