কলকাতায় ফেরদৌস, শাহরুখ খান, ঋতুপর্ণ ঘোষ ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
কলকাতায় ফেরদৌস, শাহরুখ খান, ঋতুপর্ণ ঘোষ ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত

সেদিন শাহরুখের সঙ্গে যে কথা হয়েছিল ফেরদৌসের

ভারত ও বাংলাদেশ—দুই দেশের সিনেমায় অভিনয়ের সুবাদে বলিউড কিং শাহরুখ খানের সঙ্গে দেখা হয়েছিল বাংলাদেশের অভিনেতা ফেরদৌসের। প্রথম দেখাতেই ফেরদৌসকে মুম্বাইতে গিয়ে অভিনয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শাহরুখ। সম্প্রতি প্রথম আলোর কাছে সেদিনের স্মৃতিচারণা করলেন।
সম্প্রতি ফেসবুকে ফেরদৌস, শাহরুখ খান, ঋতুপর্ণ ঘোষ ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর একটি ছবি পাওয়া যায়। ছবির গল্প জানতে ফেরদৌসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই তথ্য দেন। তবে এই ছবিটি দেখে বিস্মিত হন ফেরদৌস। তিনি জানান, ছবিটি ২০ বছর আগে কলকাতার পার্ক হোটেলে তোলা। ‘আনন্দলোক’ আয়োজিত একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে শাহরুখ খানের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এরপর শাহরুখ খানের আমন্ত্রণে তাঁরা নৈশভোজেও অংশ নেন।

চিত্রনায়ক ফেরদৌস

অভিনয়জীবনের শুরুতে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবি দিয়ে আলোচনায় আসেন ফেরদৌস। বাসু চ্যাটার্জির এই ছবির পর কাছাকাছি সময়ে বলিউডেও অভিনয়ের সুযোগ হয়। ‘মিট্টি’ ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে শাহরুখ খানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা হয় বাংলাদেশের ফেরদৌসের। সেই দিনের ঘটনার কথা মনে করে ফেরদৌস বলেন, ‘ঘটনাটা সম্ভবত ২০০১ সালের দিকে। “হঠাৎ বৃষ্টি” সিনেমায় অভিনয়ের জন্য আনন্দলোক থেকে সেরা নবাগত নায়কের পুরস্কার পেয়েছিলাম। সেই অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন শাহরুখ খান। পুরস্কার প্রদান মঞ্চেই তাঁর সঙ্গে কথা হয়। মিঠুন চক্রবর্তী পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। অনেক মজা করেছিলাম।’

শাহরুখ খান।

ফেরদৌস জানালেন, ২০ বছর আগে কলকাতায় তখন ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ নামে একটি সিনেমা মুক্তি পায়। মুক্তির আগে আনন্দলোক ম্যাগাজিনে তাঁকে নিয়ে একটি ফিচার প্রকাশিত হয়। ওই সাময়িকীর একই সংখ্যার প্রচ্ছদে ছিলেন বলিউডের শাহরুখ খান। ফেরদৌস বললেন, ‘শাহরুখ খানের সঙ্গে “আনন্দলোক” ম্যাগাজিনের সম্পাদক ঋতুপর্ণ ঘোষের আলাপ হয়। ঋতুর কাছেই শুনেছি, ম্যাগাজিন দেখে শাহরুখ জিজ্ঞেস করেছিলেন, এই ছেলেটি (আমাকে দেখিয়ে) কে? ঋতুপর্ণ উত্তর দিলেন, “ও ফেরদৌস। বাংলাদেশি অ্যাক্টর। এখানে (কলকাতায়) কিছু কাজ করছে। বাসুদার ছবিতেও অভিনয় করেছে। সে খুব ভালো করছে।” শাহরুখ তখন বলেছিলেন, “আমি ওর সঙ্গে দেখা করব।” ঋতুপর্ণ বলেছিলেন, “আজকে তুমি যে অনুষ্ঠানে যাচ্ছ, ওই অনুষ্ঠানে ফেরদৌস অ্যাওয়ার্ড পাবে।” অ্যাওয়ার্ড নিতে গেলাম। মঞ্চে দেখা হলো তাঁর সঙ্গে। তখন আবার মিঠুন চক্রবর্তী পরিচয় করিয়ে দিলেন। অল্প সময়ে আমরা খুব মজা করলাম। কারণ, মিঠুনদার সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। আমারই একটা ছবিতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। পরে ঋতুপর্ণের মাধ্যমে শাহরুখ আমাদের ডিনারের দাওয়াত দেন।’

চিত্রনায়ক ফেরদৌস

কলকাতায় পার্ক হোটেলে সেদিনের নৈশভোজে ফেরদৌস, ঋতুপর্ণ ঘোষ ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত অংশ নেন। ফেরদৌস বললেন, ‘বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে কথা হয়। সালমান শাহকে নিয়েও আলাপ হয়। সালমান শাহর মৃত্যুর খবরে খুব দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন শাহরুখ। আমাকে বলেছিলেন, দিল্লিতে তাঁদের দেখা হয়েছিল। তাঁদের একসঙ্গে অভিনয় করার কথাও ছিল। কথায় কথায় আমাকে বলেছিলেন, মুম্বাই গিয়ে কাজ করতে। বলেছিলাম, মিট্টি নামের একটা ছবিতে আমি তো অলরেডি অভিনয় করছি। পরের বছর টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি অনুষ্ঠানে আমাদের দেখা হয়। কলকাতা নাইট রাইডার্সের একটা ইভেন্টেও আমাদের দেখা হয়। দুঃখজনক হচ্ছে, ঢাকায় যখন এসেছিলেন তিনি, আমাদের দেখা হয়নি। কারণ, তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম।’