অভিনয় ছেড়ে এসব করে কী লাভ সোনা: নিপুণকে সুচরিতা

আদালতের রায়ে খুশি জায়েদ খান। দীর্ঘদিন পরে বুধবার এসেছিলেন নিজ কার্যালয়ে। এসে দেখেন তাঁর সমিতির রুমে তালা দেওয়া। পরে তালা খুলে ভেতরে ঢোকেন। কিছুটা দেরিতে শুরু হয় সংবাদ সম্মেলন। এ সময় জায়েদ খান রায় পড়ে সাংবাদিকদের শোনান। পরে জায়েদ তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের নানান অভিযোগ তুলে ধরেন। জায়েদ বলতে থাকেন, ‘কী দরকার এই চেয়ার নিয়ে এত ঝগড়ার। এটা নিয়ে সে (নিপুণ) কোর্টে যাচ্ছে, আমার খারাপ লাগছে, আমাদের শিল্পী বারান্দায় বারান্দায় দৌড়াচ্ছে। এটায় আমি কষ্ট ফিল করছি।’ এ  সময় জায়েদের পাশ থেকে মুখ খোলেন সুচরিতা।
সংবাদ সম্মেলনে জায়েদের বক্তব্য থামিয়ে সুচরিতা বলেন, ‘খারাপ তো অবশ্যই লাগছে। কারণ, সে আমাদের হিরোইন। আমাদের কথা হলো, নিপুণ এসব ভুইলা এই মেধাটা শিল্পে লাগাও না। একটা হিরোইন হিসেবে তুমি নিজেকে আরও ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করো। এসব দৌড়াদৌড়ি করে তো লাভ নেই। তুমি দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছ, সেই সম্মানটুকু রক্ষা করো নিপুণ। আমি তোমার বড় বোন, তোমাকে অনুরোধ করছি তুমি অভিনয় চর্চা করো। অভিনয়ের দিকে বেশি করে মনোনিবেশ করো। অভিনয় ছেড়ে এসব করে কী লাভ সোনা!’

সংবাদ সম্মেলনে সুচরিতা ও অরুণা বিশ্বাস

এ সময় সুচরিতা আরও বলেন, ‘তুমিও শিল্পী আমিও শিল্পী। এখন এটা শুধু বসাবসি আর কিছু না। ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো সমস্যা হলে বিচার নিয়ে তোমাকেও আসতে হবে, আমাকেও আসতে হবে। আর কাঞ্চন তুমি আসো। আমার সুপারহিট হিরো। আমার আঁখি মিলনের হিরো। তোমাকে দেখতে পারছি না আমার খুবই কষ্ট লাগছে।’ সুচরিতার বক্তব্য শেষ হলে সংবাদ সম্মেলনে আবার কথা বলা শুরু করেন জায়েদ খান।

জায়েদ খান ও নিপুণ
নিপুণ এসব ভুইলা এই মেধাটা শিল্পে লাগাও না। একটা হিরোইন হিসেবে তুমি নিজেকে আরও ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করো। এসব দৌড়াদৌড়ি করে তো লাভ নেই। তুমি দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছ, সেই সম্মানটুকু রক্ষা করো নিপুণ।
সুচরিতা

এ সময় জায়েদ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘বারবার আমি শুধু একাই টার্গেট হচ্ছি। আমাদের এই সমস্যা অভ্যন্তরীণ। সেটা তাঁরা চাইলে আমাদের সিনিয়র আলমগীর ভাই, ফারুক ভাই, সোহেল রানা ভাই, উজ্জ্বল ভাইসহ আরও যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে বসে সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তারা অন্য সমিতির লোকদের সঙ্গে কথা বলে জায়েদ খানকে এফডিসি থেকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। আপনাদের বলছি, আমাকে আমার কাজটা করতে দেন। ভুল হলে বলেন।’

সুচরিতা
ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো সমস্যা হলে বিচার নিয়ে তোমাকেও আসতে হবে, আমাকেও আসতে হবে। আর কাঞ্চন তুমি আসো। আমার সুপারহিট হিরো। আমার আঁখি মিলনের হিরো।

গত ২৮ জানুয়ারি নির্বাচনে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে সহকর্মীদের ভোটে জয়লাভ করেন জায়েদ খান। কিন্তু ফলাফল মেনে নেননি সাধারণ সম্পাদক পদে হেরে যাওয়া নিপুণ। তিনি আপিল করেন। একসময় নির্বাচনের আপিল বিভাগ নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন। অন্যদিকে অবৈধভাবে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করেন। পরে পদটি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এটি এখন নিষ্পত্তির দায়িত্ব চলে যায় উচ্চ আদালতে। বেশ কয়েকবার শুনানি পিছিয়ে সর্বশেষ আজ বুধবার দিন ধার্য হয়। পরে সকাল থেকেই শুরু হয় শুনানি। আদালত জায়েদকে স্বপদে বহাল রাখে। জায়েদ খানের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অরুণা বিশ্বাস, জয় চৌধুরীসহ অনেকে।