বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবগঠিত কমিটির নির্ধারিত প্রথম মিটিংয়ে সভাপতি ছাড়া কেউই অংশ নিলেন না ইলিয়াস কাঞ্চন–নিপুণ প্যানেলের। গুঞ্জন উঠেছে নিপুণের প্যানেলের কেউ কেউ পদত্যাগ করতে পারেন। যদিও সে প্যানেল থেকে নির্বাচিত অভিনেতা ইমন বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে এটি নিয়ে এখনো কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। এটি গুজব।’
প্রায় ১০ দিন আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবগঠিত কমিটির প্রথম মিটিংয়ের জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়। কমিটির সবার কাছে সেই চিঠি পাঠানোও হয়। মিটিংয়ের নির্ধারিত দিন ছিল গতকাল শুক্রবার। এদিন বিকেল সাড়ে চারটায় জায়েদ খানসহ তাঁর প্যানেলের পাঁচজনকে শপথ পড়ান সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। এরপরই নির্ধারিত মিটিংয়ে বসেন তাঁরা।
মিটিংয়ে কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ছাড়া বাকি নয়জনই উপস্থিত হননি। ২১ সদস্যের কমিটির ইলিয়াস কাঞ্চনসহ জায়েদ প্যানেলের ৬ জন মিলে মোট ৭ জন উপস্থিত ছিলেন ওই মিটিংয়ে। মিশা-জায়েদ প্যানেলের কার্যকরী পরিষদের সদস্য মৌসুমী দেশের বাইরে ও রোজিনা ঢাকার বাইরে থাকায় আসতে পারেননি তাঁরা।
প্রথম মিটিংয়েই মাত্র সাতজনের উপস্থিতি। বাকিরা এলেন না কেন, জানতে চাইলে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সবাইকেই মিটিং আসতে হবে, এমনটি নয়। আজ আসেননি, পরের মিটিংয়ে আসবেন। তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘শিল্পী সমিতি কেন, অন্য যেকোনো জায়গার মিটিংয়ে কি শতভাগ সদস্য উপস্থিত থাকেন? এটা কোনো বিষয় নয়। সাতজনে কোরাম পূর্ণ হয়েছে, মিটিং করেছি।’
এদিকে প্রথম মিটিংয়ে কী কী বিষয়ে আলোচনা হলো, সে ব্যাপারেও বলতে চাননি সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। তবে কমিটির কার্যকরী পরিষদের সদস্য অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস জানান, কীভাবে ইন্ডাস্ট্রিকে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, নিজেদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি দূর করা যায়, যেসব নতুন ছেলেমেয়ে এখানে কাজ করতে আসছেন, তাঁদের দক্ষতা বাড়ানোসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সমিতির কাজের ব্যাপারে প্রথমে সবার কাছ থেকে কাঞ্চন ভাই শুনতে চেয়েছেন। আমরা এসব বিষয়েই কথা বলেছি। শিল্পীরা তো একা এসব কাজ পারবেন না। ইন্ডাস্ট্রির সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। তা ছাড়া আরেকটি বিষয়ের কথা কাঞ্চন ভাই তুলেছিলেন। প্রতিবারই ভোটের সময় কিছু মানুষ আমাদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি তৈরি করে। সেই দিকেও নজর রাখতে হবে।’
যাঁরা আসেননি, তাঁদের ব্যাপারে কোনো কথা হয়েছে কি না মিটিংয়ে, এ ব্যাপারে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, হয়েছে। যাঁরা আসেননি, তাঁদের সঙ্গে কাঞ্চন ভাইসহ আমরা সবাই যোগযোগ করব। ভুল–বোঝাবুঝি ছেড়ে একসঙ্গে থেকে কাজ করার জন্য তাঁদের বোঝাব। সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রয়োজনে সবার বাসায় বাসায় যাব, বোঝাব আমরা।’
মিটিংয়ে উপস্থিত না থাকার ব্যাপারে নিপুণ প্যানেলের ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ইমন বলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে যাইনি। একজনের দাম্ভিক আচরণে বিরক্ত লাগে। ভালো লাগে না।’
চলচ্চিত্রপাড়ায় ছড়িয়েছে, রোববার আপিলের রায় নিপুণের পক্ষে না এলে নিপুণ প্যানেলের নয়জন পদত্যাগ করবেন। জানেন কিছু? ‘এ ব্যাপারে আমি জানি না। আমাদের মধ্যে এটি নিয়ে এখনো কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। এটি গুজবও হতে পারে,’ বলেন ইমন।গতকাল মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, সহসভাপতি ডিপজল, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী, কার্যকরী পরিষদের সদস্য সুচরিতা, অঞ্জনা ও অরুণা বিশ্বাস।