‘আমি তো বড় মঞ্চের তারকা না। আমি গলির প্লেয়ার।’ প্রথম আলোর আয়োজন ‘বড় মঞ্চের তারকা’ অনুষ্ঠানের শুরুতে এভাবে নিজে পরিচয় দেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ফারুকীর এই মন্তব্য শুনে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক দিলারা হানিফ পূর্ণিমা পাল্টা বলেন, ‘কীভাবে আপনি বড় মঞ্চের তারকা হয়ে উঠেছেন, সেই কথাই জানতে চাচ্ছি। গলি থেকে বের হয়ে কোন কোন গলিতে চলে গেছেন, সেটা আজ আমরা বের করব।’ হাতিল নিবেদিত প্রথম আলোর আয়োজন ‘বড় মঞ্চের তারকা’ অনুষ্ঠানটি শুরুতে জমে যায় দুই তারকার গল্পে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থাপক দিলারা হানিফ পূর্ণিমা কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক কয়েকটি মিডিয়া লিখেছে, ‘বাংলাদেশের নতুন ধারার চলচ্চিত্র আন্দোলনে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী হলেন আসল উদাহরণ। ফারুকী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে এমন একজন পরিচালক, যিনি ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারেন।’
পূর্ণিমা জানতে চান, ‘কাজের জন্য দেশের বাইরে সংবাদপত্রে আপনাকে নিয়ে নিউজ হয়। কেমন লাগে তখন?’ জবাবে ফারুকী বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালের দিকে খুব ভালো লাগত। এখন একটু লজ্জা লাগে।’ লজ্জা লাগার কারণ কী?
পূর্ণিমার পাল্টা প্রশ্নের জবাবে ফারুকী বলেন, ‘২০১২ সালে যখন বুসানে “টেলিভিশন” সিনেমা প্রদর্শন করা হয়, তখন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে আমাকে নিয়ে লিখলে খুব আনন্দ লাগত। যদি বলি আমার তখন কিছু যায়-আসত না, তাহলে মিথ্যা বলা হবে। অবশ্যই তখন অনেক আনন্দ হতো। ইদানীং এসব বিষয়ে কেন জানি আনন্দ পাই না। বয়সের কারণে হয়েছে কি না, সেটা জানি না। এটা অভিজ্ঞতার কারণেও হতে পারে। এখন আর অত উত্তেজনা নেই।’
কথা প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের অন্যতম অ্যাম্বাসেডর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি।
তাঁর কথা শেষ হতে না হতেই ফারুকী বলেন, ‘এটি আমি একা করছি না। আরও অনেক পরিচালকই এই কাজ করছেন। আমি তাঁদের একজন। বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা অবশ্যই আনন্দের বিষয়। পাশাপাশি নিজের কাজ যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যায় বা কেউ যখন সিনেমা দেখে কথা বলেন, এটা একধরনের ভালো লাগে।’ পূর্ণিমা একপর্যায়ে জানতে চান, এযাবৎ কতটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়েছেন ফারুকী এবং কোন বিভাগে কী কী পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
ফারুকী উত্তর, ‘এগুলো আমার মনে নেই। কোভিড হওয়ার পর আমি সবকিছুই সহজে ভুলে যাই। এটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমার মনেও নেই কতগুলো উৎসবে অংশ নিয়েছি। নির্দিষ্ট করে বলা এখন কঠিন। কোভিডের পর আমার স্মরণশক্তি কমে গেছে। কোভিডের আগে হলেও মনে থাকত না। আমি আমার বাসায় কখনো পুরস্কার রাখি না। আমার বাসায় যদি আপনার যান, তাহলে দেখবেন...।’ ফারুকীর কথা বলা শেষ হতে না হতেই পূর্ণিমা বলেন, ‘কখনো তো দাওয়াত দেননি।’ ফারুকী বলেন, ‘সামনে দাওয়াত দেব নিশ্চয়ই, দাওয়াতের উপলক্ষ আসবে নিশ্চয়ই। আমার বাসায় সেলফে আমার পাওয়া কোনো পুরস্কার নেই। তিশা যত পুরস্কার পেয়েছে, সব রাখা। সেটা প্রায় কয়েক হাজার আছে। একসময় পুরস্কার পেতে ভালো লাগত, প্রশংসা শুনতে ভালো লাগত। এখনো পেতে ভালো লাগে, কিন্তু পাওয়ার পর সেটা ভুলে যেতে চাই।’ দেশের তারকাদের নিয়ে প্রথম আলোর আয়োজন ‘বড় মঞ্চের তারকা’। হাতিল নিবেদিত এই অনুষ্ঠান প্রথম আলো অনলাইন, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করছেন দিলারা হানিফ পূর্ণিমা।