‘কান চলচ্চিত্র উৎসবে গ্রাঁ প্রি পুরস্কার জেতার জন্য ভারত পায়েল কাপাডিয়ার জন্য গর্বিত।’ গতকাল পায়েল কাপাডিয়াসহ তাঁর সিনেমা ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’-এর অভিনয়শিল্পীদের ছবি পোস্ট করে এভাবেই শুভেচ্ছা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তবে পায়েলকে মোদির এই শুভেচ্ছা জানানো যে কতটা অবিশ্বাস্য, সেটা জানতে পিছিয়ে যেতে হবে পাক্কা নয় বছর। কী হয়েছিল তখন? কেনই-বা পায়েল পুরস্কার জেতার পর ফিরে আসছে অতীত? জেনে নেওয়া যাক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে।
২০১৫ সালে পায়েল কাপাডিয়া ছিলেন পুনের এফটিআইয়ের (ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া) শিক্ষার্থী। এই ফিল্ম স্কুলে পড়াকালীনই পায়েল প্রতিবাদ করেন এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের পদে নিয়োগ নিয়ে।
তখন বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেতা গজেন্দ্র চৌহানকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেই সময় প্রতিবাদে নামেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনা পুরো ভারতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। চার মাস টানা প্রতিবাদ জানান তাঁরা। শেষমেশ ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন গজেন্দ্র।
ওই একই বছর পরিচালক প্রশান্ত পাঠরাবেকে বন্দী করে রাখার জন্য ছাত্রছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়। সেখানেও নাম ছিল পায়েলের।
দুই আন্দোলনেই শামিল ছিলেন পায়েল। ক্লাস বয়কট, অফিস ঘেরাও, মানববন্ধন—সবকিছুতেই যোগ দেন তিনি। সেই সময় ৭ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও ৩৫ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করে। তাতে নাম ছিল পায়েলের। এরপর কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়েন তিনি। তাঁর অনুদান বন্ধ করে দেন এফটিআই কর্তৃপক্ষ। এমনকি, ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে’ যাওয়ার পথও বন্ধ করে দেয় সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
পরে পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রভাব নিয়ে তথ্যচিত্র বানিয়েছিলেন পায়েল কাপাডিয়া। ২০২১-এ সেই তথ্যচিত্রের জন্য পুরস্কারও জিতেছিলেন।
এবার পেলেন কান চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার গ্রাঁ প্রি।