আজ বাবা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে একাধিক শিল্পীর সঙ্গে কথা হয়, যাঁদের বাবাও তারকা। শিল্পী বাবার কাছ থেকে কীভাবে অনুপ্রেরণা পান সন্তানেরা? চলচ্চিত্র ও সংগীতজগতের দুজন শিল্পী বললেন বাবার কাছ থেকে পাওয়া সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও শিক্ষা কীভাবে আলোকিত করেছে তাঁদের।
ছোটবেলা থেকে অভিনেতা সম্রাট দেখতেন তাঁর কিংবদন্তি বাবা অভিনেতা রাজ্জাক অভিনয় নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তাঁর এই ব্যস্ত জীবনকেই অনুসরণ করতেন সম্রাট এবং তাঁর দুই ভাই। বাবার লাইফস্টাইল দেখে তাঁরা শিখতেন। রাজ্জাক অভিনয়ে ব্যস্ত থাকলেও তিনি চাইতেন তাঁর ছেলেরা যেন পড়াশোনায় অবহেলা না করে। এ বিষয়েই শুধু ছেলেদের চাপ দিতেন।
ছেলেদের পড়াশোনা না করা, স্কুল ফাঁকি দেওয়া, ফলাফল খারাপ করা—এসব একদমই পছন্দ করতেন না রাজ্জাক। চলচ্চিত্র ও নাটকের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁদের। রাজ্জাক যেহেতু অভিনয়ের মানুষ, সেহেতু তিনিও ছেলেদের আগ্রহ দেখে তাঁদের উৎসাহিত করতেন এবং নিজেই ছেলেদের অভিনয় শেখাতেন। প্রথম আলোকে দেওয়া পুরোনো এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান অভিনেতা সম্রাট।
সম্রাট আরও জানান, বাসায় তাঁর বাবার একটা সম্পাদনা কক্ষ ছিল। পড়ালেখা শেষে রাজ্জাক তাদের সেখানকার কাজগুলো দেখাতেন, শেখাতেন। প্রোডাকশনের কাজ করাতেন, সহকারী পরিচালকের সঙ্গে রাখতেন। আর তাঁর বাবার কারণেই তাঁরা সাংস্কৃতিক দিক থেকে বন্ধু বা পরিচিতদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন।
সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীরের বাবা দেশের আরেক বরেণ্য অভিনেতা আলমগীর। তিনি মেয়ের পড়াশোনার ব্যাপারে কঠোর ছিলেন। তবে গানের ব্যাপারে খুব উৎসাহ দিতেন আঁখিকে। আলমগীর আঁখিকে বলতেন, ‘গান শেখো নিজের জন্য।’ অভিনয়ের মানুষ হলেও আলমগীরের ইচ্ছা ছিল মেয়ে আইনজীবী হবে। কিন্তু তাঁর এই ইচ্ছা আঁখি পূরণ করতে না পারলেও গান গেয়ে হয়েছেন জনপ্রিয়। তিনি আগের এক সাক্ষাৎকারে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আব্বু বলতেন, ভালো মানুষ হলে দেখবে সবই শিখতে পারবে।’
আঁখি বলেন, ‘আমি যা কিছু শিখেছি, তা বাবাকে দেখে শিখেছি। আশপাশের কে তাঁর চেয়ে বেশি কাজ করছে, সেটা নিয়ে আব্বু মোটেও ভাবতেন না। নিজের কাজ করে যেতেন। এটা আমি পেয়েছি তাঁর কাছ থেকে। শিখেছি, পছন্দ না হলে পেশাদারি বজায় রেখে কীভাবে কোনো কাজের প্রস্তাব এড়িয়ে যেতে হয়। বাবা সব সময় বলেন, জীবনের সবকিছু নিজেকেই অর্জন করতে হবে। যেটুকু নিজে কষ্ট করে করবে, শুধু সেটাই তোমার।’