দেখতে দেখতে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়েখ্যাত অভিনয়শিল্পী কবরীর মৃত্যুর এক বছর হয়ে গেল। গত বছরের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি। করোনা তাঁকে শেষ রক্ষা দেয়নি। মৃত্যুর আগে ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামের একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করছিলেন। ওই চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয়ও করছিলেন। কিন্তু পুরো কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। কবরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা কথা বলেছি, তাঁর অঙ্গনের কয়েকজন সহকর্মী ববিতার সঙ্গে। জানালেন অভিনয়শিল্পী ও মানুষ হিসেবে কেমন ছিলেন কবরী।
আমার জীবনে ছোট থেকে কবরী আপাকে দেখেছি। আমি তখনো সিনেমায় অভিনয়ে আসিনি, তখন থেকে তাঁর অভিনয় ভালো লাগত। রাজ্জাক কবরীর খুব ভক্ত ছিলাম। তাঁদের ‘ময়নামতি’ ছবিটি সিনেমা হলে প্রথম দেখেছি। অনেক সাধের ময়না আমার গানটা তো গুনগুন করে গাইতাম। এরপর তাঁদের আরও কত ছবি যে দেখেছি, বলে বোঝাতে পারব না। তিনি নেই এটা মোটেও ভাবতে পারি না।
আমার কেন যেন মনে হয়, কবরী আপাকে কষ্ট করে অভিনয় করতে হতো না। তিনি জন্মগতভাবে অসাধারণ একজন অভিনয়শিল্পী। তাঁর চেহারা–ছবি সবকিছু সাধারণ নারী হলেও পর্দায় খুব সুন্দরভাবে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতেন। দিলীপ কুমার, অমিতাভ বচ্চন, রেখাকে যে অভিনয় করতে হতো, সেটা কবরী আপাকে করতে হতো বলে আমার মনে হয় না। আমার সব সময়ই মনে হতো, এই চরিত্রটিই বুঝি তিনি। তিনি যখন টপ নায়িকা, তখনই আমার আগমন। রাজ্জাক ভাইয়ের ডাইরেকশনে এরপর আমিও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছি। গ্রামীণ পটভূমির যত চলচ্চিত্র তৈরি হতো, এসব চরিত্রে অসাধারণ মানিয়ে যেতেন তিনি। সাধারণ একটি মেয়ে যেন পর্দায় অসাধারণ হয়ে উঠতেন।
কবরী আপা অসাধারণ গুণী শিল্পী। তিনি লাখো মানুষের স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছেন। আপার সঙ্গে সর্বশেষ ‘রাজা সূর্য খাঁ’ নামে একটি সিনেমা করেছিলাম। পরিচালক গাজী মাহবুব চাচ্ছিলেন ঐতিহাসিক ওই সিনেমায় কবরী আপা থাকলে ভালো হয়। আপা তখন সাংসদ। আপাকে অনুরোধ করে বললাম, আমরা একসঙ্গে কাজটি করব। আপা শতব্যস্ততার মধে৵ও না করতে পারলেন না। সেবার আমাদের অনেক গল্প, আড্ডা হয়েছিল। আমি আপার জন্য খাবার নিয়ে যেতাম। তিনি অনেক স্নেহ করতেন। তারও আগে আমরা দুজন মিলে আরও দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলাম।