‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নিয়ে আফজালের মন্তব্যে কী বললেন উজ্জ্বল
‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নিয়ে আফজালের মন্তব্যে কী বললেন উজ্জ্বল

‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নিয়ে আফজালের মন্তব্যে যা বললেন উজ্জ্বল

বিনোদন অঙ্গনে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বরেণ্য চিত্রকর, অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক আফজাল হোসেনের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। উজ্জ্বলের প্রথম সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি ঘিরে তরুণ প্রজন্মের কাছে আগ্রহ তৈরি হওয়াকে পরিচালকের বড় সাফল্য মনে করছেন আফজাল হোসেন। আফজালের মন্তব্য প্রসঙ্গে উজ্জ্বলের মত, আফজাল হোসেনের মতো একজন বড় মাপের মানুষ তাঁর পাশে না থাকলে এ ধরনের কাজ করা অনেক জটিল হয়ে যেত।

‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ সিনেমার দৃশ্য

গত ২৩ অক্টোবর মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে মাসুদ হাসান উজ্জ্বল পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’। যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও স্টার সিনেপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ছবিটি তরুণদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করেছে। প্রত্যাশার চেয়ে ভালো সাড়া পাচ্ছে তারা। দ্বিতীয় সপ্তাহে ছবিটির দর্শক সংখ্যা বাড়ছে। বিষয়টি নজরে এসেছে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী আফজাল হোসেনেরও।

‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ সিনেমার দৃশ্য

ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মাসুদ হাসান উজ্জ্বলকে অভিনন্দন জানিয়ে আফজাল হোসেন লেখেন, ‘তোমার প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র “ঊনপঞ্চাশ বাতাস” সিনেমা মুক্তি পেয়েছে এবং এই উপদ্রুতকালে দর্শক আগ্রহ নিয়ে সে ছবি দেখতে যাচ্ছে। বেশিসংখ্যক দর্শক ছবিটা দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে, এ সাফল্যের জন্য আরেক দফা অভিনন্দন। যে দেশে মন্দ চর্চার ফলে সিনেমা আকর্ষণ হারিয়েছে। সিনেমা হল ভেঙে ফেলে বিপণিবিতান বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। এ রকম চরম দুঃসময়ে অনেকেই সাহস করে স্বপ্ন, সততা ও নিষ্ঠা দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করার সাহস দেখায়। ভয়ানক উজানে নাও ঠেলে এই যে স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া—এ দেশে তা বরাবরই সন্তানের ওপর মৃত বাপের দিয়ে যাওয়া দায়িত্ব–কর্তব্যের মতো। কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে না আসুক, সংবেদনশীলতা দিয়ে দেখার মানুষও মেলে না।’

ঊনপঞ্চাশ বাতাস ছবিতে দেখা যাবে শার্লিন ফারজানা ও ইমতিয়াজ বর্ষণকে।

আফজাল হোসেন আরও লেখেন, ‘আমরা প্রাণখুলে “ভালো” বলা শিখিনি। ভাবি, নিজের প্রশংসায় অন্যজন বড় হয়ে যাবে। মন্দকে জোর গলায় মন্দ বলাতে দারুণ উৎসাহ। তবে সেই মন্দে যদি নিজ বা গোষ্ঠীস্বার্থ গুঁতো খায়, মন্দকে খোঁড়া যুক্তি দিয়ে ভালো বলে মুখে ফেনা তুলতে বাধে না। অনুপ্রাণিত, কৌতূহলী, আগ্রহী করে তুলতে পারে এমন ভালো, ব্যতিক্রমী এবং সাহসী ভূমিকার প্রতি যাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে ঘনঘোর অমানিশা কেটে যেতে পারত, তাদেরও হিসাব কষে, অঙ্ক মিলিয়ে চলতে–বলতে দেখা যায়। সত্য, ন্যায়, স্বাভাবিকতাকে কবর দিয়ে মানুষ, সমাজ, সংস্কৃতি ও দেশ নিয়ে আহা–উহুতে নিত্য মানুষের মন্দই ঘটে। ভালোর চর্চা অনুশীলনের বদলে অহরহ নানা মন্দের মধ্যে মানুষদের ডুবিয়ে রাখার চেষ্টায় কতটা অধঃপতন ঘটেছে, তা দেখতে চাইলে দেখা যায়।’

‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নিয়ে আফজালের মন্তব্যে কী বললেন উজ্জ্বল

স্বপ্ন বুকে ধরে, নিষ্ঠা–যত্ন–প্রেম এবং শতভাগ নিবেদিত থেকে একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করে ফেলা, অসাধ্য সাধনের মতো বলেই মনে করেন আফজাল হোসেন। আর এই অসাধ্য সাধনের পর নিজেকে বাহবা দিতে হয় আজকাল নিজেরই। এ নিয়ম বেদনাদায়ক কিন্তু সব সময় হাস্যোজ্জ্বল থাকতে হবে বলে উজ্জ্বলকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। উজ্জ্বলের টেলিভিশন নাটক বানানোর সময়টাও কাছ থেকে দেখেছেন আফজাল হোসেন। এই বিষয় উল্লেখ করে আফজাল বলেন, ‘যখন আলাদা ভাব ও ভাষায় টেলিভিশনের জন্য নাটক বানানোর স্বপ্নে এই উঠোনে এসে দাঁড়িয়েছিলে, হাততালি মেলেনি। আলাদা ভাবনার মানুষকে সর্বদা প্রতিকূলতা ঠেলে এগোতে হয়। “ঊনপঞ্চাশ বাতাস” তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করতে পেরেছে—এটাই তোমার বড় সাফল্য। আবার প্রাণখোলা অভিনন্দন।’

‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ সিনেমার একটি দৃশ্য

নিজের বানানো প্রথম সিনেমা নিয়ে আফজাল হোসেনের এমন মন্তব্যে মাসুদ হাসান উজ্জ্বল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আফজাল ভাই আমার ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ছায়ার মতো অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে এসেছেন। যেহেতু আমি শুরু থেকেই নিরীক্ষাধর্মী কাজ করে আসছি, আফজাল ভাইয়ের মতো একজন বড় মাপের মানুষ আমার পাশে না থাকলে, আমার কাজ করতে পারাটাই অনেক জটিল হয়ে যেত। তিনি সব সময়ই আমার কাজের উচ্ছ্বসিত মূল্যায়ন করে এসেছেন, এখনো করে চলেছেন। সেই কারণেই আমি সর্বদা তাঁকে আমার জীবনে আশীর্বাদ মনে করি। প্রত্যাশা করি, কখনো যেন তাঁর স্নেহ থেকে বঞ্চিত না হই।’