মুখোমুখি প্রযোজক সমিতি ও জায়েদ খান

জায়েদ খান।
ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রযোজক পরিবেশক সমিতি থেকে জায়েদ খানের সদস্যপদ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। সংগঠন থেকে দুই দফায় তাঁকে প্রযোজক সমিতির স্বার্থবিরোধী কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে চিঠি দেওয়া হয়। সেসব চিঠির জবাবও দিয়েছেন তিনি। সেই চিঠির বক্তব্যে খুশি নয় প্রযোজক পরিবেশক সমিতি। তারা বলছেন, জায়েদ খান প্রযোজকদের স্বার্থে আঘাত করেছেন। এদিকে জায়েদ খান জানালেন, তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি সত্য উদঘাটনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও প্রযোজক জায়েদ খানকে চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম জানান, জায়েদ খান প্রযোজক হয়ে প্রযোজকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, যা প্রযোজক সমিতির স্বার্থবিরোধী ও নীতিহীন কাজ। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর প্রযোজক সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন।

জায়েদ খান

কী ধরনের স্বার্থবিরোধ কাজে জায়েদ খান যুক্ত, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রযোজক সমিতিসহ ১৮টি সংগঠন থেকে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই সিদ্ধান্ত জায়েদ মানেননি। এমনকি তিনি প্রযোজক হয়ে সব শিল্পী ও অন্যান্য সংগঠনের সদস্যদের এসএমএস পাঠিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত মানতে নিষেধ করেছেন।

অনেক সংগঠনের সদস্যদের মৌখিকভাবে নিরুৎসাহিত করেছেন নিয়ম মানতে। তিনি শিল্পীর স্বার্থ দেখতে গিয়ে প্রযোজকদের স্বার্থে আঘাত করেছেন।’ এই সময় তিনি আরও জানান, জায়েদকে কারণ দর্শানোর জন্য দুবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। জায়েদ সেই চিঠির উত্তর দিলেও তা প্রযোজকদের কাছে সন্তোষজনক কোনো জবাব মনে হয়নি। যে কারণে কমিটির পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর প্রযোজকের পদ স্থগিত থাকবে।

জায়েদ খান ও সভাপতি মিশা সওদাগর।


সদস্যপদ স্থগিত ও কারণ দর্শানো প্রসঙ্গে জায়েদ খান জানান, নিয়মবহির্ভূতভাবে তাঁর সদস্যপদ বাতিল করেছেন প্রযোজকদের কিছু নেতা, যা অযৌক্তিক। তিনি বলেন, ‘প্রযোজক সমিতির প্রতি আমি শুদ্ধাশীল। তারা আমাকে নীতিমালা না মানার কথা বলছে। কিন্তু নীতিমালা নিয়ে তাদের সমস্যা হয়েছে শিল্পী সমিতির সঙ্গে। সেখানে ব্যক্তি প্রযোজক জায়েদকে তারা হয়রানি করতে পারে না। কারণ, আমি প্রযোজক সমিতির সদস্য হলেও কোনো ছবির শুটিং করিনি। তাহলে কীভাবে নিয়ম মানলাম না। আমি সাধারণ সদস্য হিসেবে প্রযোজক সমিতির কারণ দর্শানোর নোটিশে সঙ্গে সঙ্গে বিস্তারিত জবাব দিয়েছি।’

সম্প্রতি একটি শুটিং শুরু করতে যাচ্ছেন জায়েদ খান। সেই ছবি শুরুর আগে তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে ঝামেলায় ফেলার জন্য প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি থেকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম।

এই সময় তিনি বলেন, ‘এমনিতেই এফডিসিতে ছবির সংখ্যা কম। তার ওপর আমার ছবির শুটিং করতে না দেওয়া তাদের ঠিক হবে না। এই মুহূর্তে আমাদের চলচ্চিত্র বাঁচাতে আরও ছবি দরকার। তারা এভাবে ঝামেলা করলে এফডিসিতে ছবির সংখ্যাই কমে যাবে। অনেক প্রযোজক ছবি বানাবেন না। এটা খুবই দুঃখজনক। আমাকে হয়রানি করা ঠিক হচ্ছে না। তারা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে আক্রমণ করতে পারে না।’
জায়েদ এই সময় জানান, প্রযোজক পরিবেশক সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। এই ব্যাপারে তাঁকে হয়রানির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন তিনি। জায়েদ দাবি করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে। আগামী সপ্তাহে সেই কমিটি অভিযোগ তদন্ত করবে। তখন আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানান, তদন্ত কমিটির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে জায়েদের নামে স্বার্থবিরোধী কাজের প্রমাণ তাঁদের কাছে আছে। এই সময় তিনি বলেন, তদন্ত হলেই সব বেরিয়ে আসবে।