করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বরেণ্য চলচ্চিত্র অভিনেতা সোহেল রানার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে কেবিনে এনে এখন তাঁর চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। আজ শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোকে এমনটাই জানান অভিনয়শিল্পীর স্ত্রী জিনাত বেগম।
জিনাত বেগম জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে কেবিনে আনা হয়। সারা দিন ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু আজ সকাল থেকে আবার অক্সিজেন উঠানামা করছে। এটা নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা হচ্ছে। কিছু ভালো লাগছে না। কথায় কথায় জিনাত বেগম বলেন, ‘খাওয়াদাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও অরুচি আছে। দুর্বলতাও আছে। সবার কাছে তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া চাইছি।’
এ দিকে তাঁর ছেলে মাশরুর পারভেজ ফেসবুকে বলেন, ‘আব্বুর শারীরিক অবস্থার উন্নতি দেখে চিকিৎসকেরা তাঁকে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করেছেন। খুব চিন্তায় ছিলাম, এখন কিছুটা স্বস্তি লাগছে।’
হাসপাতালে ভর্তির কয়েক দিন আগে থেকে জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন সোহেল রানা। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করান। জানতে পারেন, তিনি করোনা পজিটিভ। গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে তাঁকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ ছবির প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে প্রবেশ করেন মাসুদ পারভেজ।
এটি পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম। ১৯৭৩ সালে সোহেল রানা নাম ধারণ করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত কাল্পনিক চরিত্র মাসুদ রানার একটি গল্প অবলম্বনে ‘মাসুদ রানা’ ছবির নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। একই ছবির মাধ্যমে তিনি মাসুদ পারভেজ নামে পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি বহু কালজয়ী সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তিনবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০১৯ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান সোহেল রানা। ১৯৬১ সালে কলেজে পড়তেন সোহেল রানা। তখন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঝাঁপিয়ে পড়েন পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে। প্রযোজক হিসেবে সোহেল রানা ওরফে মাসুদ পারভেজ নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ছবি ‘ওরা ১১ জন’।