গতকাল রাতে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দী লাশ পাওয়া গেছে। তার পর থেকেই গুজব ছড়িয়েছে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। সেই ঘটনায় খুন হয়েছেন এই অভিনেত্রী। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী শিমুর ভাই-বোন ও অভিনেতা জায়েদ খান সম্প্রতি মুখ খুলেছেন।
শিমুর বোন ফাতেমা নিশা বলেন, ‘আমার বোন সবকিছু শেয়ার করে আমার সঙ্গে। আমাদের মধ্যে অনেক মিল। ও যেটা পরে সেটা আমি পরতাম, আমি যেটা পরতাম ও সেটা পরত। কারও বোন থাকলে এটা বুঝতে পারবে। তার সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হতো। একদিনও বলেনি জায়েদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। এটা ভুল–বোঝাবুঝির কারণে ঘটছে। আমার বোনের সহকর্মীদের বলব, গুজব না ছড়িয়ে সত্য উদ্ঘাটনে সহযোগিতা করুন।’
আজ বেলা দেড়টার দিকে নিহত শিমুর বড় ভাই হারুন অর রশিদ ও শহিদুল ইসলাম খোকন এবং ছোট বোন ফাতিমা নিশা কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করতে যান। এখানে নিহত শিমুর ছোট বোন ফাতেমা নিশা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই যে বোনের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। আমার বোনের স্বামী তাঁকে মেরেছে কি না, সেটি আমরা জানি না। ১৮ বছরের সংসারে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কিংবা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কলহ দেখিনি। আমি শিমুর স্বামীর সঙ্গে কথা বলব। তাঁকে জিজ্ঞাসা করব, কেন আপনি হত্যাকাণ্ডটি করেছেন? ভালোবেসে বোনকে বিয়ে করেছিলেন। ১৮ বছরের সংসার আপনাদের। বোনের অপরাধটা কী ছিল?’
এ সময় শিমুর ভাই শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘পেশাগত জায়গায় আমার বোনের কিছুটা ক্ষোভ ছিল। তার মানে এই নয়, সেই ঘটনায় খুন হয়েছে। ঘটনাটা আড়াল করতে জায়েদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন কেউ কেউ। এ হত্যার সঙ্গে আমার বোনজামাই দায়ী। তিনি আমার বোনের গায়ে হাত তুলতেন। ঝগড়া করতেন।’ আপনি একবার বললেন, আপনার বোন জামাই দায়ী পরে বললেন তারা দায়ী নন, দুই রকম কথা বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আবেগে বলেছিলাম। তবে অপরাধী যেই হোক আইনের আওতায় তার বিচার দাবী করছি।’
করোনার মধ্যে হঠাৎ এই চিত্রনায়িকাকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদসদ্যপদ হারানো ১৮৪ জনের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে সোচ্চার হতে দেখা গেছে। তিনি ছিলেন ভোটাধিকারবঞ্চিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক। ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে এফডিসির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন অন্য সহকর্মীসহ।
সে সূত্রে সোমবার রাত থেকেই গুজব ছড়ায়, ঘটনার সঙ্গে জায়েদ খান জড়িত থাকতে পারেন। এ কথা জায়েদের কানেও গেছে। তিনি বলেন, ‘আমাকে ঘিরে প্রথম থেকেই নোংরামি হচ্ছে। কোনো সুযোগ পেলেই সেখানে আমার নাম জড়ায়। অথচ আমি দুই বছর ধরে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছিলাম। এর মধ্যে তার সঙ্গে কখনোই আমার কথা হয় নাই। দেখাও হয় নাই। অথচ অনেকে গুজব ছড়াচ্ছেন, আমার সঙ্গে ১২ তারিখে শিমুর ঝগড়া হয়েছিল। শিল্পীদের নিয়ে এমন নোংরামি বন্ধ করুন। এসব কারণে সামাজিকভাবে আমাদের হেয় হতে হয়। আমরা সংগঠন থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তারা ঘটনা তদন্ত করছে। তারা এমনটাও জানিয়েছে, শিমুর স্বামী জড়িত থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।’