বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের বাসার বাইরে গুলিবর্ষণের ঘটনার পর মুম্বাই পুলিশের রাতের ঘুম চলে গেছে। পুলিশ উঠেপড়ে লেগেছে এ মামলার তদন্তের কিনারা করতে। প্রতিদিন এই ঘটনা ঘিরে নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে আরও অনেক তথ্য এসেছে।
গত রোববার ভোর পাঁচটা নাগাদ সালমানের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে দুজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি গুলিবর্ষণ করেছিলেন। তাঁরা মোটরসাইকেলে করে এসে এই হামলা করেছিলেন। অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে সোমবার মাঝরাতে পুলিশের জালে ধরা পড়েন দুই অভিযুক্ত বিক্কি এবং সাগর। মুম্বাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ শাখা তাদের গুজরাটের কচ্চের ভূজের এক প্রসিদ্ধ মন্দির থেকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার সাতসকালে তাঁদের মুম্বাইতে আনার পর আদালতে পেশ করা হয়। আদালত বিক্কি আর সাগরকে ১০ দিন রিমান্ডে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এখন ক্রাইম ব্রাঞ্চের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ক্রমাগত জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে দুই অভিযুক্তকে। পুলিশি জেরায় অনেক চমকপ্রদ তথ্য মিলছে। বিক্কি আর সাগর জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানিয়েছেন, চার নয়, তাঁদের ১০ রাউন্ড গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আর এই কাজে তাঁরা সফলতা পেলে ভালো পুরস্কার দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আর বলা হয়েছিল, তাঁরা রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠবেন। এ হামলার জন্য বিক্কি আর সাগরকে বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ লাখ টাকায় চুক্তি করা হয়। অগ্রিম হিসেবে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। হামলার পর তাঁদের আরও চার লাখ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। গুলিবর্ষণের এ ঘটনার সাক্ষী হিসেবে খুব শিগগির পুলিশ সালমানের বয়ান নেবে বলে জানা গেছে।
বিক্কি আর সাগর পুলিশকে জানিয়েছেন, জেলবন্দী গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোই তাঁদের এ কাজের জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। আনমোল চেয়েছিলেন ১৯৯৮ সালে যোধপুরের কাছে মথানিয়ার বাবড়ে কৃষ্ণকায় হরিণ শিকারের জন্য সালমানকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে। দুই অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছেন, সালমানকে শুধু ভয় দেখানোর কথা তাঁদের বলা হয়েছিল। এই অভিনেতাকে হত্যার নির্দেশ তাঁদের দেওয়া হয়নি।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিক্কি দশম এবং সাগর চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণ। এই দুই হামলাকারী পুলিশকে জানিয়েছেন ২৪ ফেব্রুয়ারি তাঁরা মুম্বাইতে আস্তানা গাড়েন। তাঁরা সালমানের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্ট ছাড়া পানভেলের ফার্ম হাউসও রেকি করেছিলেন। পানভেলে একটি কক্ষ তাঁরা ভাড়া নিয়েছিলেন। বিক্কি আর সাগর হোলি খেলতে নিজেদের গ্রামে গিয়েছিলেন। আবার ১ এপ্রিল তাঁরা পানভেলে ফিরে এসেছিলেন।
সালমানের বাসার বাইরে গুলিবর্ষণের ঘটনার মামলায় পুলিশ আরও এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। গতকাল বুধবার এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তারা। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, এই সন্দেহভাজন ব্যক্তি হামলার আগে এবং পরে দুই অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। পুলিশ এই ব্যক্তির সঙ্গে আনমোল বিষ্ণোইয়ের যোগসূত্র পেয়েছে।