দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। উৎসবের ২১তম আসরে দুটি বিভাগের বিচারক হবেন তিনি। একটি সেরা এশীয় স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং অন্যটি কোরিয়ার সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এর আগে বুসান উৎসবে আমার ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘টেলিভিশন’ ও ‘পিঁপড়াবিদ্যা’ ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? হাতিল নিবেদিত প্রথম আলোর আয়োজন ‘বড় মঞ্চের তারকা’ অনুষ্ঠানে সেসব অভিজ্ঞতার কথা জানালেন।
‘বিচারকের দায়িত্বটা বেশ কঠিন। কারণ, অনেক সিনেমা দেখতে হয়।’ বলেন ফারুকী। ‘আমি পরিচালক হওয়ার আগে সিনেমা দেখে যে মজা পেতাম, পরিচালক হওয়ার পর সেটা পাই না। কারণ, একটা ছবি অনেক কিছু ভাবায় আমাকে। সংযুক্ত করে আমাকে। এতে করে অনেক সূক্ষ্মভাবে সিনেমার অনেক কিছু দেখতে হয় আমাকে। এতে অনেক শক্তিক্ষয় হয়। ছবিটি শেষ হওয়ার পর এটা অনেক দিন মাথার মধ্যে কাজ করে। এটা ক্লান্তিকর। আমি এখন তামিলের একটা উৎসবের জুরি হিসেবে কাজ করছি। ওখানে যাওয়ার কথা ছিল আমার। কিন্তু স্বাস্থ্যগত কারণে যাইনি। ওই উৎসবের ২০টি সিনেমা আমাকে ছয় দিনে দেখতে হবে। এটা খুব কঠিন কাজ।’ বলছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
অনুষ্ঠানে পূর্ণিমার হঠাৎ একটু ভিন্নধারার প্রশ্ন। জীবন মানে কী? প্রশ্ন শুনেই ওপরের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়েন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ‘জীবনের সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হচ্ছে একটা ভ্রমণ। একটা স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছি, চলছে...। আরেকটা স্টেশনে নেমে যেতে হবে।’
স্টুডিওতে আসার আগে অতিথি ফারুকী এবং সঞ্চালক পূর্ণিমা একসঙ্গে লিফটে ওঠেন। লিফটে উঠতে ভয় পাচ্ছিলেন ফারুকী। পূর্ণিমা ভয় পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ফারুকী জানান, এর একটা বৈজ্ঞানিক উত্তর হলো আমার উচ্চতাভীতি আছে। আর কিছু যদি বলতে হয় তাহলে বলব, যেকোনো সীমিত জায়গায় আমি অস্বস্তিবোধ করি। এ বিষয়টা আমি খুব ভয় পাই। আমি একাকিত্বকে খুব ভয় পাই। লিফটের মধ্যে যারা থাকে তারা কিন্তু সবাই মিলে একা। আমার বাসা পাঁচতলায়, কিন্তু আমি যতবারই বাসায় উঠি বা নামি সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করি।’
তাহলে ফ্লাইটে আপনি কী করেন, পূর্ণিমার এমন প্রশ্নে ফারুকী জানান, ‘এটা তিশা সব সময় ভালো বলে। যেকোনো লম্বা জার্নিতে যখন আমার একসঙ্গে যাই। তখন তিশা সিটটাকে বিছানা বানিয়ে ঘুমায়। আর আমি সোজা হয়ে সিটের মধ্যে বসে থাকি। ফ্লাইটে আমি খাব না, ওয়াশরুমে যাব না, ঘুমাব না। এটা নিয়ে তিশা আমাকে সব সময় খ্যাপায়। তিশা যদি একটু নড়াচড়া করে, তাহলে আমি তাকে নড়তে না করি। আমি ফ্লাইটে কোনো খাবারও খাই না। ইদানীং স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছি। কিন্তু আসলে আমি ফ্লাইটে খেতে পারি না।’
এবার পূর্ণিমার আরও বেশি কৌতূহলী প্রশ্ন। আপনি বিজ্ঞাপন, নাটক, সিনেমা বানাতে গিয়ে অনেক নায়িকার সঙ্গে পরিচয়, সম্পর্ক। আপনাকে নিয়ে অনেক গুঞ্জন আছে। এসব বিষয় নিয়ে কি কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কাজ ও সংসারের ক্ষেত্রে?
ফারুকীর হাসিমুখে উত্তর, ‘কাজের ক্ষেত্রে আমার কখনো কোনো জটিলতা হয় নাই। আমি ফিল করি না। আমি যখন প্রেম করেছি, তখন প্রেম করেছি। যখন ব্রেকআপ হয়েছে, তখন হয়ে গেছে। এটা জীবনেরই অংশ। আর সংসারের ক্ষেত্রে আমার এ ধরনের কোনো জটিলতায় পড়তে হয় নাই। কারণ, আমার বেশির ভাগ বিষয়ে তিশা জানে। সে ক্ষেত্রে যদি আমাকে কোনো প্রশ্ন করে, তাহলে আমি ঠিক উত্তরটা দেওয়ার চেষ্টা করি। এখানে লুকানোর কিছু নাই।’
দেশের তারকাদের নিয়ে প্রথম আলোর এ আয়োজন ‘বড় মঞ্চের তারকা’। হাতিল নিবেদিত এ অনুষ্ঠান প্রথম আলো অনলাইন, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করছেন দিলারা হানিফ পূর্ণিমা।