কাজী হায়াৎ, শাহ আলম কিরণ ও সোহানুর রহমান সোহান
কাজী হায়াৎ, শাহ আলম কিরণ ও সোহানুর রহমান সোহান

চূড়ান্ত তিন প্যানেল, এপ্রিলে নির্বাচন

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তিনটি প্যালেন। গত বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২ এপ্রিল। এবারের নির্বাচনে সভাপতি, মহাসচিবসহ কমিটির ১৯ পদের বিপরীতে তিনটি প্যানেল ও স্বতন্ত্র মিলে মোট ৪৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্যানেলগুলোতে রয়েছেন কাজী হায়াৎ–এস এ হক অলিক, সোহানুর রহমান সোহান–শাহীন সুমন ও শাহ আলম কিরণ–সাফি উদ্দীন সাফি।

কাজী হায়াৎ

নির্বাচন ঘিরে এত দিন প্রার্থীদের আনাগোনা ও প্রচার–প্রচারণার পরিসর ছিল সীমিত। বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় থেকেই বিএফডিসির ভেতরের চিত্র অনেকটাই বদলে গেছে। বিএফডিসির আঙিনা ঘিরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থী ও ভোটারদের আনাগোনা বেড়েছে।

সমিতির প্রত্যেক সদস্যই সচেতন। তাঁদের কাছে আমার চাওয়া থাকবে, ভোট প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিজের বিবেককে যেন না ঠকান তাঁরা
কাজী হায়াৎ, পরিচালক

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিচালক সমিতির আঙিনা, ক্যানটিন চত্বর ও বাগানের আশপাশে ছোট ছোট দলে প্রার্থী ও ভোটারদের জটলা।

পরিচালক সমিতির কার্যালয়ের সামনে দেখা হয় এক প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সোহানুর রহমান সোহানের সঙ্গে। এবারের নির্বাচনে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় প্রতিযোগিতাপূর্ণ ভোট হবে বলে মনে করছেন তিনি। সোহান বলেন, ‘এর আগেরবার দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। এবার তিনটি প্যালেন। খুব ভালোভাবেই প্রতিযোগিতা হবে এবার।’ নির্বাচন নিয়ে প্রত্যাশা কী? জানতে চাইলে এই পরিচালক বলেন, যাঁরা সুন্দর মনের মানুষ। বিগত দিনে ভালো কাজের অভিজ্ঞতা আছে। যাঁরা ভবিষ্যতে পরিচালকদের স্বার্থে কাজ করবেন, এমন প্রার্থীরা জিতে আসবেন।’

শাহ আলম কিরণ

এদিকে আরেক সভাপতি প্রার্থী কাজী হায়াৎ করোনায় আক্রান্ত হলেও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। বাসায় বসেই ফোন ও অনলাইনে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুসারে এবার বাসায় গিয়ে ভোট চাইতে পারবেন না প্রার্থীরা। তাই বাসায় যাওয়া লাগছে না। করোনার কারণে নিজের বাসাতেই অবস্থান করছি। শারীরিকভাবে সুস্থ আছি এখনো। বাসায় বসেই প্রিয় সহকর্মী ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছি।’ ভোটারদের উদ্দেশে এই পরিচালক বলেন, ‘সমিতির প্রত্যেক সদস্যই সচেতন। তাঁদের কাছে আমার চাওয়া থাকবে, ভোট প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিজের বিবেককে যেন না ঠকান তাঁরা।’

ভোটারদের কাছে এতটুকুই চাওয়া, সাংগঠনিক দক্ষতা দেখেই যেন তাঁরা সবাই প্রার্থীদের ভোট দেন
শাহ আলম কিরণ, পরিচালক
সোহানুর রহমান সোহান

আরেক সভাপতি প্রার্থী শাহ আলম কিরণ বলেন, ‘এখানে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাঁদের কাউকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। ভোটারদের কাছে এতটুকুই চাওয়া, সাংগঠনিক দক্ষতা দেখেই যেন তাঁরা সবাই প্রার্থীদের ভোট দেন।’

এদিকে নির্বাচন কমিশনের গঠনতন্ত্রে নির্দেশনা আছে, ভোটারদের বাসায় গিয়ে ভোট চাইতে পারবেন না প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বাচ্চু বলেন, ‘একটি ভালো ভোট অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনের যেসব নির্দেশনা দেওয়া আছে, সম্মানিত প্রার্থীগণ তা মেনে চলবেন বলে আমার বিশ্বাস।’ নির্বাচন কমিশনের দুজন সদস্য বি এইচ নিশান ও আ স ম শফিকুর রহমান। আর নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন দেওয়ান নজরুল। পরিচালক সমিতির এ নির্বাচনে মোট ৩৬১ জন ভোটার ভোট দেবেন।

বিগত দিনে ভালো কাজের অভিজ্ঞতা আছে। যাঁরা ভবিষ্যতে পরিচালকদের স্বার্থে কাজ করবেন, এমন প্রার্থীরা জিতে আসবেন
সোহানুর রহমান সোহান, পরিচালক

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী, পরিচালক, কলাকুশলীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল পরিচালক সমিতি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এই আয়োজন করেন তাঁরা। সমিতির নির্বাচনের আগে এই আয়োজন বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এই কমিটির সভাপতি ও মহাসচিব নির্বাচন করছেন না।