দীলিপ কুমার যেদিন এফডিসিতে এসেছিলেন

১৯৯৫ সালের জানুয়ারিতে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আনিসুল হকের আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছিলেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা দীলিপ কুমার; সেই সফরে ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। সেদিন দীলিপ কুমারের ছবি তুলেছিলেন ঢাকার আলোচকচিত্রী মীর শামসুল আলম।
১. কালো স্যুটের সঙ্গে সাদা শার্ট ও কালো-সাদা প্রিন্টের টাই পরে সেই আয়োজনে এসেছিলেন দীলিপ কুমার। তাঁর জন্য এফডিসি প্রাঙ্গণে লালগালিচা পাতা হয়েছিল। মঞ্চে ওঠার সময় দুই পাশের দর্শকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে তাঁদের অভিবাদনের জবাব দিয়েছিলেন তিনি। মঞ্চে ওঠার পর তাঁর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ঢাকার চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ চিত্রগ্রাহক কিউ এম জামান ও প্রযোজক সমিতির সভাপতি নাসিরুদ্দিন দিলু; মাঝে পরিচালক সমিতির সভাপতি চাষী নজরুল ইসলাম।
ছবি: মীর শামসুল আলম
দীলিপ কুমার অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন পরিচালক ওবায়েদ হক; সেই আয়োজনের মঞ্চে ঢাকার চলচ্চিত্রের গুণী নির্মাতা, প্রযোজকদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন দিলীপ কুমার। ছবিতে পরিচালক খান আতাউর রহমানকে স্মারক তুলে দিতে দেখা যাচ্ছে।
সেই অনুষ্ঠানের ফাঁকে ঢাকার অভিনেতা হারুনের সঙ্গে; যিনি দীলিপ কুমারের দূরসম্পর্কের চাচাতো ভাই। গত বছরের জুলাইয়ে মারা গেছেন দীলিপ কুমার; বেঁচে থাকলে আজ শতবর্ষ পূর্ণ করতেন দীলিপ কুমার।
অনুষ্ঠানের ফাঁকে চা চক্রে দীলিপ কুমার; সঙ্গে চাষী নজরুল ইসলাম ও নাসিরুদ্দিন দিলু।
‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতা আজিজুর রহমান ও চাষী নজরুল ইসলামকে নিয়ে ক্যামেরার সামনে এ বলিউড তারকা।
বরেণ্য পরিচালক ওবায়েদ হককে সম্মাননা স্মারক তুলে দিচ্ছেন দিলীপ কুমার।
পরিচালক এহতেশামকে সম্মাননা স্মারক তুলে দিচ্ছেন দিলীপ কুমার।
উপস্থিত শিল্পীদের সামনে বক্তব্য দিচ্ছেন তিনি; বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ঘেঁটে জানা গেছে, সেদিন দিলীপ কুমার শিল্পীদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রথমেই লক্ষ রাখতে হবে, যা করতে যাচ্ছি, তার জনগ্রাহ্যতা কতটুকু। আমি দেখেছি, যাঁদের ইচ্ছা ও পছন্দের ওপর ভর করে আমাদের ক্যারিয়ার গড়ে ওঠে, তাঁরা ওই বাইরে দাঁড়ানো মানুষই। আমাদের সব কৃতকর্মের রায় দিয়ে দেন মাত্র দুটি শব্দে, “বহুত ভালো” ও “বহুত খারাপ”। এই দুই সত্যের ওপরই আমাদের কৃতকর্মের বাঁচামরা নির্ভর করে। অভিনয় করার, চলচ্চিত্র নির্মাণের অসংখ্য বিষয় আছে। তবে লক্ষ রাখতে হবে, তার মধ্যে যেন দেশের সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় প্রকাশিত হয়। কারণ, প্রযুক্তি, প্রকৌশলী যন্ত্রপাতি সবই বিদেশ থেকে আমদানি করা যায়, কিন্তু সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমদানি করা অসম্ভব।’