জায়েদ খান ও নিপুণ
জায়েদ খান ও নিপুণ

জায়েদ নেই, যেভাবে আছেন নিপুণ

২ মার্চ আদালত থেকে রায় এসেছিল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদেই থাকছেন জায়েদ খান। পরের দিন শপথ নিয়ে মিটিংও করেছিলেন। শুরু করেছিলেন কাজ। পরে নিপুণ আপিল করলে সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। তারপর থেকে নিয়ম মেনে শিল্পী সমিতিতে কোনো কার্যক্রমে আসেননি জায়েদ খান। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিয়মিত শিল্পী সমিতির কার্যক্রমে রয়েছেন নিপুণ আক্তার—এমন অভিযোগ উঠেছে। আজ ২৬ মার্চ একটি মিটিংয়ে হাজির হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। পদটির স্থগিতের পর তিনি বেশ কয়েক দিন শিল্পী সমিতিতে বসেছেন।  

এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিমের ভাষ্য, ‘১৪ মার্চ কোর্ট স্টিক্টলি বলে দিয়েছিল সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণ–জায়েদ কেউ চেয়ারে বসতে পারবেন না। কারণ, তাঁর (নিপুণ) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা ছিল। এখন কেউ যদি আইন না মানেন, তাহলে এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। আইনগতভাবে তিনি আইন মানছেন না। আর এই অর্ডারটা কিন্তু খারিজ হয়ে যায়নি। সেখানে এই ধরনের আচরণ ঠিক হয়নি।’

‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যকরী পরিষদের মিটিং’– লিখে ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সাইমন

নিপুণ আদালত অবমাননা করেছেন। এই অভিযোগে ফেব্রুয়ারি মাসে মামলাও করেছেন জায়েদ খান। পরে আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণ কোনো মিটিং বা সমিতির নেতা হয়ে অংশ নিতে পারবেন না। আজ ২৬ মার্চ শিল্পী সমিতির একটি মিটিংয়ে অংশ নিতে দেখা যায় নিপুণকে। মিটিং লিখে পোস্ট করা শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইমনের ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেছেন নিপুণ। পাশে সভাপতির চেয়ারে ইলিয়াস কাঞ্চন। তাঁদের মাঝে সাইমন সাদিক। সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত পদটির ওপর স্থগিতাদেশ ছিল নিপুণ ও জায়েদ কেউ চেয়ারে বসতে পারবেন না। কোন অনুমতি পেয়েছেন কিনা– এ বিষয়ে জানতে নিপুণকে তিনটি ফোন করা হয়। এ ছাড়া বিষয়টি জানতে খুদে বার্তা পাঠানো হয়, কিন্তু কোনো সাড়া দেননি।

জায়েদ খান খান

জায়েদ খান বলেন, ‘আদালতের রায় নিপুণ অবশ্যই পেয়েছেন। তিনি জানেন পদটি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে। সেখানে কীভাবে নিপুণ মিটিং করেন। আদালতের রায়ের কি কোনো মূল্য নেই তাঁর কাছে। তাঁদের সঙ্গে ইচ্ছেমতো মিটিং করেছেন। আমাদের প্যানেলের কাউকে জানাননি। তা ছাড়া ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই দুই দিন আগে নিজেই বলেছেন এটার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত সাইমনকে দিয়ে কাজ চালিয়ে নেব। তাঁর কথায় আমার আস্থা ছিল।’ এই সময় তিনি আরও বলেন, যেখানে নির্বাচিত সদস্যরা মিটিংয়ের ডাক পান না, সেখানে নিপুণ কীভাবে অংশ নেন। বারবার আদালত অবমাননা করে কীভাবে নিপুণ চেয়ারে বসেন, মিটিংয়ে অংশ নেন। শিল্পী সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধি ডিপজল ও জয় চৌধুরীকে ফোন করলে তাঁরা জানান, তাঁরা মিটিং সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ডিপজল বলেন,‘আমাদের কিছু না জানিয়ে নিপুণ তো সব রকম কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’

গত ২৮ জানুয়ারির নির্বাচনে শিল্পী সমিতির নির্বাচন হয়

গত ২৮ জানুয়ারির নির্বাচনে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে সহকর্মীদের ভোটে জয়লাভ করেন জায়েদ খান। কিন্তু ফলাফল মেনে নেননি সাধারণ সম্পাদক পদে হেরে যাওয়া নিপুণ। তিনি আপিল করেন। একসময় নির্বাচনী আপিল বোর্ড নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করে। অন্যদিকে অবৈধভাবে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে। পরে পদটি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এটি নিষ্পত্তির দায়িত্ব চলে যায় উচ্চ আদালতে। বেশ কয়েকবার শুনানি পিছিয়ে মার্চের শুরুতে আদালত জায়েদ খানকে স্বপদে বহাল রাখেন। সেখানে আপিল করেন নিপুণ। আদালত পদটির স্থগিতাদেশ দেন।

চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার