শুরুতে কে বলবে মনীষা কৈরালার ভেতরে লুকিয়ে আছে ভয়ংকর কিছু! কোনো নেতিবাচক চরিত্রের চেহারা-বেশভূষা এতটা সাধারণ ও মিষ্টি হবে, তা বোধ হয় কেউ ভাবতেই পারেনি। ছবিতে মনীষার চেহারার দিকে তাকালে কেউ বিশ্বাসই করতে পারবে না মেয়েটির উদ্দেশ্য ভিন্ন। আর মেয়েটির প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। ভালোবাসার মানুষের জন্য প্রেমিকের আকুলতা বোঝা যায় ছবিটি দেখলে।
সিনেমার পরিচালক গুণী নির্মাতা মণি রত্নম। শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ছবি বলে মনে করা হয় এটিকে। রোমান্টিক ঘরানার এই সিনেমা দিয়েই রুপালি পর্দায় অভিষেক হয় প্রীতি জিনতার।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘দিল সে’ নিয়ে দারুণ এক তথ্য প্রকাশ করেন মনীষা। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ছবির পটভূমি ছিল আসামের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি। এতে আত্মঘাতী নারী সন্ত্রাসীর চরিত্রে অভিনয় করেন মনীষা। শেষ দৃশ্যে মনীষা ও শাহরুখের চরিত্রের মৃত্যু হয়েছিল।
ছবির শেষটা নিয়েই মনীষা জানান, ‘দিল সে’ ছবির মূল চিত্রনাট্যের সমাপ্তি বর্তমান চিত্রনাট্যের চেয়ে একেবারেই আলাদা ছিল। প্রথম যে চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়েছিল, তাতে দুই চরিত্রই ভালোবাসার চেয়ে বড় কাজের জন্য বিসর্জন দেয়। প্রথম চিত্রনাট্যে নায়ক মেয়েটিকে মরতে দেয়। এই সমাপ্তিই চূড়ান্ত হয়েছিল সবার সম্মতিতে। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে সমাপ্তিটা বদলে ফেলা হয়।
চিত্রনাট্য বদলে ফেলার কারণ হিসেবে মনীষা বলেন, ‘চূড়ান্ত সংস্করণে দেখানো হয়েছে, নায়কের ভালোবাসা এতটাই তীব্র ছিল যে সে মেয়েটিকে থামাতে চেয়েছিল, তবে মেয়েটিকে ছাড়া বাঁচতেও পারছিল না। একসময় নায়ক মেয়েটিকে থামায়। কিন্তু সে কাজ করতে গিয়ে নিজেই মারা যায়। একে তার বড় ত্যাগ হিসেবে দেখানো হয়। মূল স্ক্রিপ্টে এই বিষয়টি ছিল না। তখন আমার প্রথম চিত্রনাট্যই বেশি পছন্দ হয়েছিল, কারণ ওদের মিলন হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। কখনো কখনো অপূর্ণ ভালোবাসা পূর্ণ ভালোবাসার গল্পের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়।’
ছবিতে আত্মঘাতী সন্ত্রাসী তথা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় নিয়েও কথা বলেন মনীষা। নায়িকার ভাষ্য, ‘আমার মূলত রাম গোপাল ভার্মার সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করার কথা ছিল। ওই সময়ই এই সিনেমা আমার হাতে আসে। প্রথমে তারা অন্য কাউকে নেওয়ার কথা ভাবলেও পরে আমার কাছেই আসে। শিল্পী হিসেবে আমিও এমন কাজ করতে চাইছিলাম, যা আগে কখনো করিনি। মণি রত্নম বললেন, আমাকে একজন সন্ত্রাসীর চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। সন্ত্রাসী চরিত্র হলেও আমাকে একেবারেই সাধারণ মেয়ের মতো দেখাতে হবে। তবে তার মধ্যেই মেয়েটির ব্যাখ্যাতীত যন্ত্রণা ও ক্ষোভ ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন পরিচালক।’ এটি আর দশটা চরিত্রের মতো ছিল না বলে চরিত্রটিকে লুফে নেন অভিনেত্রী।
মুক্তির পর ‘দিল সে’ সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিল। কিন্তু বক্স অফিসে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি।