বছরের শুরুর দিকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বনভোজনে শিল্পীদের মধ্যে প্রথম দ্বন্দ্বের আভাস পাওয়া যায়। প্রথম আলোয় ৩১ জানুয়ারি এ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। চার মাস পর সেই দ্বন্দ্ব আরও দৃশ্যমান হয়েছে বলে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করছেন। সদস্যদের কারও মতে, শুক্রবার শিল্পী সমিতি ইফতার অনুষ্ঠানেও এর প্রভাব পড়েছে। সাধারণ সম্পাদকের দাবি, পারিবারিক সমস্যা ও ঢাকার রাস্তার জ্যামের কারণে অনেকেই আসতে পারেননি। তবে বেশির ভাগ শিল্পীই ছিলেন।
২১ জন সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটি। সদস্যসংখ্যা সাড়ে চার শর মতো। সমিতির ইফতার অনুষ্ঠানে শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন নায়ক ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, সোহেল রানা, মাসুম পারভেজ রুবেল, আমিন খান, বাপ্পারাজ, সম্রাট, সাইমন সাদিক, অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহি, পপি, মিম, রেসি, আঁচল প্রমুখ। সমিতির সদস্যদের মধ্যে ছিলেন না রোজিনা, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, ইমন। অন্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন না সুচন্দা, কবরী, আলমগীর, চম্পা, ইলিয়াস কাঞ্চন, শাকিব খান, মৌসুমী, ওমর সানী, অমিত হাসান, আরিফিন শুভ, বুবলী, সিয়াম, পূজা, পরীমনি, নিরব, রোশান, ববি প্রমুখ।
বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ফেরদৌস বলেন, ‘শিল্পীদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব স্পষ্ট। সমিতির নাম ভাঙিয়ে কে কী করছেন, সবই পরিষ্কার। সমিতির অনুষ্ঠানে শিল্পীর চেয়ে অশিল্পীর সংখ্যাই বেশি। কারা আমন্ত্রিত, কীভাবে আমন্ত্রিত—কিছুই জানি না। পিকনিক, ইফতারসহ যেসব আয়োজন হয়, কোনো হিসাব দেওয়া হয় না। শিল্পীদের সেবাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। প্রত্যেক শিল্পীকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া উচিত। এসব হচ্ছে না বলেই আমার চরম আপত্তি।’
বিপক্ষ প্যানেলে যাঁরা ছিলেন, অনেকের সঙ্গেই কিছু ব্যাপার ঘটেছে, যা দৃষ্টিকটু।
বিষয়টি মানতে নারাজ সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে অসম্মান করিনি। কমিটিতে কারও সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব নেই। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সভা করে ইফতার অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ঠিক করেছি। আমি নিজে অনেককে ফোন করেছি। মোট সদস্যের সাত–আটজন থাকলেই কোরাম পূর্ণ হয়। কোরামের সিদ্ধান্ত পরে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়।’
চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা বলেন, ‘শিল্পীদের মধ্যে ইগো সমস্যাটা অনেক বেশি। আন্তরিকতার অভাব প্রকট। আছিই মাত্র কয়েকজন, সেখানেও গ্রুপ!’
কার্যনির্বাহী সদস্য চিত্রনায়িকা নিপুণ বলেন, ‘শিল্পী সমিতির দুয়েকজন সদস্য সমিতির নাম ভাঙিয়ে যা করছে, তা নিয়ে বলার মতো ভাষা নেই। আমি এসব থেকে দূরে সরে আছি।’
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘অনেক সমস্যার কথা শুনি। সরাসরি আমাকে কিছু বলে না। সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, আমাকে সামনাসামনি বলুক। সবাই মিলে সমাধান করব।’
কবরী এসব নিয়ে অনেক বিরক্ত। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রে এখন অনেকের কোনো কাজ নেই। তাঁদের কেউ সমিতি করে আলোচনায় থাকার চেষ্টা করেন। শিল্পী সমিতির মধ্যে অনেকে যাঁরা আছেন, তাঁরাই–বা কোন মাপকাঠিতে যোগ্য—এই প্রশ্ন রাখলাম।’