নকল শাবনূরে বিব্রত আসল শাবনূর

শাবনূর
ছবি : প্রথম আলো

চিত্রনায়িকা শাবনূর অভিনয়ে নেই অনেক দিন। একমাত্র সন্তান আইজান নেহানকে নিয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। এদিকে কে বা কারা দেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়িকার নামে ফেসবুক আইডি চালু করেছে। পরিচিত–অপরিচিত সবাইকে গণহারে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছেন। বিষয়টি শাবনূরের কান পর্যন্তও পৌঁছেছে। ফেসবুকে শাবনূরের নিজের আইডিতে একান্ত কাছের লোকজন যুক্ত আছেন। এদিকে শাবনূরের নামে অনেক আইডি ও পেজ ফেসবুকে চালু থাকায় নকল শাবনূরে নাকাল অবস্থায় আছেন আসল শাবনূর। বিষয়টিতে ভীষণ বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন ঢালিউডের দাপুটে এই চিত্রনায়িকা।

শাবনূর

ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রথম আলোকে শাবনূর বললেন, ‘ফেসবুকে আমার একটি আইডি আছে। সেখানে আমি খুব বেশি নিয়মিত না হলেও কাছের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তবে পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আমার নামে ফেসবুকে আরও অনেকগুলো আইডি আর পেজ কে বা কারা চালাচ্ছে। এমন হীন কাজ কারা করছে বুঝতে পারছি না। কয়েক দিন ধরে শুনছি, একটি আইডি নিজেকে শাবনূর দাবি করে আমার পরিচিত ও খুব কাছের সবার কাছে গণহারের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে। কারও কাছে আবার টাকার চাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টি আমার জন্য খুবই বিব্রতকর ও অস্বস্তিকর।’

শাবনূর।

ঢালিউড তারকা শাবনূর ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট চালু করেছেন খুব বেশি দিন হয়নি। নিজেকে সব সময় কাজের মধ্যেই ব্যস্ত রেখেছেন। শাবনূর বললেন, ‘অনেক দিন ধরে পরিচিতজন ও ভক্তদের চাওয়া ছিল, আমি যেন ফেসবুকে নিয়মিত হই। সবার চাওয়ার প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমি ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের জন্য ফেসবুক পেজ চালু করি। সেখানে আমার প্রাত্যহিক জীবনের অনেক তথ্য থাকে। একই সঙ্গে আমার পেশাগত জীবনেরও দুর্লভ মুহূর্তের ছবি আর ভিডিও আছে।’

শাবনূর

শাবনূর বলেন, ‘কী এক অবস্থা দেখেন, আমার আসল আইডিতে কোনো ছবি বা ভিডিও পোস্ট করলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি ডাউনলোড করে নকল পেজে আপলোড করা হচ্ছে। এতে আমার ফেসবুক বন্ধু ও পেজের অনুসারীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান। কোনটি আসল, কোনটি নকল, তা ভাবতে থাকেন। আমার পরিচিতদের অনেকে তো আবার এও জানতে চেয়েছেন, আমি কি তাঁদের আমার আইডি থেকে বাদ দিয়ে দিলাম, নাকি তাঁদের না জানিয়ে অন্য আইডি চালাচ্ছি! আসল-নকল পেজে ভক্তদের লাইক, কমেন্ট ভাগাভাগিও হয়ে যাচ্ছে। আমি তো দেখলাম আমার নামের একটি আইডি হাজার হাজার অনুসারীও! এতে অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’

নকল পেজটি বন্ধ করতে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কেন? এ প্রশ্নে শাবনূর বলেন, ‘নিচ্ছি না, কারণ পেজটির অ্যাডমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। যোগাযোগ করা গেলে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। যদি তাতে সফল না হই, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

শাবনূর

ফেসবুকে পাশাপাশি শাবনূর ইনস্টাগ্রামেও সচল হয়েছেন। মাস দুয়েক আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে যুক্ত হয়েছেন। শাবনূর বললেন, ‘শুধু ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কথা চিন্তা করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকটিভ হয়েছি।’

কয়েক বছর আগে একমাত্র ছেলে আইজানকে কোলে নিয়ে শাবনূর

শাবনূরের প্রকৃত নাম কাজী শারমীন নাহিদ নূপুর। ১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। চলচ্চিত্রে শাবনূরের যাত্রা শুরু হয় গত শতকের নব্বইয়ের দশকে। ১৯৯৩ সালে প্রয়াত প্রখ্যাত পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তাঁর।

১৯৯৪ সালে জহিরুল হকের ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে সালমান শাহর বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন শাবনূর। এই চলচ্চিত্রটির পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই অভিনেত্রীকে। একের পর এক সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন ঢালিউডের ‘স্বপ্নের নায়িকা’।

সালমান শাহ ও শাবনূর জুটি দর্শকের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পায়

‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘পৃথিবী তোমার আমার’, ‘বিয়ের ফুল’, ‘আমি তোমারি’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘নারীর মন’, ‘এ বাঁধন যাবে না ছিঁড়ে’, ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘এ মন চায় যে’, ‘ফুল নেব না অশ্রু নেব’, ‘দিল তো পাগল’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘স্বামী–স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘ভালোবাসা কারে কয়’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘নসিমন’, ‘ব্যাচেলর’, ‘ফুলের মতো বউ’, ‘চার সতিনের ঘর’, ‘দুই নয়নের আলো’, ‘মোল্লাবাড়ির বউ’, ‘নিরন্তর’সহ দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি ১৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।