ভারতের দক্ষিণ দিল্লির ব্যস্ততম সড়কে রক্তাক্ত অবস্থায় আধা ঘণ্টা ধরে পড়ে ছিলেন এক তরুণ পরিচালক। পথচারীরা ঘটনাস্থলের ভিডিও ধারণে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও কেউই তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি। তরুণ চলচ্চিত্র পরিচালক পীযূষ পালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
কিছুদিন আগে মোটরবাইক কেনেন দক্ষিণ দিল্লির কালকাজি এলাকার বাসিন্দা পীযূষ পাল। বাসায় ফেরার পথে গত শনিবার পৌনে ১০টার দিকে আউটার রিং রোডে আরেক মোটরবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটে।
মাথা ও মুখমণ্ডলে মারাত্মক আঘাত পেয়ে সংজ্ঞা হারান তিনি। এ অবস্থায় তাঁর ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ ও মুঠোফোন চুরি করেছে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ভারতে।
আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে ও পথচারীদের ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে রাস্তায় পড়ে ছিলেন পীযূষ পাল। তাঁর রক্তে ভেসে যায় রাস্তা। পঙ্কজ জেইন নামের এক পথচারী এসে শোনেন, আধা ঘণ্টার মতো পড়ে আছেন তিনি। আশপাশে অনেকেই ভিডিও করছিলেন। দু-তিনজনকে নিয়ে ধরাধরি করে একটি অটোরিকশায় পীযূষ পালকে স্থানীয় ক্লিনিকে নেন তাঁরা। তবে সেখানে চিকিৎসা মেলেনি। জ্যাম ঠেলে চার কিলোমিটার দূরে পিএসআরআই মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত শনিবার থেকেই পীযূষ পালকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। তিন দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানের তিনি। মঙ্গলবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
পীযূষের পরিবার ও বন্ধুরা বলছেন, আরও আগে হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি হয়তো বাঁচতেন। পীযূষের বন্ধু স্বর্ণেন্দু বসু বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তায় পড়ে থাকলেও তাঁকে কেউ হাসপাতালে নেননি। যাঁরা শেষ পর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালে নিয়েছিলেন, তাঁরা বলেছেন, পথচারীরা ভিডিও ধারণ করেছে, সেলফি তুলেছে। তবু উদ্ধার করেনি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বর্ণেন্দু বসু বলেন, ‘পীযূষের মোবাইল ও ল্যাপটপ খোয়া গেছে। বিপদের মুহূর্তে তাঁর মা-বাবা ফোনে কল করলে তা কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখে।’
ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার পীযূষের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে তাঁর শেষকৃত্য হয়েছে।