কেবিন থেকে আইসিইউ, আইসিইউ থেকে কেবিন—মাসের পর মাস এভাবেই কাটছিল চিত্রনায়ক ও সাংসদ ফারুকের দিন। এখন তিনি কেবিনেই আছেন। আগের চেয়ে ভালো আছেন। তবে তাঁর মৃত্যুর গুজবে বিরক্ত অভিনেতার স্ত্রী।
শনিবার দিবাগত রাত পৌনে একটায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে, নায়ক ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মারা গেছেন। রাত যত বাড়তে থাকে, সংবাদটি তত ডালপালা মেলতে থাকে। আজ রোববার সকালে অনেকে ফেসবুকে তাঁর ছবি পোস্ট করে শেষশ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন। অনেকে ধরেই নেন, ঘটনা সত্য। ফারুকের স্ত্রী ফারহানা পাঠান সিঙ্গাপুর থেকে প্রথম আলোর কাছে এ নিয়ে আক্ষেপ করেন। বেদনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব কী শুরু হয়েছে! ফারুককে দেখছি সবাই মেরেই ফেলেছে। এসব কী! এর আগেও কারা যেন এসব ছড়িয়েছে। ফারুক ভালো আছে।’
ফারহানা পাঠান জানান, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ১৩ মাস ধরে চিকিত্সাধীন ফারুক। তাঁর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। এখন তিনি কেবিনে আছেন। খাওয়াদাওয়াও করতে পারছেন স্বাভাবিকভাবে। ফারহানা পাঠান বলেন, ‘যে মানুষটা ভালো আছে, তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়ানো হলে সেই পরিবার কী পরিমাণ মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যায়, এটা কে কাকে বোঝাবে। ১৩ মাস ধরে বিদেশের একটি হাসপাতালে আছি আমরা। হাসপাতাল যে মোটেও শান্তির জায়গা নয়, এটা নিশ্চয়ই কারও অজানা নয়। তারপরও কেন যে মানুষ গুজব ছড়ায়! এর আগেও ফারুকের মৃত্যুর সংবাদ ছড়ানো হয়। কেউ কেউ তো দায়িত্ব নিয়ে ফেসবুকে এমনভাবে লিখেও দেয়, বিশ্বাস না করে উপায় থাকে না। এগুলো যে একটা পরিবারের জন্য কতটা বিরক্তিকর, বিব্রতকর ও কষ্টের, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। আমি সত্যিই খুবই কষ্ট পেয়েছি ও বিরক্ত হয়েছি।'
ফারুক এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। তাঁর জন্য দোয়া চেয়েছেন ফারহানা পাঠান। তাঁর শারীরিক অবস্থার তথ্য পরিবারের পক্ষ থেকেই জানানো হবে। কাউকে নিজ দায়িত্বে মনগড়া খবর না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গত বছরের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে যান বরেণ্য অভিনেতা ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। পরীক্ষায় তাঁর রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শে তখন দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তখন থেকেই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে শুরু করেন ফারুক।
প্রায় পাঁচ দশক ঢালিউডে অবদান রেখেছেন অভিনেতা ফারুক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।