প্রেক্ষাগৃহ বাঁচাতে ঋণের ব্যবস্থা করছে সরকার
প্রেক্ষাগৃহ বাঁচাতে ঋণের ব্যবস্থা করছে সরকার

প্রেক্ষাগৃহ বাঁচাতে হাজার কোটির তহবিল

দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রেক্ষাগৃহ চালু করা, পুরোনো প্রেক্ষাগৃহ সংস্কার এবং নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি এই ঋণের অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে চলচ্চিত্র পরিচালক ও গবেষকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এখনো প্রতিদিন ৩০ জনের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, যদিও আগের স্বাভাবিক অবস্থার মতো গণপরিবহন, অফিস-আদালত চালু হয়েছে। এ বিষয়গুলো আরেকটু পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য তো সিনেমা হল বন্ধ রাখা যাবে না।
হাছান মাহমুদ, তথ্যমন্ত্রী

একসময় দেশে ১ হাজার ২ শতাধিক প্রেক্ষাগৃহ ছিল। কমতে কমতে তা এখন দুই শর নিচে নেমে এসেছে। যেসব প্রেক্ষাগৃহ আছে, সেগুলোর অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। সংস্কারের কথা বলা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও সারা দেশে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা বাড়ানো এবং যেসব প্রেক্ষাগৃহ আছে, সেগুলো সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিলেন। এদিকে করোনা মহামারিতে প্রেক্ষাগৃহের মালিকদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়। এই করোনার মধ্যেও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে অনেক মালিক তাঁদের প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। এ অবস্থায় আজ তথ্যমন্ত্রী চলচ্চিত্রশিল্প বাঁচাতে সরকারের হাজার কোটি টাকার তহবিলের ঘোষণা দেন।

প্রেক্ষাগৃহ বাঁচাতে আন্তরিক সরকার

তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে জানানো হয়েছে, কয়েক বছরের মধ্যে দেশের সিনেমাশিল্পে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। অনেকগুলো বন্ধ সিনেমা হল চালু হবে। চালু সিনেমা হলগুলো সংস্কার ও আধুনিক করা হবে। গ্রামে-গঞ্জের অনেক সিনেমা হল চালু হবে। সেখানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের চলচ্চিত্র স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী আমাদের যুবসমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে এ মাধ্যম। এ ছাড়া অনেক কালজয়ী শিল্পীর জন্ম দিয়েছে, কালজয়ী চলচ্চিত্রের জন্ম দিয়েছে। সুতরাং এই ইনস্টিটিউট থেকে যারা পাস করে বের হচ্ছে, তারাও একদিন কালজয়ী শিল্পী হবে। তারাও দেশ ও সমাজকে অনেক কিছু দিতে পারবে।’

শিগগিরই জানা যাবে হল খোলার দিনক্ষণ

বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সিনেমা ও টেলিভিশনের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে এক ও দুই বছরের কোর্স করানো হয়। এ ছাড়া এখানে কিছু শর্ট কোর্সও করা হয়। যাঁরা টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা করতে পারেন।

সিনেমা হল খোলার ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এখনো প্রতিদিন ৩০ জনের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, যদিও আগের স্বাভাবিক অবস্থার মতো গণপরিবহন, অফিস-আদালত চালু হয়েছে। এ বিষয়গুলো আরেকটু পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য তো সিনেমা হল বন্ধ রাখা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং দূরত্ব বজায় রেখে, আসনসংখ্যা পুনর্বিন্যাস করে চালু করা যায় কি না, আমরা এ সপ্তাহের মধ্যে বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে হল খোলার তারিখ জানাব।’