দীপংকর দীপন, রায়হান রাফি, সৈকত নাসির
দীপংকর দীপন, রায়হান রাফি, সৈকত নাসির

সিনেমার দুঃসময়ে সক্রিয় তরুণ নির্মাতারা

একসময়ের আলোচিত পরিচালকদের প্রায় কেউই এখন ছবি বানান না। সেই তালিকায় আছেন এ জি মিন্টু, দেওয়ান নজরুল, সোহানুর রহমান সোহান, কাজী হায়াত, এফ আই মানিক, মনতাজুর রহমান আকবর। তাঁদের দু–একজন বছরে একটি বা দুটি ছবি বানান। জ্যেষ্ঠ এই পরিচালকদের পরের প্রজন্ম জাকির হোসেন রাজু, সাহাদত হোসেন লিটন, বদিউল আলম খোকন, শাফিউদ্দিন সাফি, শাহিন সুমন, ওয়াজেদ আলী সুমনদেরও কাজে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না এই করোনাকালে।

চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, করোনাকালে বিনোদন অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিনেমা। এই সময়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও মুক্তি দুই–ই কমেছে। এই দুঃসময়ে আশার আলো দেখাচ্ছেন কয়েকজন তরুণ নির্মাতা, যাঁরা বিএফডিসিকেন্দ্রিক বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা নির্মাণে সক্রিয়। এই তালিকায় আছেন দীপংকর দীপন, রায়হান রাফি, সৈকত নাসির, অপূর্ব রানা, শামীম আহমেদ রনি, অনন্য মামুন, সাইফ চন্দন, বন্ধন বিশ্বাসের মতো পরিচালকেরা। এঁদের অনেকেই এই করোনাকালেও নতুন নতুন সিনেমা নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন। নতুন কাজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কেউ কেউ। এই সময়ে এসে অল্পসংখ্যাক ছবি তৈরি হচ্ছে, যার বেশির ভাগই নির্মাণ করছেন এই তরুণেরা।

দুঃসময়ে আশার আলো দেখাচ্ছেন কয়েকজন তরুণ নির্মাতা, যাঁরা বিএফডিসিকেন্দ্রিক বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা নির্মাণে সক্রিয়। এই তালিকায় আছেন দীপংকর দীপন, রায়হান রাফি, সৈকত নাসির, অপূর্ব রানা, শামীম আহমেদ রনি, অনন্য মামুন, সাইফ চন্দন, বন্ধন বিশ্বাসের মতো পরিচালকেরা।
অপারেশন সুন্দরবন ছবির মহড়ায় নুসরাত ফারিয়া, দীপঙ্কর দীপন ও সিয়াম আহমেদ

দীপংকর দীপন শুটিং শেষ করলেন অপারেশন সুন্দরবন ছবির। ঢাকা ২০৪০ ছবির বাকি অংশের শুটিং শুরু হবে শিগগিরই। চলতি মাসের শেষ ও মার্চের মধ্যভাগে আরও দুটি নতুন ছবির কাজ শুরু করবেন তিনি। এ ব্যাপারে দীপন বলেন, ‘করোনা না থাকলে হয়তো আরও বেশি বেশি কাজ করতে পারতাম। এই বৈরী পরিবেশে চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি ভেবে ভালোই লাগছে।’

দামাল নামে একটি নতুন ছবির শুটিং করছেন রায়হান রাফি। এ ছাড়া আরও দুটি বড় বাজেটের নতুন ছবির কাজ মার্চ থেকে শুরু করার কথা রয়েছে তাঁর। এই নির্মাতা বলেন, ‘করোনার এই দুঃসময়ে বিনোদনের অন্যান্য মাধ্যমের কাজ ভালোই হচ্ছে। কিন্তু সিনেমার কাজ কম। আমরা কাজ করতে পারছি, সেটা সম্ভব হয়েছে আমাদের প্রতি প্রযোজকের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি হয়েছে বলেই। এটাও সিনেমার জন্য এক রকম আশীর্বাদ।’

পরিচালক সৈকত নাসিরের হাতে তিনটি নতুন ছবির কাজ। গত ডিসেম্বর মাসে বর্ডার নামে একটি ছবির শুটিং শেষ করেছেন তিনি। আগেই শুরু করেছিলেন এ জার্নি উইথ ইউ, যার কিছু শুটিং এখনো বাকি। চলতি মাসের শেষে মাসুদ রানা, মার্চ মাসে ক্যাশ নামে নতুন দুটি ছবির শুটিং শুরু করবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজগুলো শুধু সিনেমা হলের জন্য নয়, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেরও উপযোগী।’

এই দুঃসময়েও সিনেমা নিয়ে তরুণদের সরব থাকাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মতিন রহমান। তিনি বলেন, ‘এই তরুণেরা প্রযোজক পাচ্ছেন। কিছু প্রযোজক এই ঝুঁকির মধ্যেও তাঁদের কাজে বিনিয়োগ করছেন। এই তরুণদের সাধুবাদ জানাই।’ জানা গেছে, এই প্রজন্মের ছোট পর্দার অনেক নির্মাতা আছেন, যাঁরা বেশ ভালো কাজ করছেন। তাঁদের অনেকেই বাণিজ্যিক ছবি নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন বছরে তাঁদের অনেকে বাণিজ্যিক ছবির কাজ শুরু করবেন।