সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গতকাল ভোরে দুই দুষ্কৃতকারী বাইকে চেপে সালমানের বাসার বাইরে গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেছে
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গতকাল ভোরে দুই দুষ্কৃতকারী বাইকে চেপে সালমানের বাসার বাইরে গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেছে

সালমানের বাসায় গুলি, তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

সালমান খানের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে গুলিবর্ষণ মামলাকে ঘিরে প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গুলিবর্ষণ মামলায় জড়িত আরও দুই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে।
১৪ এপ্রিল কাকভোরে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় সালমানের আবাসনের বাইরে দুজন দুষ্কৃতকারী চার রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল। গুজরাটের কচ্চের ভূজ থেকে পুলিশ এই অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল। আদালত বিক্কি গুপ্তা আর সাগর পাল নামের এই দুই দুষ্কৃতকারীকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ডে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই দুজন অভিযুক্তকে পেশ করা হয়েছিল। আদালত তাদের রিমান্ড বাড়িয়ে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত করেছেন। বিক্কি ও সাগর মুম্বাইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চের হেফাজতে থাকবেন।

এএনআই-এ টুইট করা খবর অনুযায়ী, বিক্কি ও সাগরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। ক্রাইম ব্রাঞ্চ আদালতকে জানিয়েছে যে বিক্কি ও সাগর আত্মগোপন করতে তিনবার জামাকাপড় বদল করেছেন। এই দুজন অভিযুক্ত গুলি চালানোর পর প্রথমে বান্দ্রায়, তারপর সান্তাক্রুজে, পরে সুরাটের জামাকাপড় বদলেছেন। বিক্কি ও সাগর নিজেদের চেহারাও বদলানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের যাতে কেউ চিনতে না পারে। পুলিশ জানিয়েছে, এই দুজন অভিযুক্তর কাছে ৪০টা গুলি ছিল। এর মধ্যে চার রাউন্ড ফায়ারিংয়ের সময় তাঁরা ব্যবহার করেছেন। অবশিষ্ট ১৮টা গুলির এখন তল্লাশি করছে পুলিশ। এ ছাড়া মুম্বাই পুলিশ ১৭টি কার্তুজ উদ্ধার করেছে।

সালমান খান

আদালতে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন যে বিক্কি ও সাগরকে কে বা কারা অর্থের জোগান দিচ্ছে, তার অনুসন্ধান চলছে। সরকারি আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, এই দুই অভিযুক্ত বিহার নিবাসী। আর তাঁদের সালমানের সঙ্গে কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তাঁরা শুধু এই কাণ্ডের মূল পান্ডার নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বিক্কি ও সাগরের কাছে দুটি মুঠোফোন ছিল। তার মধ্যে পুলিশ একটা মুঠোফোন উদ্ধার করেছে। আর একটি মুঠোফোনের সন্ধান করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। পুলিশের দাবি, এই হামলার পেছনে এক আন্তর্জাতিক চক্র আছে। গুজরাট ও বিহারের সঙ্গে এই চক্রের যোগাযোগ আছে। পুলিশ এই দুই রাজ্য ছাড়া উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাবেও এদের যোগসূত্র পেয়েছে।
এই হামলার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের কাছে এক চিঠি লিখে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে এলওসি জারি করার আবেদন জানিয়েছে। গুলিবর্ষণের ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর আনমোল ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছিল যে এই হামলার দায়ভার তিনি নিচ্ছেন।

এদিকে মুম্বাই পুলিশ এই মামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজন ব্যক্তিকে পাঞ্জাব থেকে আটক করেছে। সুভাষ চন্দর (৩৭) আর অনুজ থাপন (৩২) নামের এই দুই ব্যক্তি গুলিবর্ষণকারী মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে গুলি এবং অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। জানা গেছে, সুভাষ ও অনুজ ১৫ মার্চ তাঁদের হাতে গুলি ও অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। মুম্বাই পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে ক্রাইম ব্রাঞ্চ দুই অভিযুক্তকে পাঞ্জাব থেকে গ্রেপ্তারের পর মুম্বাইতে নিয়ে আসছে। সাগর ও বিক্কি পুলিশি জেরায় আগেই জানিয়েছিল যে তাঁরা গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোইয়ের দলের লোক। আনমোলের নির্দেশ অনুযায়ী, বিক্কি ও সাগর এই হামলা করেছিলেন।