শুটিংয়ের আগে দাদা আবদুল কাদের অভিনয়ের টিপস দিতেন লুবাবাকে। দাদার হাত ধরে অভিনয় শুরু করা লুবাবা এখন একা। শেষবার দাদার সঙ্গেই সে গিয়েছিল একটি সিনেমায় অভিনয় করতে। দাদার প্রয়াণের পর মন খারাপ করে লুবাবা গেল ভারতের হায়দরাবাদ, অনন্ত জলিলের ছবি ‘নেত্রী: দ্য লিডার’-এর শুটিং করতে।
৯ বছরের সিমরীন লুবাবা এখন বিনোদন অঙ্গনের পরিচিত মুখ। দাদা অভিনেতা আবদুল কাদের উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলতে শুরু করেছিলেন তাকে। নাতনির আবদারে দাদাকেও শুটিংয়ে যেতে হতো নিয়ম করে। এবারই প্রথম, লুবাবার সিনেমার শুটিংয়ে দাদা নেই। গতকাল বুধবার থেকে ভারতে শুরু হয়েছে লুবাবার অংশের শুটিং।
এর আগে আশরাফ শিশিরের ‘৫৭০’ ও অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘রিকশা গার্ল’ ছবিতে অভিনয় করেছে লুবাবা। সেসব ছবিতে ছোট ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। ‘নেত্রী: দ্য লিডার’-এ বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছে সে। এ রকম একটি কাজ করতে গিয়ে বারবার তার দাদার কথা মনে পড়ছে। লুবাবা বলে, ‘দাদা বেঁচে থাকলে অনেক কিছু শিখিয়ে দিতেন। আমি তো চরিত্র বুঝি না। দাদা এগুলো বুঝতেন। তিনি আমাকে গল্প পড়ে শোনাতেন, কীভাবে অভিনয় করতে হবে বুঝিয়ে দিতেন। দাদা যেভাবে শেখাতেন, সেভাবে অভিনয় করতাম, সবাই তাই প্রশংসা করত। দাদাকে খুব মিস করছি।’
নতুন ছবির জন্য লুবাবাকে গল্প, চরিত্র বুঝিয়ে দিচ্ছেন তার মা–বাবা। কীভাবে অভিনয় করতে হবে, শিখিয়ে দিচ্ছেন। ছবিতে লুবাবার ভূমিকা কী, জানতে চাইলে মা জাহিদা ইসলামের হাতে ফোন ধরিয়ে দেয় সে। জাহিদা জানান, আপাতত এ বিষয়ে কিছু প্রকাশ করার অনুমোদন নেই।
মা–বাবা, ভাই ও দাদিকে নিয়ে ১৬ মার্চ সকালে ঢাকা থেকে ভারতের হায়দরাবাদের উদ্দেশে যাত্রা করে লুবাবা। এবারই প্রথম দলে নেই আবদুল কাদের। গত ডিসেম্বর মাসে প্রয়াত হন তিনি। এই অভিনেতার স্ত্রী খাইরুন নেসা জানান, আবদুল কাদের কোথাও একা যেতে চাইতেন না। বেশির ভাগ সময় অন্তত নাতনিকে শুটিংয়ে নিয়ে যেতেন। আবার দেশের বাইরে গেলে পুরো পরিবার নিয়ে যেতেন। শুটিং করে ইচ্ছেমতো সময় কাটিয়ে ফিরতেন।
তিন বছর বয়সে দাদা আবদুল কাদেরের হাত ধরে অভিনয়ে পা রাখে লুবাবা। এখন নিয়মিত বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করছে সে। দেশ-বিদেশে ইতিমধ্যে প্রায় ৫০টির মতো বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছে এই খুদে শিল্পী। তার মা জাহিদা জানান, দেশের বাইরে শুটিং হওয়ায় খুব খুশি তাঁর মেয়ে। ভারতে শুটিংয়ের পর ছবির কিছু অংশের কাজ হবে ঢাকায়। সেই শুটিং শেষ করে জুনের দিকে তাঁদের ছুটতে হবে তুরস্কের পথে। কথা শেষে লুবাবার মা বলেন, ‘লুবাবার সামনে তাঁর দাদার প্রসঙ্গে এলেই সে কাঁদতে থাকে। আমার শ্বশুরের (আবদুল কাদের) সঙ্গে এর আগে ভারতে এসেছিল সে, সেটা স্মরণ করেই বারবার মন খারাপ করছে।’
‘নেত্রী: দ্য লিডার’ ছবির কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করছেন বর্ষা। তাঁর স্বামী প্রযোজক ও অভিনেতা অনন্ত জলিলকে দেখা যাবে বর্ষার দেহরক্ষী হিসেবে। এ ছবিতে অভিনয় করেছেন দেশ-বিদেশের আরও অনেকেই।