‘প্রয়াত অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর মাধ্যমে “বিক্ষোভ” সিনেমায় থাকাটা কষ্টকর। আমি নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম,’ বলছিলেন ছোট পর্দার অভিনেতা শাহেদ আলী। তিনি নিয়মিত সিনেমার অভিনেতা নন। এমনকি ‘বিক্ষোভ’ সিনেমায় অভিনয়ও করেননি। তবে সিনেমাটিতে সাদেক বাচ্চুর মাধ্যমে থাকতে পারাটা গৌরব এবং মর্যাদার। সাদেক বাচ্চুর প্রতি এভাবে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে কৃতজ্ঞ এই অভিনেতা।
গত শুক্রবার সারা দেশে মুক্তি পেয়েছে ‘বিক্ষোভ’ সিনেমা। নায়কের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রয়াত অভিনেতা সাদেক বাচ্চু। অকালপ্রয়াণে এই অভিনেতা ‘বিক্ষোভ’ সিনেমার ডাবিং করে যেতে পারেননি। তাঁর অংশের ডাবিং করেছেন শাহেদ আলী। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে বাবার মাধ্যমে সাদেক বাচ্চুর সঙ্গে পরিচয়। আমাদের পারিবারিকভাবে যোগাযোগ ছিল। দীর্ঘদিন আমাদের নিয়মিত কথা হতো। তিনি আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। তাঁর কণ্ঠে ভয়েস দেওয়াটা আমার জন্য অনেক কঠিন কাজ ছিল। শুরু থেকেই আমি নার্ভাস ছিলাম। বারবার আমি ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের জীবন, সম্পর্কগুলো কত কম সময়ের। কারণ, তিনি মারা যাওয়ার ঠিক কিছুদিন আগেই আমাদের কথা হয়েছিল। সব সময় তিনি আমার প্রশংসা করতেন, কাজের অনুপ্রেরণা দিতেন। তিনি আমার বাবার সঙ্গে তরুণ বয়সে মঞ্চে কাজ করেছেন। প্রায়ই বলতেন, অভিনয়ের অনেক কিছুই তিনি আমার আব্বা শওকত আলীর কাছ থেকে শিখেছেন।’
শৈশবে সাদিক বাচ্চুর বিয়ের অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছেন শাহেদ আলী। তখন বাবার সঙ্গে শুটিংয়ে যেতেন শাহেদ। সেই থেকে সন্তানের মতো স্নেহ পেতেন সাদেক বাচ্চুর কাছ থেকে। পরে বাবা মারা যাওয়ার পর তাঁদের মধ্য দেখা কম হতো উল্লেখ করে শাহেদ বলেন, ‘তখন আমি তরুণ। থিয়েটার করছি, পরে টিভি নাটক। অন্যদিকে সাদেক বাচ্চু চাচা সিনেমায় অনেক জনপ্রিয় অভিনেতা। বলা যায় আলাদা দুটি রাস্তা। হঠাৎ দীর্ঘদিন পর “পাষাণ” সিনেমার শুটিংয়ে আমাদের দেখা হয়। আমাকে দেখে তিনি এগিয়ে এলেন। আমার অভিনয়ের প্রশংসা করলেন। বড় হওয়ার পর সেটাই আমাদের প্রথম দেখা। তখনো তিনি আমাকে চেনেননি। সেদিন আমি পরিচয় দিলাম। আমার বাবার কথা বললাম। তখন তিনি আবেগে আমাকে বললেন, “তুমি সুজন!” চাচা আমাকে সুজন নামে চিনতেন। শুটিংয়ের সবাইকে ডেকে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সেদিন শুটিংয়ে সবার সামনেই তিনি বুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলেন। বাবার সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল। ডাবিংয়ের পুরো মুহূর্তে সেই সব কথাই মনে পড়ছিল।’
‘বিক্ষোভ’ সিনেমায় সাদেক বাচ্চু চিত্রনায়ক শান্ত খানের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। গতকাল থেকে দেশের ৩৫টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। বর্তমানে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। সেসব সামাজিক সমস্যা নিয়েই সিনেমাটির গল্প। এখানে কলকাতার অভিনেত্রী শ্রাবন্তীকে দেখা যাবে শিক্ষকের ভূমিকায়। ছাত্র শান্ত খান। ২০১৯ সালে সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়। নানা কারণে টানা শুটিং সম্ভব হয়নি। পরে করোনার মধ্যে ২০২১ সালে শুটিং শেষ হয়। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন শামীম আহমেদ।