নির্মাতাদের নিয়ে হতাশ ববিতা

ববিতা
ববিতা

‘এখনকার নির্মাতাদের মধ্যে নিজেদের ছবির ওপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা একেবারে নেই বলে মনে হয়। সত্যি আমি এখনকার বেশির ভাগ নির্মাতাদের নিয়ে হতাশ।’ আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে এমনটাই জানালেন তিনি।
ববিতা তাঁর সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের সময় দেখতাম নির্মাতারাই হচ্ছেন একটা ছবির সবকিছু। ছবির ওপর তাঁদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাটাই ছিল অন্যরকম। আর এ জন্যই একের পর ভালো মানের ছবি নির্মিত হয়েছে। সে সময়কার ছবিগুলো যেমন দেশের মানুষের মন জয় করেছে; ঠিক তেমনি বিশ্ববাসীর কাছেও প্রশংসিত হয়েছে। তিনি বলেন, পাশাপাশি সফলতা লাভ করেছে ব্যবসায়িকভাবেও। এখনো যখন আগেকার ছবি দেখতে বসি, পার্থক্যটা তখন খুব ভালো করেই চোখে পড়ে।
নির্মাতাদের অযোগ্যতার কারণেই বাংলাদেশে এখন ভালো ছবি খুব একটা নির্মিত হচ্ছে না। আর এ কারণে চলচ্চিত্র থেকে দর্শকেরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ববিতা। এমনকি দিনকে দিন তা আরও খারাপের দিকেই যাবে বলেও মনে করেন এই অভিনেত্রী।
ববিতা বলেন, ‘এখন কি ধরনের সিনেমা তৈরি হচ্ছে তা আমি কোনোভাবেই বুঝতে পারছি না। এখন শুধুই অবাক হতে হয়। এখনকার ছবিগুলোর বেশির ভাগ না বাংলা, না হিন্দি, না তামিল! ছবিতে আমাদের নিজেদের কোনো উপস্থিতি দেখা যায় না। কি সব উদ্ভট গান, নাচ জুড়ে দেওয়া হয়— যার কোনো মানে হয় না। ইদানীং তো বাংলা ছবিতে আবার কারণে অকারণে হিন্দি সংলাপও জুড়ে দিতে দেখি। যা শুনে সত্যিই কষ্ট পাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।’
ববিতা ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছবিতে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে- গল্প। এই গল্পটাই এখন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে নাই। হিন্দি, কলকাতা আর তামিল-বিভিন্ন ছবির ‘টুকলি’ থেকে বাংলাদেশের এখনকার ছবিগুলো তৈরি হচ্ছে। আবার, এখনকার বেশির ভাগ ছবিতে পরিচালকের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তাঁরা প্রযোজকের কথামতো পুতুলের মতো চলতে থাকেন। যোগ্যতার অভাব থাকলে যা হয় আর কি।’
ববিতা বলেন, ‘আমি মনে করি, একটা ছবিতে পরিচালক সবকিছুরই নিয়ন্ত্রণ করবেন। কিন্তু তা কোনোভাবেই দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে ইদানীং নির্মিত বেশির ভাগ ছবির সবকিছু ঠিক করে দেন প্রযোজকেরা। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
ববিতা প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘প্রযোজক হয়তো তাঁর মতামত পরিচালকের কাছে বলতে পারেন, কিন্তু সিদ্ধান্ত তো পরিচালকেরই হওয়া উচিত, তাই নয় কি?’