কাজী হায়াৎ, আবুল খায়ের বুলবুল, শাহ আলম কিরণ, সোহানুর রহমান। ছবি : কোলাজ
কাজী হায়াৎ, আবুল খায়ের বুলবুল, শাহ আলম কিরণ, সোহানুর রহমান। ছবি : কোলাজ

তারিখ পেছালেও চলছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

ডিসেম্বর মাসের শেষ শুক্রবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু মহামারির কারণে পিছিয়েছে ২০২০-২০২১ মেয়াদের এই নির্বাচন। তারিখ পিছিয়ে গেলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) সম্ভাব্য প্রার্থীদের আনাগোনা বেড়েছে।

করোনা মহামারির কারণে সমিতির নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর। বরং তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে। চলতি কমিটির একাধিক নেতাও এ তারিখ নিশ্চিত করেছেন। তবে এর আগে জানুয়ারি মাসের শুরুতে সমিতির সাধারণ সদস্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে একটি সভা। সেখানেই পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল ঘোষণার সময় জানানো হবে।

মানুষ সিনেমা দেখতে চায়, কিন্তু আমরা সেই পরিবেশ তৈরি করতে পারছি না। চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিতে যথাযথ পরিকল্পনা করে কাজ করতে পারিনি আমরা। আগামী দিনে আমরা সেই কাজটি করতে চাই।
সোহানুর রহমান সোহান

নির্বাচন পেছালেও বসে নেই প্রার্থীরা। এফডিসিতে তাঁদের কর্মতৎপরতা লক্ষণীয়। এমনকি ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করেছেন তাঁরা। এফডিসির ভেতরে অবস্থিত চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির কার্যালয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের ভিড় বাড়ছে দিন দিন। সম্ভাব্য প্যানেল ও প্রার্থীদের নাম নিয়ে শুরু হয়েছে আলাপ–আলোচনা। শোনা যাচ্ছে, এবারের নির্বাচনে চারটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। একটি প্যানেলে সভাপতি পদে কাজী হায়াৎ ও মহাসচিব পদে এস এ হক অলিকের নাম শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য তিন প্যানেলে আছেন সোহানুর রহমান সোহান–শাহিন সুমন, শাহ আলম কিরণ–সাফি উদ্দিন সাফি ও আবুল খায়ের বুলবুল–নূর মোহাম্মদ মনি।

বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য সোহানুর রহমান সোহান আগামী নির্বাচনে সভাপতি হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সভাপতি পদে নির্বাচন করছি, আমার প্যানেলে মহাসচিব থাকবেন শাহীন সুমন। প্যানেল মোটামুটি গুছিয়ে এনেছি। ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি।’ সিনেমায় সুদিন ফেরাতে কী করবেন তাঁরা? এই পরিচালক বলেন, ‘বর্তমানে চলচ্চিত্রের অবস্থা খুবই খারাপ। মানুষ সিনেমা দেখতে চায়, কিন্তু আমরা সেই পরিবেশ তৈরি করতে পারছি না। চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিতে যথাযথ পরিকল্পনা করে কাজ করতে পারিনি আমরা। আগামী দিনে সেই কাজটি করতে চাই।’

অনেক দিন ধরে সিনেমার সঙ্গে জড়িত, সিনেমার বর্তমান অবস্থা দেখলে মন কাঁদে। দেখি এই জায়গায় এসে সিনেমার কিছু উন্নতি করতে পারি কি না।
কাজী হায়াৎ

আগে একবার সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও একবার সহসভাপতি ছিলেন কাজী হায়াৎ। এবার সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সভাপতি পদে নির্বাচন করব ভাবছি। আমি আর অলিক মিলে একটা প্যানেলের পরিকল্পনা করেছি। অনেক দিন ধরে সিনেমার সঙ্গে জড়িত, সিনেমার বর্তমান অবস্থা দেখলে মন কাঁদে। দেখি এই জায়গায় এসে সিনেমার কিছু উন্নতি করতে পারি কি না।’

২০১৮-২০১৯ সালের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন শাহিন সুমন। বর্তমান কমিটির একই পদে আছেন তিনি। এবার তিনি মহাসচিব পদে প্রার্থী হচ্ছেন। এই নির্মাতা বলেন, ‘এখনো জোরেশোরে কাজ শুরু করিনি। ভোটারদের সঙ্গে টুকটাক যোগাযোগ করছি। তবে এক বছর আগে থেকেই এই পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আসছি।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির পদ ১৯টি। সভাপতি ও মহাসচিবসহ ৯টি পদ সম্পাদকের, বাকি ১০টি কার্যনির্বাহী সদস্য। বর্তমানে সমিতির সাধারণ ভোটার ৩৬৪ জন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির গঠনতন্ত্রে আছে, দুই বছরের মাথায় ডিসেম্বরের শেষ শুক্রবার নতুন কমিটির জন্য নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। সে অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ সালের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২৫ ডিসেম্বর। বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নতুন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অপূর্ব রানা জানান, জয়েন্ট স্টক থেকে এই তারিখে নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।