>আবার যেন হোঁচট। লম্বা বিরতির পর যখন ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এল, তখনই থমকে যেতে হলো মাহিয়া মাহিকে। মাহি অভিনীত স্বপ্নবাজি ও নবাব এলএলবি নামের বড় বাজেটের দুটি ছবির শুটিং আটকে গেল করোনাভাইরাসের কারণে। প্রায় তিন বছর পর বড় পর্দায় ধুমধাম করে ফেরার স্বপ্নে ভর করল স্থবিরতা। মাহির স্বপ্নের ছবির থমকে যাওয়া নিয়েই এ প্রতিবেদন।
লম্বা বিরতির পর যখন ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এল, তখনই থমকে যেতে হলো মাহিয়া মাহিকে। মাহি অভিনীত স্বপ্নবাজি ও নবাব এলএলবি নামের বড় বাজেটের দুটি ছবির শুটিং আটকে গেল করোনাভাইরাসের কারণে।
বছর তিনেক ধরে মাহিয়া মাহি অভিনয়ের জন্য নিজেকে ভেঙে গড়ার চেষ্টা করছিলেন। মাঝে মাহি অভিনীত কিছু ছবি মুক্তি পেয়েছে। তবে এসব ছবির বেশির ভাগের কাজ বেশ আগে করা। ফলে ছবিগুলো ঘিরে মাহির প্রত্যাশা ছিল শূন্যের কোঠায়। মাহি জানালেন, বলতে গেলে সর্বশেষ ঢাকা অ্যাটাক ও জান্নাত ছবি দুটিতেই নিজেকে পুরোপুরি তুলে ধরতে পেরেছিলেন তিনি। এরপর থেকে এফডিসি–নির্ভর গতানুগতিক সিনেমার ছাঁচে পড়ে যান তিনি।
একটা সময় অগ্নি, অগ্নি ২, দবির সাহেবের সংসার, পোড়ামন, অনেক সাধের ময়না, রোমিও বনাম জুলিয়েট, ভালোবাসা আজকাল ছবিগুলো দিয়ে মাহিয়া মাহি সাড়া ফেলেছিলেন দর্শকদের মধ্যে। অনেক ছবির বেলায় মাহির নামেই হলমুখী হয়েছেন দর্শক। কিন্তু জাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে বেরিয়ে আসার পর তাঁর চলচ্চিত্রের পথ খানিকটা এলোমেলো হয়ে যায়। ক্যারিয়ারে চলে আসে স্থবিরতা। কথা ছড়ায়, বিয়ের পর আর আগের মতো জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারছেন না মাহি। এসব শুনেও হাল ছাড়েননি এই অভিনেত্রী। অপেক্ষায় ছিলেন মোক্ষম সময় আর মনের মতো চিত্রনাট্যের। অবেশেষে পেয়েও গেলেন চিত্রনাট্য। ঘোষণা এল নতুন ছবির, নাম স্বপ্নবাজি।
স্বপ্নবাজি ছবিকে মাহি তাঁর স্বপ্নের প্রজেক্ট বলে আসছিলেন। ছবিতে মাহির নায়ক সিয়াম আহমেদ। এই চরিত্রের জন্য মাহি টানা কয়েক মাস সময় নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন। পোশাক, সাজ, বাচনভঙ্গি—সবকিছুর জন্যই নাকি আলাদা করে সময় দিতে হয়েছিল তাঁকে। এর আগে অগ্নি কিংবা পোড়ামন ছবির জন্য যেমনভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন, স্বপ্নবাজির জন্য মাহি নাকি তার চেয়ে কয়েক গুণ কাজ করেছেন। কিন্তু এত পরিশ্রমের ফল কী হলো? মাত্র চার দিন শুটিং করার পরই শুরু হয় অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হয়, বন্ধ হয়ে যায় স্বপ্নবাজির কাজ। মাহির আরেক ছবি নবাব এলএলবিও একই পরিণতির শিকার হয়। শাকিব খান ও মাহি অভিনীত এই ছবিটির শুটিং শুরুর এক সপ্তাহ আগেই থেমে যেতে হয়।
মাহি বললেন, ‘দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর ভালো দুটি কাজ পেয়েছিলাম। কিন্তু শুরুতেই বাধা পড়ে গেল। স্বপ্নবাজি ছবিতে কাজ করতে গিয়ে স্বপ্নের ছবি মনে হয়েছে। চরিত্রটি বেশ দুঃসাহসিক। একজন অভিনেত্রীর জীবনে কিছু চরিত্র থাকে, যা তাঁর শিল্পীজীবনকে পূর্ণতা দেয়। স্বপ্নবাজি ছবির চরিত্রটি ঠিক সে রকম।’
এখন এই অনাকাঙ্ক্ষিত বাধা থেকেই ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছেন মাহি। এ ছাড়া তো আর উপায় নেই! মাহি বলেন, ‘পুরো বিনোদন দুনিয়ার অবস্থা একই রকম। আমি তো অপেক্ষা করছিলামই। আরেকটু অপেক্ষা করি। এই বাধা থেকে হয়তো ভালো কিছু আসতে পারে।’
দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো এখনো বন্ধ। এগুলো চালু হলেও আগের মতো দর্শক হলে সিনেমা দেখতে আসবেন কি না, এ নিয়েও আছে অনেক সংশয়, শঙ্কা। এই পরিস্থিতি নিয়ে মাহির মন্তব্য, ‘চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিকল্প ব্যবস্থা হয়তো বের হয়েই যাবে। পরিস্থিতি আমাদের সেদিকে নিয়ে যাবে। এখন যেমন বেশ কয়েকটি ডিজিটাল মাধ্যম আছে, সামনে হয়তো আরও আসবে।’
এখন শুটিংয়ে বাধা নেই। টিভি নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং শুরু হয়ে গেছে বেশ কিছু হলো। স্বপ্নবাজি ও নবাব এলএলবির শুটিং কবে শুরু হবে? জানতে চাইলে মাহি বললেন, ‘নাটকের শুটিং ছোট পরিসরে হয়। কিন্তু সিনেমার শুটিংয়ে বড় ইউনিট কাজ করে। দুটি ছবিই বড় পরিসরের। সেটে অনেক মানুষের প্রয়োজন। তাই এই মুহূর্তে ঝুঁকি আছে। পরিচালকের সঙ্গে শিডিউল নিয়ে কথা হচ্ছে। শুটিংয়ের সময় এখনো নির্ধারণ হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
তিন মাসের বেশি সময় ঘরেই কাটালেন মাহিয়া মাহি। এই সময়টা মাহি ঘরের কাজ করেছেন, সিনেমা দেখেছেন, মায়ের সঙ্গে রান্না করেছেন আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রতি রাতেই বিভিন্ন দেশের সিনেমা দেখেছেন। এই সিনেমা দেখাটা অভিনয়জীবনে বেশ কাজে দেবে বলে মনে করছেন মাহিয়া মাহি।