বাথরুমে ১২ লাখ রুপি, পেছনের ঘটনায় এই অভিনেত্রীর ক্যারিয়ার শেষ

মালা সিনহা। ছবি: সংগৃহীত
মালা সিনহা। ছবি: সংগৃহীত

তাঁর ক্যারিয়ার তখন খ্যাতির তুঙ্গে। একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করছেন। নামযশ, টাকা—সবই কামিয়েছিলেন। এরপরও তাঁর ক্যারিয়ারে ছিল একটি বড় ভুল। হঠাৎ তাঁর বাসার বাথরুমে মেলে ১২ লাখ রুপি। বাথরুমে ১২ লাখ রুপি কীভাবে এল, তা নিয়ে শুরু হয় তদন্ত। একসময় মুখ খুলতে বাধ্য হন অভিনেত্রী মালা সিনহা।

ক্যারিয়ারের উত্থানের মুখে মালা সিনহার জীবন যেন ওলট–পালট হয়ে যায়। ঘটনাটি ১৯৭৮ সালের। সেবার ভারতের আয়কর অধিদপ্তর থেকে মালার বাসায় লোক আসেন। একসময় তাঁরা সারা বাড়ি তল্লাশি করেন। কোথাও তেমন কিছু না মিললেও বাথরুম থেকে পাওয়া যায় ১২ লাখ রুপি। সেই সময়ে এই পরিমাণ অর্থ অনেক কিছু। এরপর নতুন করে আলোচনায় আসেন এই অভিনেত্রী। বলা যায়, আলোচনার চেয়ে সমালোচনাই বেশি। মূল ঘটনা শোনার পর মালাকে নিয়ে ধিক্কার দেন অনেক ভক্ত। মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত।

মালা সিনহা। ছবি: সংগৃহীত

কিসের টাকা, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আদালত পর্যন্ত যেতে হয়। জানা যায়, সেদিন আদালতে দাঁড়িয়ে অভিনেত্রী মালা বলেছিলেন, ‘বাথরুমের টাকা দেহ ব্যবসা করে আয় করা।’ এই শব্দগুলোই এই অভিনেত্রীর ক্যারিয়ার ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। অভিনয়ে মুগ্ধ করা এই নায়িকার জীবন যেন ওলট–পালট হয়ে যায়। অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্না, মনোজ কুমার, ধর্মেন্দ্রর মতো ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির নায়কদের সঙ্গে জুটি বাঁধা এই মালা সিনহার কথাগুলো শুনে ভক্তরাও বিশ্বাস করতে পারেননি। পরিণতিতে একের পর এক তাঁর হাতে সিনেমার সংখ্যা কমতে থাকে। ক্যারিয়ার নিয়ে দোটানায় পড়ে যান এই নায়িকা।

মালা সিনহা। ছবি: সংগৃহীত

শোনা যায়, মূলত টাকা রক্ষা করার জন্যই এই অভিনেত্রী মিথ্যা কথা বলেছিলেন। তাঁর এই বক্তব্য সামনে এলে আরও সমালোচনা হয়। অনেকেই তখন বলাবলি করেন, জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী হয়ে সবার সামনে এভাবে আয় করার কথা কীভাবে বলেন তিনি? ওই সময় একধরনের ট্রমার মধ্যে দিয়ে পার করতে হয়েছিল মালাকে।

‘জাহান আরা’ সিনেমার পোস্টারে মালা সিনহা। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবছর মালা সিনহার যেখানে তিন থেকে চারটি করে সিনেমা মুক্তি পেত, সেখানে ১৯৭৮ সালের পরে সিনেমা মুক্তির সংখ্যা কমতে থাকে। পরের দুই বছর কোনো সিনেমাই মুক্তি পায়নি। তারপর কমতে থাকে সিনেমার সংখ্যা। ১৯৯৪ সালে তিনি সিনেমা থেকে অনেকটাই দূরে সরে যান। তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে ‘জাহান আরা’, ‘হিমালয় কি গডমেইন’, ‘হারিয়ালি অউর রাস্তা’, ‘রিভাজ’, ‘মারইয়াদা’, ‘মেরে হুজুর’ প্রমুখ। ষাটের দশক থেকে আশির দশক পর্যন্ত তিনি সর্বাধিক পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন ছিলেন।
তথ্য: ইন্ডিয়া পোস্ট ও ভারত টাইমস।