করোনাভাইরাসের কারণে দর্শক এখন ঘরমুখী। প্রেক্ষাগৃহে তালা ঝুলছে। নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে বড় পর্দায় ছুটে যাওয়াকে। সময় এখন উল্টো বইছে। ঘরে বসেই বিনোদনে মেতে ওঠার কথা বলা হচ্ছে। হাজারো ছবির ভিড়ে আসুন দেখে নিই কিছু রোমান্টিক ছবি। ছবিগুলো অনেকেই দেখেছেন আগে, আরও একবার দেখে নিতে পারেন। যাঁরা এখনো দেখে উঠতে পারেননি, তাঁরা নিতে চলেছেন অন্য রকম অভিজ্ঞতা। কারণ, দেশের সেরা তারকাদের সেরা সময়ের সেরা কাজ এগুলো। সময় পেরিয়েও এসব ছবি নতুনের মতো দর্শককে তৃপ্তি দিতে সক্ষম।
নীল আকাশের নীচে
‘নীল আকাশের নীচে’ গানটি শোনেননি এমন শ্রোতা কি পাওয়া যাবে? ‘প্রেমেরই নাম বেদনা’ গানটি শুনে বেদনায় আক্রান্ত হননি এমন শ্রোতাও খুঁজে পাওয়া ভার। গানের ছবি হিসেবে যেমন, প্রেমের ছবি হিসেবেও তেমন কদর মিতা পরিচালিত ‘নীল আকাশের নীচে’র। রাজ্জাক-কবরী জুটির অন্যতম সেরা ছবিটিতে পাবেন সেই সময়ের সেরা রোমান্টিক জুটির অনবদ্য রসায়ন।
ময়না মতি
‘ডেকো না আমারে তুমি কাছে ডেকো না’ গানের সঙ্গে রাজ্জাকের বেদনাবিধুর অভিনয় দেখার জন্য দেখতে পারেন ‘ময়না মতি’। রোমান্টিক ছবির কুশলী পরিচালক কাজী জহিরের এ ছবি যুগ যুগ ধরে পিপাসা মেটাচ্ছে রোমান্টিক ছবিপ্রেমী দর্শকদের। রাজ্জাক-কবরী জুটির রোমান্টিক ছবিগুলোর মধ্য এ ছবির স্থান ওপরের দিকে।
পীচ ঢালা পথ
‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে চুপি চুপি বলে যায়’ গানের সঙ্গে ববিতার নেশাধরানো অভিব্যক্তি সেকালের দর্শকদের বিমোহিত করেছিল। সাধারণ ঘরের একটি মেয়ের কণ্ঠশিল্পী হিসেবে খ্যাতি পাওয়া। তারপর প্রেমিকের সঙ্গে তার দূরত্ব। কঠিন রোগে পড়ে চূড়া থেকে পতন। ফিরে এসে প্রেমিকের বুক পেতে দেওয়া। রাজ্জাক-ববিতার অভিনয়গুণে এহতেশাম পরিচালিত এ ছবি আজও সতেজ ও নতুন।
স্বরলিপি
‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে কি হবে’ গানটি শুনলে আজও চলন্ত পথিক থমকে দাঁড়ান। এখনো প্রবীণ দর্শকের চোখে লেগে আছে নজরুল ইসলামের ‘স্বরলিপি’ ছবিতে রাজ্জাক-ববিতার দুষ্টু-মিষ্টি অভিনয়। ধনী পরিবারের মেয়ে ববিতার বাড়িতে গাড়িচালকের ছদ্মবেশে কণ্ঠশিল্পী রাজ্জাকের প্রবেশ। তারপর একের পর এক মজার ঘটনায় দর্শকেরা গল্পে ডুবে যান।
অবুঝ মন
‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ গানটি কত বছর টিকে থাকবে? এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। ৫০ বছরেও তাজা আছে গানটি। একই সঙ্গে আবেদন ফুরায়নি কাজী জহিরের আরও এক রোমান্টিক ক্ল্যাসিক ‘অবুঝ মন’র। ছবিটি দুই ধর্মের তিনজন মানুষের অবুঝ প্রেমের জটিল গল্প। রাজ্জাক-শাবানা জুটির সঙ্গে ছিলেন সুজাতাও।
নয়ন মণি
‘চুল ধইরো না খোঁপা খুলে যাবে রে নাগর’ গানের দৃশ্য আজও মাতাল করে তোলে সত্তর দশকের দর্শকদের। আমজাদ হোসেনর সুপারহিট রোমান্টিক ছবির পটভূমি গ্রাম-বাংলা। এ ধারার ছবির অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়ক ফারুকের সঙ্গে জুটি গড়েছিলেন ববিতা। তাঁদের দুজনের উত্তাল প্রেমের ছবি ‘নয়ন মণি’ যুগ পেরিয়েও পুরোনো হয়নি।
সুজন-সখী
‘সব সখীরে পার করিতে নেব আনা আনা’ গানের সেই চিরপরিচিত দৃশ্য কি ভোলার মতো? ফারুকের দুষ্টুমির সঙ্গে মিষ্টি মেয়ে কবরীর ঢং ‘সুজন-সখী’কে দিয়েছ রোমান্টিক ক্ল্যাসিকের মর্যাদা। দুই ভাইয়ের বিরোধের জেরে কীভাবে শেষ হতে গিয়েও জয়ী হয় সুজন ও সখীর প্রেম, তা-ই দেখুন ছবিতে। খান আতার এ ছবিটি রোমান্টিক ছবির দীর্ঘ পথে এক মাইলফলক।
এপার-ওপার
‘ভালোবাসার মূল্য কত আমি কিছু জানি না’ গানের সঙ্গে পাহাড়ি পথে সোহেল রানার হেঁটে বেড়ানো, সর্দারের মেয়ে সোমা মুখার্জির সঙ্গে প্রেম, তারপর বিয়োগান্ত পরিণতি; ‘এপার-ওপার’ ছবিটি ঢালিউডের চেনা ছক থেকে ছিল কিছুটা আলাদা। মাসুদ পারভেজের পরিচালনায় দর্শকেরা পেয়েছিলেন অন্য রকম এক প্রেমের ছবি। অবসরে ছবিটি দেখা যেতে পারে অনায়াসে।
নয়নের আলো
‘আমার বুকের মধ্যখানে মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ গানের মতো আরও কিছু কালজয়ী গানের ছবি ‘নয়নের আলো’। জাফর ইকবালের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া মুখ কাজরী আর চিররূপসী সুবর্ণা মুস্তাফার অসাধারণ প্রেমের অনন্য রূপায়ণ ‘নয়নের আলো’। রুচিশীল দর্শকদের কাছে বহু বছর পেরিয়েও এ ছবি চিরসবুজ। আপনিও দেখে নিতে পারেন এক কণ্ঠসাধকের প্রেমের গল্প।
আঁখি-মিলন
‘কথা বলব না বলেছি শুনব না শুনেছি’ গানের সঙ্গে প্রেমিক-প্রেমিকার যে অভিমান আর আকুলতা মিশে গেছে, তা কি আজকাল খুব সহজে পাওয়া যায়? মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত আঁখি চরিত্রে সুচরিতা ও মিলন চরিত্রে ইলিয়াস কাঞ্চনের সরল প্রেমের গল্প দেখতে দেখতে এ প্রশ্নই দর্শক নিজেকে করবেন।